728 x 90

ইসলামই মানবতার শ্রেষ্ঠ দর্শন: এম. আবু বকর সিদ্দিক

ইসলাম শব্দের অর্থঃ ইসলাম আরবি শব্দ। ইসলাম শব্দটি “আলইসতিসলামু” শব্দ থেকে নির্গত হয়েছে। যার অর্থ, আত্মসমর্পণ করা। কেহ কেহ বলেন, ইসলাম শব্দটি “সিলমুন” ধাতু থেকে নির্গত, যার অর্থ শান্তি। শরীয়তের পরিভাষায় ইসলাম হলো- আল্লাহর  অনুগত হওয়া, আনুগত্য করা ও তার নিকট পূর্ণ আত্মসমর্পণ করা। বিনা দ্বিধায় আল্লাহর আদেশ-নিষেধ মেনে নেয়া এবং তার দেওয়া বিধান অনুসারে

ইসলাম শব্দের অর্থঃ ইসলাম আরবি শব্দ। ইসলাম শব্দটি “আলইসতিসলামু” শব্দ থেকে নির্গত হয়েছে। যার অর্থ, আত্মসমর্পণ করা। কেহ কেহ বলেন, ইসলাম শব্দটি “সিলমুন” ধাতু থেকে নির্গত, যার অর্থ শান্তি। শরীয়তের পরিভাষায় ইসলাম হলো- আল্লাহর  অনুগত হওয়া, আনুগত্য করা ও তার নিকট পূর্ণ আত্মসমর্পণ করা। বিনা দ্বিধায় আল্লাহর আদেশ-নিষেধ মেনে নেয়া এবং তার দেওয়া বিধান অনুসারে জীবন যাপন করা।

মানবতা অর্থঃ  মানবতা শব্দটির ইংরেজি হলো-  the humanity. এক কথায় মানবতা হলো মানুষের কল‍্যাণে সত‍্য ও ন‍্যায়ের পথে যে কোনো কাজ করা।

ইসলামের সংক্ষিপ্ত পরিচিতিঃ ইসলাম শব্দের অর্থ আত্মসমর্পণ করা। আর যারা মহান আল্লাহ্ তায়ালার প্রতি ও তার প্রেরিত রাসূল হযরত মুহাম্মাদ (সঃ) এর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে, আল্লাহর মনোনীত একমাত্র ধর্ম দ্বীন ইসলামেকে মনে প্রাণে বিশ্বাস করে এবং ইসলামের বিধি-বিধান সমুহ মেনে নিয়ে সে অনুযায়ী জীবন যাপন করে তাদেরকে মুসলিম বলে। ইসলামের মূল কথা হলো, আল্লাহর একত্ববাদে বিশ্বাস করা এবং তার সাথে কাউকে শরীক না করা। পবিত্র কুরআনের বিভিন্ন স্থানে আল্লাহ তায়ালা তার নিজের পরিচয় তুলে ধরেছেন। আল্লাহ একক সত্তা, তার কোনো শরিক নেই। তাকে কেউ জন্ম দেয়নি এবং তিনিও কাউকে জন্ম দেননি। তিনিই একমাত্র ইলাহ বা মাবুদ। সুতরাং পবিত্র কুরআনের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা তার নিজের যে পরিচয় বর্ননা করেছেন, সে অনুযায়ী তাকে বিশ্বাস করাই ঈমানের মূল কথা। যারা তার সাথে অন্য কাউকে শরীক করে তারা মুশরিক। আর মুশরিকদের স্থান হলো জাহান্নাম।

মানবতা প্রতিষ্ঠায় ইসলামের ভুমিকাঃ মানুষের কল‍্যাণে সৃষ্টির শুরু থেকে এ পর্যন্ত যে যা করেছেন বা বলেছেন, ইসলাম তার থেকে অনেক অনেক বেশিই করেছে এবং বলেছে। এমনকি বিশ্ব মানবতা প্রতিষ্ঠার জন‍্য ইসলাম যা করেছে বা বলেছে তা সর্বযুগে এবং সর্বকালে শীর্ষ স্থানেই থাকবে।

দ্বীন ইসলামের ধারক ও বাহক হযরত মুহাম্মাদ (সঃ) এর বাস্তব জীবনই হলো বিশ্বমানবতার শ্রেষ্ঠ উদাহরণ।

মহানবী (সঃ)  এর জীবনের দুটি ঘটনা এখানে তুলে ধরা হলো –

(ক) বর্ণিত আছেঃ তায়েফে অবস্থান কালে মহানবী (সঃ) যে পথ দিয়ে মসজিদে নামায আদায় করতে  যেতেন, অমুসলিম এক বুড়ি প্রতিদিন সে পথে কাঁটা বিছিয়ে রাখত, একদিন পথে কাঁটা না দেখে তার কোনো অসুখ হলো কি না এই ভেবে দয়ার নবী বুড়ির খোঁজে তার বাড়ি গিয়ে পৌঁছেন। গিয়ে দেখেন বুড়ি অসুস্থতার কারণে ছটফট করছে। মহানবী (সঃ) তার জন‍্য ওষুধের ব‍্যবস্থা করলেন এবং তার সেবা শশ্রুষা করলেন। আজও সেই বুড়ির বসবাসের বাড়িটা তায়েফে সংরক্ষিত আছে।

(খ) বর্ণিত আছে, মক্কা বিজয়ের কয়েকদিন পর এক বৃদ্ধা তার সামান্য মালামাল পুটলি বেঁধে মক্কা  ছেড়ে চলে যাচ্ছিল কিন্তু বয়সের কারণে পুটলি বহন করা তার পক্ষে কষ্ট হচ্ছিল। নবী করিম (সঃ) এসে তাকে দেখে জিজ্ঞেস করেন, মা তুমি কোথায় যাচ্ছ?  বৃদ্ধা বললো, অমুক জায়গায় আমার আত্মীয়ের বাড়িতে যাচ্ছি। কেন যাচ্ছ, এ প্রশ্নের জবাবে বৃদ্ধা বলল, শুনেছি মোহাম্মাদ নামে এক ব্যক্তি আমাদের বাপ-দাদার ধর্মের বিরুদ্ধে এক নতুন ধর্ম প্রচার করছে তাই চলে যাচ্ছি। রাসুলুল্লাহ (সঃ) এবার বৃদ্ধার বোঝাটি নিজের কাঁধে তুলে নিয়ে বললেন, মা তুমি আমার সঙ্গে চলো, তোমাকে বাড়ি পৌঁছে দেব।  বৃদ্ধাকে তার আত্মীয়ের বাড়ি দিয়ে নবী করিম (সঃ) বললেন, তুমি এখানে থাকো আমি যাচ্ছি। বৃদ্ধা বলল, বাবা তুমি কে আমার জন্য এত কষ্ট করেছ?  দিনের নবী (সঃ) বললেন, আমার নাম মোহাম্মদ আপনি যার কথা শুনেছেন আমিই সেই মোহাম্মদ। আমিই ইসলামের কথা বলে থাকি এবং এক আল্লাহর ইবাদাতের কথা প্রচার করে থাকি। বৃদ্ধা বলল, যদি এটাই হয় ইসলাম তাহলে আমি ইসলাম গ্রহণ করতে রাজি। এ বলে তিনি রাসুলুল্লাহ (সঃ) এর কাছে কালেমা পাঠ করে ইসলাম গ্রহণ করে ইসলামের ছাঁয়ায় আশ্রয় গ্রহণ করলেন।

মহাগ্রন্থ আলকুরআন এবং মহানবী হযরত মুহাম্মাদ (সঃ) এর বাণী সমুহের প্রায় সর্বস্থান জুড়েই বলা হয়েছে মানবতার কথা।

এ সম্পর্কে পবিত্র কুরআন ও মহানবী (সঃ) এর বাণী সমুহে যা বলা হয়েছে এখানে সংক্ষিপ্ত ভাবে তার কিছু অংশ তুলে ধরব।

তার আগে বলতে হয়, মানুষকে আমরা বয়স পেশা জাত ও অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন ভাবে ভাগ করে থাকি। যেমন- শিশু, যুবক , বৃদ্ধ, নারী, পুরুষ, ক্রেতা, বিক্রেতা, মালিক, শ্রমিক, নেতা, নেতৃত্বানুসারী, রাজা, প্রজা, ধনী, দরিদ্র, ঋণদাতা, ঋণগ্রহিতা, সাদা, কালো, উচ্চবংশোদ্ভুত, নিম্নবংশোদ্ভত ইত্যাদি। আবার নারীদেরকে বলি কন‍্যা, বধু, মাতা, পত্নিক, বিপত্নীক, বিধবা তালাকপ্রাপ্তা ইত‍্যাদি। পুরুষদেরকে বলি পুত্র, স্বামী, পিতা ইত্যাদি। মানুষ তার জীবনে যখন যে স্তরেই থাকুক, ইসলাম মানব জীবনের প্রতিটি স্তরের দায়িত্ব ও কর্তব্য সুস্পষ্ট ভাবে বলে দিয়েছে। মানুষ তার জীবনের প্রতিটি স্তরে যদি ইসলামের দেওয়া বিধিবিধান পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে অনুস্বরণ করে তবে নিশ্চয়ই সে হবে একজন প্রকৃত মানুষ। একজন মানুষ যখন তার জীবনকে ইসলামের বিধান অনুসারে পরিচালনা করবে তখন তার বাস্তব জীবনে পাবে শান্তি এবং তৃপ্তি। শুধু কি তাই, বরং তার দ্বারা মানবকুল এবং প্রাণীকুল উপকৃত হবে এবং তার দ্বারা কেউ কোনো ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবে না। মহানবী হযরত মুহাম্মাদ (সঃ) এবং তার অনুসারীদের জীবনাদর্শই তার সুস্পষ্ট প্রমাণ রাখে।

আসুন এবার মানবতার কল‍্যাণে মহাগ্রন্থ আলকুরআন ও মহানবী (সঃ) এর কয়েকটা বাণী আমরা অনুধাবন করি। মানুষের উপরোক্ত শ্রেণিসমুহ অনুযায়ী এখানে কয়েকটা বাণী উল্লেখ করা হলো।

১. নারীর অধিকারঃ মহানবী (সঃ) এর জন্মের পূর্বকাল থেকেই আরব সমাজে নারীরা ছিল অবহেলিত এবং নিগৃহীত । সে যুগে কন‍্যা সন্তানকে বংশের  কলঙ্ক মনে করা হত। কন‍্যা সন্তানকে অন‍্য বংশে বা পরিবারে বিবাহ দিলে সে পরিবারের নিকট মাথা নত হবে ভেবে কারো ঔরসে কন‍্যা সন্তান জন্ম গ্রহন করলে তাকে গর্ত খনন করে শৈশবেই জীবন্ত প্রথিত করা হতো। মহানবী (সঃ) এই ঘৃণীত প্রথা রহিত করেছেন।

পবিত্র কুরআন ও মহানবী (সঃ) এর  অসংখ্য বাণীর মাধ্যমে নারীদের যথার্থ মর্যাদার ঘোষণা করা হয়েছে। যেমন-

(ক) পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছেঃ

“তোমরা নারীদের সাথে সৎ ভাবে জীবন যাপন  করো। অতঃপর যদি তাদেরকে অপছন্দ করো, তবে হয়ত এমন এক জিনিসকে অপছন্দ করছো যাতে আল্লাহ্ অনেক কল‍্যাণ নিহিত রেখেছেন।”  (নেছাঃ ১৯)

(খ) মহান আল্লাহ্ বলেন,

“তারা (নারীরা) তোমাদের জন‍্য পরিচ্ছদ স্বরূপ এবং তোমরাও তাদের জন‍্য পরিচ্ছদ স্বরূপ।” (সূরা-বাক্বারা)

 

(গ) মহানবী (সঃ) এর বাণীঃ

“হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ কোনো ব‍্যক্তির ঘরে কন‍্যা সন্তান জন্ম লাভের পর সে যেনো তাকে (জাহিলিয়‍্যাতের যুগের ন‍্যায় ) জীবিত কবর না দেয় এবং তাকে তুচ্ছ না করে। আর পুত্র সন্তানকে উক্ত কন‍্যা সন্তানের উপর প্রাধান্য না দেয়। ( কেউ যদি এই আচরণ না করে) তা হলে আল্লাহ্  তাকে জান্নাত দান করবেন।” আবু দাউদ)

(ঘ) মহানবী (সঃ) এর বাণীঃ

“হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ তোমাদের মধ‍্যে সেই ব‍্যক্তি উত্তম, যে তার স্ত্রীর নিকট উত্তম।” (তিরমিযী)

২. শ্রমিকের অধিকারঃ শ্রমিকের অধিকার প্রসঙ্গেও মহানবী (সঃ) এর অসংখ্য বাণী রয়েছে।

(ক) মহানবী (সঃ) এর বাণীঃ

“হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ্ (সঃ) বলেছেনঃ তোমাদের অধিনস্ত ব‍্যক্তিরা (দাস দাসিরা) তোমাদের ভাই। সুতরাং আল্লাহ্ যে ভাইকে যে ভাইয়ের অধীন করে দিয়েছেন সে তার ভাইকে যেন তাই খাওয়ায় যা সে নিজে খায়, তাকে তাই পরিধান করায় যা সে নিজে পরিধান করে।” (বুখারী)

(খ) মহানবী (সঃ) এর বাণীঃ

“হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ্ (সঃ) বলেছেনঃ তোমরা মজুরের ঘাম শুকানোর আগেই তার মজুরি দিয়ে দাও।” (ইবনে মাজাহ্)

৩. অমুসলিমদের অধিকারঃ অমুসলিমদের অধিকার সংরক্ষণের ব‍্যাপারে মহানবী (সঃ) এর অসংখ্য বাণী রয়েছে।

(ক) মহানবী (সঃ) এর বাণীঃ

“রাসূলুল্লাহ ( সঃ) বলেনঃ মনে রেখো, যদি কোনো মুসলমান কোনো অমুসলিম নাগরিকের প্রতি জুলুম নিপীড়ন চালায়, তার অধিকার খর্ব করে, তার কোনো জিনিস জোর পূর্বক ছিনিয়ে নেয়, তাহলে কিয়ামতের দিন আমি আল্লাহর আদালতে তার বিরুদ্ধে অমুসলিম নাগরিকের পক্ষ অবলম্বন করব।” (আবু দাউদ )

(খ) রাসূলুল্লাহ্ (সঃ) এর বাণীঃ

“রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেলঃ যে লোক কোনো চুক্তিবদ্ধ অমুসলিম নাগরিকের উপর জুলুম করবে ও তার সাধ‍্যের বাইরে কাজ চাপাবে অথবা করতে বাধ্য করবে কিয়ামতের দিন আমি তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদকারী হয়ে দাঁড়াব।”

৪. ইয়াতিমদের অধিকারঃ এ প্রসঙ্গেও অসংখ্য আয়াত এবং হাদীস রয়েছে। যেমন-

(ক) মহান আল্লাহর বাণীঃ

“যারা  ইয়াতিমের ধন-সম্পদ অন‍্যায় ভাবে ভক্ষণ করে তারা নিজেদের পেটে আগুন ভর্তি করেছে এবং অতিসত্ত্বর তারা আগুনে (জাহান্নামে) প্রবেশ করবে।” (সুরা নিসা-১০)

(খ) মহানবী (সঃ) এর বাণীঃ

“হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ মুসলমানদের ঘরের মধ‍্যে উত্তম ঘর সেইটি- যাতে ইয়াতিম আছে আর তার সাথে উত্তম আচরণ করা হয় এবং খারাপ ঘর সেইটি- যাতে ইয়াতিম আছে, আর তার সাথে অসদাচরণ করা হয়।” (ইবনে মাজাহ )

 

৫. সৃষ্টির প্রতি দয়াঃ মুসলিম অমুসলিম নির্বিশেষে সৃষ্টি জগতের প্রতিটি প্রাণীর প্রতি অনুগ্রহশীল হওয়ার জন্য পবিত্র কুরআন ও হাদীসে অসংখ্য বাণী রয়েছে।

(ক) মহানবী (সঃ) এর বাণীঃ

“হযরত আব্দুল্লাহ (রাঃ) বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ সকল সৃষ্টি আল্লাহ্ তায়ালার পরিবারের সন্তান-সন্ততি বিশেষ। সৃষ্টজীবের মধ‍্যে আল্লাহ্ তায়ালার কাছে সব চাইতে প্রিয় সে-ই, যে তাহার সন্তান-সন্ততির প্রতি অনুগ্রহ করে।” (বায়হাকী)

(খ)মহানবী (সঃ) এর বাণীঃ

“হযরত জারির ইবনে আব্দুল্লাহ (রাঃ) হইতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ)বলেছেনঃ

যে ব্যক্তি মানুষের প্রতি অনুগ্রহ করে না আল্লাহ তাহার প্রতি অনুগ্রহ করেন না।” (বুখারী ও মুসলিম)

৬. দরিদ্র, নিস্ব ও অসহায় ব‍্যক্তিদের অধিকারঃদরিদ্র, নিস্ব ও অসহায় ব্যক্তিদের জন্য ইসলামের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা হল যাকাত ব্যবস্থা। ইসলাম নিসাব পরিমাণ সম্পদের অধিকারী ধনী ব্যক্তিদের মালিকানাধীন সম্পদের ৪০ ভাগের এক ভাগ সম্পদ দরিদ্রদের জন্য নির্ধারণ করেছে। অর্থাৎ নেসাব পরিমাণ সম্পদের অধিকারী ধনাঢ্য ব্যক্তিগণ তাদের সম্পূর্ণ সম্পদ উপভোগ করতে পারবেন না। তাদের সম্পদের ৪০ ভাগের এক ভাগ যাকাত দেওয়া বাধ্যতামূলক। যাকাতের সম্পদ ৮টি খাতে ব্যবহার করার জন্য ইসলাম নির্দেশ দিয়েছে। তার মধ্যে দরিদ্র ও নিঃস্ব ব্যক্তিদের জন্য সিংহভাগ রয়েছে।

(ক) মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন,

“তুমি কি দেখেছ তাকে, যে দ্বীনকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করে? সে তো ওই ব্যক্তি যে ইয়াতিমকে গলাধাক্কা দেয় ( অর্থাৎ সে কোনো সাহায্য প্রার্থনা করলে তাকে তাড়িয়ে দেয়) এবং মিসকিনকে খাদ্যদানে উৎসাহিত করে না।” (সূরা মাউন)

(খ) মহানবী (সঃ) এর বানীঃ

“রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ আল্লাহর কসম, সে ঈমানদার হবে না। আল্লাহর কসম সে ঈমানদার হবে না। আল্লাহর কসম সে ঈমানদার হবে না। জিজ্ঞাসা করা হলো, ইয়া রাসুলুল্লাহ (সাঃ) সে কে? হুজুর (সঃ) বললেন, যার প্রতিবেশী তার অনিষ্ট হতে নিরাপদ নয়।” (বুখারী ও মুসলিম)

(গ) মহানবী (সঃ) এর বাণীঃ

“হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ থেকে বলতে শুনেছি যে, সেই ব্যক্তি পূর্ণ মুমিন নয়, যে উদর পূর্তি করে খায় অথচ তার পাশেই তার প্রতিবেশী ক্ষুধার্ত থাকে।” (বায়হাকী)

পরিশেষে বলতে হয়, বিশ্বজুড়ে মানবতা প্রতিষ্ঠার জন‍্য ইসলাম যা দিয়েছে হাজার পৃষ্ঠা লিখেও তা শেষ করা সম্ভব নয়। মানব জীবনের যতটি ক্ষেত্র ও বিভাগ রয়েছে তার প্রতিটি ক্ষেত্রে মানবতা প্রতিষ্ঠার লক্ষ‍্যে ইসলাম শ্রেষ্ঠতম বিধান দিয়েছে। যার কিছু বিবরণ সংক্ষিপ্ত আকারে এখানে তুলে ধরার চষ্টা করেছি। আসুন পবিত্র কুরআন মহানবী (সঃ) এর সুস্পষ্ট বাণী সমুহ অর্থসহ বুঝে বুঝে পড়ার চেষ্টা করি এবং তা আমাদের ব‍্যক্তিগত জীবনে বাস্তবায়ন করি, তবেই আমরা হব পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম মানুষ। মহান আল্লাহ্ তায়ালা আমাদেরকে সেই সক্ষমতা দান করুন।

Read More

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked with *

2 Comments

  • মোঃ আবু বকর সিদ্দিক
    July 12, 2023, 12:18 am

    আলহামদুলিল্লাহ্। ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই অষ্ট্রেলিয়া থেকে প্রকাশিত, বিশ্ব নন্দিত বাংলা পত্রিকা "সুপ্রভাত সিডনি" র সুযোগ‍্য সম্পাদক বহু প্রতিভার অধিকারী ও মননশীল ব‍্যক্তিত্ব জনাব আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ ইউসুফকে। যিনি খুব যত্ন সহকারে আমার লেখা ইসলামিক আর্টিকেল টি প্রকাশ করেছেন। আমি সুপ্রভাত সিডনি পত্রিকার সম্পাদকসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি। সাথে সাথে এই দোয়া করছি যে, গুণী সম্পাদক সাহেব দ্বীনের পক্ষে এবং জালিম হটিয়ে সত‍্য ন‍্যায় ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার দুঃসাহসী সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন তা যেন সফল হয়। মহান আল্লাহ্ তার সকল পরিশ্রম কবুল করুন।

    REPLY
  • Iesha Seaver
    October 17, 2024, 4:14 am

    Great post! I learned something new and interesting, which I also happen to cover on my blog. It would be great to get some feedback from those who share the same interest about Airport Transfer, here is my website <a href="http://v163-44-197-215.a002.g.bkk1.static.cnode.io/redir.php?url=http://yr4.de/">YR4</a&gt; Thank you!

    REPLY

সর্বশেষ পোস্ট

Advertising