এম.এ,ইউসুফ শামীম: চলমান পবিত্র রমজান মাসে বাংলাদেশের একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ইফতার অনুষ্ঠানে সন্ত্রাসী ছাত্রলীগের হামলা কি প্রমাণ করে? সরকার ছাত্রলীগকে দিয়ে ইফতার অনুষ্ঠানে আক্রমণ-হামলা চালিয়ে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠীর ধর্মীয় অধিকার হরণ করছে। ক্ষমতা দখলের পৃষ্ঠপোষক ও পার্শ্ববর্তী দেশের উগ্র হিন্দুত্ববাদী প্রভুদের খুশি করার জন্যই আওয়ামী লীগ সরকার ইফতার অনুষ্ঠান বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে। এতে পরিষ্কার বুঝা
এম.এ,ইউসুফ শামীম: চলমান পবিত্র রমজান মাসে বাংলাদেশের একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ইফতার অনুষ্ঠানে সন্ত্রাসী ছাত্রলীগের হামলা কি প্রমাণ করে? সরকার ছাত্রলীগকে দিয়ে ইফতার অনুষ্ঠানে আক্রমণ-হামলা চালিয়ে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠীর ধর্মীয় অধিকার হরণ করছে। ক্ষমতা দখলের পৃষ্ঠপোষক ও পার্শ্ববর্তী দেশের উগ্র হিন্দুত্ববাদী প্রভুদের খুশি করার জন্যই আওয়ামী লীগ সরকার ইফতার অনুষ্ঠান বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে। এতে পরিষ্কার বুঝা যাচ্ছে, গোমূত্র সেবনকারী ভারতীয় প্রভুদেরকে খুশি করার লক্ষ্যে নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গ করছে বিতর্কিত আওয়ামী লীগ। ছাত্রলীগ, যুবলীগ বা আওয়ামী লীগের ভিতর হিন্দুর সংখ্যা যদিও বেশি না, তবে এ হামলায় ভারতীয় সন্ত্রাসী হিন্দুরা কৌশলে অংশ নিয়েছে বলে বিশেষ সূত্রে জানা গেছে। দলের ভিতর নামে মাত্র যেগুলো মুসলমান আছে, সেগুলো হিন্দুদের মতই আচরণ করে, হিন্দুদের সাথেই মহরম দহরম বেশি। এ ধরনের নামে মাত্র মুসলমানেরা আজ সর্বত্র বিদ্যমান। এরা সুযোগ পেলেই ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে সমালোচনা করতে বেশি পছন্দ করে। এদেরকে দেখে মনে হয়, মুসলমানের ঘরে জন্ম হওয়াটাই তাদের বড় দুঃখ। ছাত্রলীগ, যুবলীগ বা আওয়ামী লীগের মুসলমান নামধারীরা বাংলাদেশে ইসলামের শত্রুতায় হিন্দুদের থেকেও এক ধাপ এগিয়ে। অনেক সময় দেখা গেছে, যে কাজ বা কথা হিন্দুরাও উচ্চারণ করেনা , সে কথা বা কাজ মুসলমান নামধারীরা অকপটে করে যাচ্ছে বা ইসলামের বিরুদ্ধে ঘৃণাবাদী জঘন্য অবস্থান নিচ্ছে।
অথচ বাংলাদেশ সবসময় ছিল হিন্দু , মুসলমানদের ভ্রাতৃত্বপূর্ণ এক স্থান। দীর্ঘ দিন ধরে হিন্দু-মুসলমান সহবস্থান করেছে যা শত বছরের ইতিহাস। সব সময় একে অপরের ভালো-মন্দে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছি। হিন্দুদের কোনো সমস্যায় মুসলমানেরা ছুটে গিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছে, আবার প্রতিবেশী মুসলমানের কোনো সমস্যায় হিন্দু ভাইয়েরা পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। স্কুল এবং কলেজে আমাদের অগণিত হিন্দু বন্ধু-বান্ধব ছিল। আমরা একে অপরের বাসায় যাতায়াত করতাম, খাওয়া দাওয়া করতাম, কেউ কখনো ঘুণাক্ষেরও এদেশে হিন্দু-মুসলমানের ঘৃণানির্ভর বিভেদের কথা ভাবেনি।
শেখ হাসিনা ও মোদী ক্ষমতায় আসার পর থেকে এ ধরনের একটি শক্ত দেয়াল দাঁড় করে বিভেদ সৃষ্টি করে রাজনৈতিক ফায়দা নেবার চক্রান্তে বিভোর তারা। হিন্দু আরেকটি পৃথক জাতি বা গোত্র, এটা বাংলাদেশে কেউ কখনো ভেবেও দেখেনি। কিন্তু শেখ হাসিনার আবির্ভাবের সাথে সাথে হিন্দুদেরকে ব্রেইন ওয়াশ করে পৃথক করেছে , যার একান্ত সহযোগিতায় আছে সন্ত্রাসী মোদী। দেশের প্রায় সব প্রতিষ্ঠানে বড় বড় পজিশনগুলো হিন্দুরা দখল করেছে। ফাইন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের তথ্য মতে বাংলাদেশে প্রায় ১০ লক্ষ ভারতীয় শ্রমিক ও কর্মকর্তা কাজ করছে।
বাংলাদেশ ভারতের জন্য চতুর্থ বৃহত্তম রেমিট্যান্সের উৎস হয়ে উঠেছে, ২০১৭ সাল থেকে ১০ বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স যাচ্ছে বাংলাদেশ থেকে ভারতে। যেখানে বাংলাদেশে বেশির ভাগ শিক্ষিত ছেলে-মেয়ে বেকার, সেখানে ভারত থেকে কর্মকর্তা, শ্রমিক, কামলা এনে দেশে এক বঞ্চনাপূর্ণ পরিস্থিতি তৈরি করার কি কারণ হতে পারে ?
যাইহোক, দেশ এখন স্বাধীনতা ও সর্বভৌমত্বহীন এক অসহায় বস্তুতে পরিণত হয়েছে। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব, অর্থনীতি, সংস্কৃতি, ধর্মীয় রীতি নীতি সব কিছুই পরিবর্তনের নীল নকশা আজ ভারতীয় প্রেতাত্মা হাসিনার হাতে। দেশকে সন্ত্রাসী আওয়ামী লীগের ঘষেটি বেগম অলিখিতভাবে তুলে দিয়েছে কসাই মোদির হাতে। এ দুই পক্ষ মিলে বাংলাদেশেকে চুষে খাবে যতদিন না পাকিস্তানিদের মতো অবরোধের ভিতর পড়বে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে ইফতার মাহফিলে নিষেধাজ্ঞা ও হামলা মুসলমানদের বিরুদ্ধে এ গভীর চক্রান্তেরই অংশ। সন্ত্রাসী আওয়ামী লীগ তাদের স্বার্থে কখনও ইসলামকে ব্যবহার করে, আবার কখনো ছুঁড়ে ফেলে দেয়। দেশবাসী ভোট দেয়ার অধিকার হারিয়েছে, জাতীয় সংসদ হারিয়েছে, গণতন্ত্র ও আইনের শাসন হারিয়েছে, শেষমেষ দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানরা নিজেদের সংস্কৃতি ও মূল্যবোধও হারাতে বসেছে সন্ত্রাসী ছাত্রলীগের তাণ্ডবে ।
আওয়ামী লীগ সরকারের অপর নাম সিন্ডিকেট আর লুটপাট। দ্রব্যমূল্য হু হু করে বাড়ছে, নিম্ন আয়ের মানুষ একেবারে ধুলার মধ্যে মিশে গেছে। সুতরাং এইসব ধ্রুমজাল সৃষ্টি করে কোনো লাভ হবে না। জনগণ সবই জানে, জনগণ সবই দেখছে।
একটা পৃষ্ঠাপোষকতা লাগে ক্ষমতার একটা ছায়া লাগে, তখনই সিন্ডিকেটবাজরা দুরন্ত গতিতে ছুটতে থাকে। বাংলাদেশে রোজাদার মানুষ আজ কাতরাচ্ছে প্রয়োজনীয় খাবার কিনতে না পারার অক্ষমতায়, মানুষ কাতরাচ্ছে বিশুদ্ধ পানির জন্য, মানুষ কাতরাচ্ছে কোনো রকমের বেঁচে থাকার জন্য। এই কাতরানি ক্ষমতবানরা শুনতে পায় না।
কোনো কিছু সামাল দিতে না পেরে সরকার নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এখন সন্ত্রাসী ছাত্রলীগকে লেলিয়ে দিয়েছে ধর্মপ্রাণ মুসলমানের ইফতার ভাঙ্গার কর্মসূচিতে। যখনই আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসে তখনই তারা মুসলমানদের ধর্মীয় বিশ্বাস, সংস্কৃতির ওপর আঘাত হানে এবং আলেম সমাজের ওপর নিপীড়ন নেমে আসে। ইফতার মাহফিলে নিষেধাজ্ঞা ও হামলা, এটা কি গভীর চক্রান্তের অংশ নয় ? মুসলমানদের কোনো ধর্মীয় অনুষ্ঠান করতে গেলে সন্ত্রাসী আওয়ামীলীগ-ছাত্রলীগের গা জ্বালা করার অর্থ কী? দেশের একেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে যেখানে ডজন ডজন পূজামণ্ডপ তৈরি করে বিশ্ববিদ্যালয়ের খরচে ঘটা করে সাড়ম্বরে পুজার আয়োজন করা হয়, সেখানে ছাত্রদের ব্যক্তিগত উদ্যোগে সামান্য একটি কোরআন তেলাওয়াত অনুষ্ঠান ও ইফতার মাহফিলের আয়োজনেই তেলেবেগুণে জ্বলে অফিশিয়াল শোকজ নোটিশ জারি ও আয়োজনকারী ছাত্রদের নামের তালিকা তলব করা কিসের ইঙ্গিত করে? এটি কি কোন ন্যায় ও গণতন্ত্রনির্ভর সমাজ যেখানে ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিত থাকে, না কি এটি গুজরাটের কসাই মোদীর অনুগত ভারতের কোন এলাকা যেখানে ইসলামী আচার আচরণের অপরাধে শাস্তি পেতে হয়?
লাগাতার রাষ্ট্রীয় হামলায় বাংলাদেশ নামক অসহায় দেশটি এখন ধর্ষিতা নারীর মতো। মুখ থুবড়ে পড়ে আছে, যাবার কোথাও জায়গা নেই। যত্র তত্র রাষ্ট্রীয় হামলায় দেশ আজ অচল। একটি রাষ্ট্রের জনগণের ন্যূনতম স্বাধীনতা হচ্ছে -ধর্মীয় স্বাধীনতা। সংখ্যা গরিষ্ঠ মুসলমানের বাংলাদেশে বর্বরেরদল রোজা রাখা ছাত্রদের উপর হায়েনার মতো ঝাঁপিয়ে পড়েছে, রক্তাক্ত করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। প্রতিটি রক্তের মূল্য একদিন পাই পাই করে হিসেবে করে নেয়া হবে ইনশাল্লাহ। তবে,হাসিনা -মোদী যতই চেষ্টা করুকনা কেন, ইসলামের বিন্দু মাত্র কোনো ক্ষতি করতে পারবেনা। ইতিহাস তাই বলে। ঢাকায় ছাত্রদেরকে রক্তাক্ত করায় সমগ্র দেশে গণ ইফতার কর্মসূচি পালিত হয়েছে , এতে ইসলামের আরো প্রসার ঘটেছে।
পাকিস্তানের রাজাকার আর ভারত সমর্থিত আওয়ামী লীগের ভিতর মূলত তেমন কোনো পার্থক্য দেখা যায়না। বরং পাকিস্তানিরা মুসলমান বা ইসলামের ব্যাপারে ছিলো উদার। অন্যদিকে মোদী ও তার জানোয়ারের দল মুসলমান, শিক এমনকি হিন্দুদেরকেও কচু কাটা কেটেছে ভারতে। আর তাইতো মোদিকে গুজরাটের কসাই খেতাব দেয়া হয়েছে।
সমগ্র বিশ্বে যখন গাজার মুসলমান ভাইবোনদের নিয়ে চরম উদ্বিগ্ন, ঠিক তখন বাংলাদেশে মুসলমানদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় আ’মল ,পবিত্র রমজানের ইফতারে বাধা – এ কিসের আলামত? বাংলাদেশে শেখ হাসিনার শাসনামলে আইয়ামে জাহেলিয়াত যুগের পুনরাবির্ভাব ঘটেছে বললেও কম বলা হবেনা।
Leave a Comment
Your email address will not be published. Required fields are marked with *