728 x 90

অগ্নিগর্ভা বাংলাদেশ

– ড. ফারুক আমিন ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে চীন সফরে গিয়েছিলো শেখ হাসিনা। কিন্তু সেখান থেকে প্রত্যাখ্যাত হয়ে সফর সংক্ষিপ্ত করে সে বাংলাদেশে ফিরে এসেছিলো ১০ জুলাই। তারপর ১৪ জুলাই গণভবনে আয়োজন করা হয় প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন নামের বাংলাদেশী সাংবাদিকদের দলবদ্ধভাবে শেখ হাসিনাকে তোষামোদ করার নিয়মিত অনুষ্ঠানটি। চীন সফরে প্রত্যাখ্যাত হতাশ হাসিনা তার স্বভাবসুলভ মুখের সমস্ত

– ড. ফারুক আমিন

ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে চীন সফরে গিয়েছিলো শেখ হাসিনা। কিন্তু সেখান থেকে প্রত্যাখ্যাত হয়ে সফর সংক্ষিপ্ত করে সে বাংলাদেশে ফিরে এসেছিলো ১০ জুলাই। তারপর ১৪ জুলাই গণভবনে আয়োজন করা হয় প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন নামের বাংলাদেশী সাংবাদিকদের দলবদ্ধভাবে শেখ হাসিনাকে তোষামোদ করার নিয়মিত অনুষ্ঠানটি। চীন সফরে প্রত্যাখ্যাত হতাশ হাসিনা তার স্বভাবসুলভ মুখের সমস্ত বিষ উগড়ে দেন এই সংবাদ সম্মেলনে।

সংবাদ সম্মেলনের এক পর্যায়ে কুখ্যাত একাত্তর টিভির ততোধিক কুখ্যাত সাংবাদিক ফারজানা রুপা প্রশ্নের নামে চলমান কোটা আন্দোলনের প্রশ্ন এনে শেখ হাসিনাকে একদফা তোষামোদ করে নেয়। তখন হাসিনা এক পর্যায়ে তাড়িয়ে তাড়িয়ে বলে “মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে এতো ক্ষোভ কেন? মুক্তিযোদ্ধাদের নাতিপুতিরাও পাবে না, তাহলে কি রাজাকারের নাতিপুতিরাা পাবে?”

রাজপথে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করে দাবী জানানো সাধারণ ছাত্রছাত্রীদেরকে এই ব্যাঙ্গাত্বক মন্তব্য স্বাভাবিকভাবেই বিক্ষুদ্ধ করে। তারা নতুন স্লোগান দেয়, তুমি কে আমি কে, রাজাকার রাজাকার। চেয়েছিলাম অধিকার, হয়ে গেলাম রাজাকার।

দশকের পর দশক ধরে মুক্তিযুদ্ধ ব্যবসা করে যাওয়া দলটির নেতাকর্মীরা এই স্লোগানকে আবারও সুযোগ হিসেবে নিয়ে তাদের চিরাচরিত অভ্যাস অনুযায়ী আন্দোলনকারী ছাত্রছাত্রীদেরকে মুক্তিযুদ্ধ অবমাননার দোষে দোষী করতে শুরু করে। তারা মনে করেছিলো রাজনৈতিক দলগুলো এই আওয়ামী অস্ত্রের মুখে যেভাবে আত্মপক্ষ সমর্থন করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে, ছাত্রছাত্রীরাও তাই করবে। কিন্তু এবার তাদের হিসেবে বড় একটা গলদ হয়ে গেছে।

চৌদ্দ থেকে চব্বিশ বছর বয়সী সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কথা বলার পরিবর্তে আওয়ামীদের এইসব আলোচনাকে তুড়ি দিয়ে উড়িয়ে দেয়। তারা আরো বিক্ষুদ্ধ হয়ে উঠে এবং আরো বেশি শক্তিশালী ও সরাসরি বক্তব্য দিতে থাকে। তখন আওয়ামী লীগ তাদের পরবর্তী স্বভাবজাত অস্ত্র প্রয়োগ করে। আক্রমণ ও দমন।

১৬ জুলাই মঙ্গলবার রাতে ফেইসবুকে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিও পুরো বাংলাদেশের প্রতিটি ন্যায়চিন্তার মানুষকে এবং লক্ষ লক্ষ প্রবাসীকে স্তব্ধ করে দেয়। সারা দেশের বিভিন্ন স্থানের মতোই রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনকারী ছাত্রদের উপর পুলিশ ও ছাত্রলীগ যৌথভাবে সেদিন হামলা চালিয়েছিলো। বিশ্ববিদ্যালয়টির ইংরেজি বিভাগে সদ্য অনার্স শেষ করে মাস্টার্সে অধ্যয়নরত ছাত্র এবং আন্দোলনকারী ছাত্রছাত্রীদের নেতা আবু সাঈদ পুলিশ ও ছাত্রলীগকে উদ্দেশ্য করে আর গুলি না করতে অনুরোধ করে। তখন সে অসীম সাহসে একাই দুই হাত দুই পাশে ছড়িয়ে তাদের সামনে দাঁড়ায়। যেন সে বলছিলো, গুলি করতে হলে আমাকে করো।

সম্ভবত তার দৃঢ় বিশ্বাস ছিলো নিরস্ত্র একজন মানুষকে এভাবে হত্যা করা কোন মানুষের পক্ষে সম্ভব না। কিন্তু আওয়ামী লীগের দলদাস দানব পুলিশ সরাসরি তার বুকে একের পর এক গুলি করে। মাটিতে লুটিয়ে পড়া আবু সাঈদ একবার উঠে দাঁড়ায়, কিন্তু আবার পড়ে যায়। তাকে তার বন্ধু ছাত্ররা ধরাধরি করে নিয়ে যায়। রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার এক গ্রামের দরিদ্র মা-বাবা এবং পরিবারের আশা ভরসার স্থল আবু সাঈদের জীবন সেদিন শেষ হয়ে যায়।

একই দিনে বাংলাদেশের বিভিন্ন শহরে অন্তত ৬ জন ছাত্র নিহত হয়। আবু সাঈদের মতো অন্যদের মৃত্যুর দৃশ্য ভিডিওতে ধরা পড়েনি। কিন্তু প্রতিটি তরুণ প্রাণ সেদিন আওয়ামী বর্বরতার শিকার হয়ে পৃথিবী থেকে বিদায় নেয়। দেশজুড়ে আহত হয় অসংখ্য ছাত্রছাত্রী।

এভাবেই শুরু হয় বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অভূতপূর্ব অধ্যায়। ১৬ তারিখের পর থেকে আওয়ামী বর্বরতা বন্যার স্রোতের মতো বেড়েই চলে। গুলি করে এবং কুপিয়ে তারা বাংলাদেশের প্রকাশ্য রাস্তায় একের পর এক সাধারণ ছাত্রদেরকে হত্যা করা শুরু করে। পরবর্তী তিন দিনে নিহতের সংখ্যা আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী দেড়শ। কিন্তু যারা আওয়ামী লীগের লাশের সংখ্যা কমানোর ও লুকানোর রাজনীতি সম্পর্কে ওয়াকেবহাল, যারা বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানের সাথে যোগাযো রাখেন, তাদের মতে মৃত ছাত্রদের সংখ্যা তিনশরও বেশি হবে। ছাত্ররা ছাড়াও বিভিন্ন জায়গায় নিহত হয়েছে পথচারী সাধারণ মানুষ। ছাত্রদেরকে পুলিশী আক্রমণ থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করতে গিয়ে নিহত হয়েছে শ্রমিকরা। দুই দিনের ক্রমাগত সংঘর্ষ এবং নিহতের সংখ্যা বেড়ে চলার প্রেক্ষিতে আন্দোলনকারী ছাত্ররা সারা দেশে ১৮ জুলাই থেকে কমপ্লিট শাটডাউন বা সমস্ত কিছু বন্ধের কর্মসূচী ঘোষণা করে।

নিজ দেশের মানুষের উপর অনবরত গুলি ছুড়ে এভাবে হত্যাযজ্ঞ চালানো যায়, বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের জন্য এই দৃশ্য দেখাটা ছিলো বড় রকমের একটি ধাক্কা। ফ্যাসিবাদী হাসিনার আদেশে গুন্ডাতন্ত্র কায়েম হওয়া দেশ বাংলাদেশে যদিও এটি নতুন কোন ঘটনা নয়। দুই হাজার তেরো-চৌদ্দ থেকে আওয়ামী সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দল, বিশেষ করে জামায়াতের নেতাকর্মীদের উপর বেশ কয়েকটি ভয়াবহ গণহত্যা চালিয়েছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে মর্মান্তিক গণহত্যা তারা চালিয়েছে শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের ডাকে সমবেত হওয়া নিরীহ মাদ্রাসা ছাত্র-শিক্ষকদের উপর এবং সেই গণহত্যার পর সমস্ত লাশ গুম করে দিয়ে তারা গরুর রক্ত মেখে শুয়ে থাকা ও কান ধরে উঠে দৌড় দেয়া সহ নানা ধরণের রসিকতা ও বিদ্রুপ করে সেই হত্যাকান্ডকে উদযাপন করেছে। কিন্তু এইবার প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতাবিহীন সাধারণ মানুষ দেখতে পেলো আওয়ামী ফ্রাংকেস্টাইনের দানবের থাবা থেকে তারাও নিরাপদ না।

দুই হাজার চব্বিশে এসে প্রথমবারের মতো এতো ব্যাপক পরিসরে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে বাংলাদেশে স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদ কায়েম করা আওয়ামীদের হাতে হত্যার শিকার হয়েছে ঢাকার স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্ররা। এর আগে নিরাপদ সড়ক আন্দোলন বা ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলনে তারা কিছুটা দমনের শিকার হয়েছিলো, কিন্তু সেই সময়গুলোতে আন্দোলন দমাতে বেশি ভূমিকা রেখেছিলো আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক ফ্রন্ট। এবার তাদের উপর সরাসরি স্টিমরোলার চালানো হয়েছে, কারণ সাংস্কৃতিক প্রভাব এবার আর কাজ করেনি। এর পাশাপাশি আছে হাসিনার মানুষ হিসেবে স্বভাবজাত অসহিষ্ণুতা। সে ছাত্রদের কোটা সংস্কার আন্দোলনের দ্বিতীয় পুনরুজ্জীবনকে ব্যক্তিগত অপমান হিসেবে নিয়েছে। ২০১৮ সালের দাবী মেনে নেয়ার ঘটনা সে ভুলতে পারেনি। এ কারণেই সে সংবাদ সম্মেলনে তুচ্ছাতাচ্ছিল্য করে মন্তব্য করেছিলো।

সব কিছুর পরিণতিতে এবার যারা মারা গেছে, যারা আহত হয়েছে, যারা নির্যাতিত হয়েছে তাদের বেশিরভাগই হলো সমাজের মধ্যবিত্ত ও সুবিধাপ্রাপ্ত শ্রেণীর মানুষ। এরা সবাই অল্পবয়সী কিশোর ও তরুন। সন্তান হারানোর বেদনায় বুকফাটা কান্নায় এবার আবু সাঈদের মতো গ্রামীন মায়ের সাথে শামিল হয়েছেন স্বচ্ছল পরিবারে গৃহিনী, যার কাছে সন্তানের অর্থনৈতিক প্রয়োজন হয়তো নেই। এ সন্তান বড় হয়ে তার প্রতিপালনের ভার নেবে, সে প্রয়োজন হয়তো নেই, কিন্তু কলিজার টুকরা সন্তানটির প্রতি মায়া তার একই রকম। মায়ের ভালোবাসা কোন আর্থ-সামাজিক প্রয়োজনের ধার ধারে না। “স্বজন হারানোর বেদনা আমার চেয়ে ভালো আর কে জানে” এই হাস্যকর বুলি নিয়মিত আওড়ানো শেখ হাসিনা বাংলাদেশের মায়েদেরকে যেন তার নিজের বেদনা মর্মে মর্মে বুঝিয়ে দিতে বদ্ধপরিকর।

ঘটনাবলীর প্রবাহে এরপর ১৮ জুলাই বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের ইন্টারনেট যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়ে বাংলাদেশকে সারা বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয়। প্রথমদিকে ফোন যোগাযোগও সম্পূর্ণ বন্ধ করা হয়। একদিন পর ফোন যোগাযোগ সীমিত পরিসরে এমনভাবে চালু করা হয় যে আসলে বাংলাদেশের বাইরে থেকে দেশে ফোন করলে পরিস্কার কথা বুঝার সুযোগ নেই। বেশিরভাগ সময়েই কোন কথা বুঝা যায় না। ১৯ জুলাই সারা দেশে কারফিউ ঘোষণা করা হয়। এর মাঝে ছাত্রদের প্রতিনিধিদেরকে আটক করে নিয়ে গিয়ে আলোচনার নাটক সাজানোর প্রাণপন চেষ্টা করে সরকার, কিন্তু সেই কৌশল হালে পানি পায়নি। অচলাবস্থায় স্থবির হয়ে পড়া পুরো দেশকে সচল করতে না পেরে ২১ এবং ২২ জুলাই সারা দেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। ২০ জুলাই ঢাকা সহ বিভিন্ন শহরে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়। ২১ জুলাই হাসিনার আজ্ঞাবহ আদালত দিয়ে কোটা সংস্কারের দাবী মেনে নিয়ে একটি রায় ঘোষণা করা হয় কিন্তু এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সে রায়ের কোন প্রভাব পড়েছে বলে দৃশ্যমান হচ্ছে না। বাংলাদেশে অচলাবস্থা চলছেই। বাংলাদেশের মানুষ পরিস্কারভাবেই জানে হাসিনা কিভাবে আদালত ও বিচারব্যবস্থাকে তার খেয়ালখুশী মতো নিজ স্বার্থ আদায়ের উপায় হিসেবে ব্যবহার করে।

বিগত ষোল বছরে বাংলাদেশ ও বিশ্বের মানুষ দেখে গিয়েছে ফ্যাসিবাদী হাসিনা কিভাবে মানুষের রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক অধিকারকে বিন্দুমাত্র পরোয়া করেনি। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দমন করার জন্য সে মৌলিক মানবাধিকারেরও কোন তোয়াক্কা করেনি, বরং মানবাধিকার লংঘনে সারা পৃথিবীর অন্যতম এক পুরোধা হিসেবে নিজেকে সে প্রতিষ্ঠা করেছে। প্রশ্ন জাগতেই পারে, এতো দীর্ঘ সময় ধরে এভাবে একটা কতৃত্ববাদী শাসন কিভাবে টিকে থাকতে পারে? বাংলাদেশের দুর্ভাগ্য হলো শেখ হাসিনা ও তার স্বৈরাচারী সন্ত্রাসী দলের ক্ষমতা আঁকড়ে থাকার সবচেয়ে বড় সহায় হলো প্রতিবেশী ভারতের সাহায্য। আভ্যন্তরীন রাজনীতির চেয়ে বরং আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ভূ-রাজনীতির পরিক্রমায় বছরের পর বছর যাবত দুর্ভাগ্যের শিকার হচ্ছে বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী জনগণ।

ইসলামী সন্ত্রাসবাদের জুজুর ভয় দেখিয়ে হাসিনা দীর্ঘদিন পশ্চিমা দেশগুলোর সমর্থন আদায় করেছে। সেই অবান্তর জুজুর ভয় যখন আর কাজ করছে না তখন সে চীন, রাশিয়ার কাছ থেকে সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করেছে। পাশাপাশি পৃথিবীর অন্য দেশগুলো তাকে সমর্থন দিক বা না দিক, তার সাথে সবসময় রয়েছে এবং শেষ মূহুর্ত পর্যন্ত থাকবে প্রতিবেশী ভারত। বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী সমস্ত চুক্তি করে এবং দেশের যে কোন স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিয়ে ভারতের সমস্ত স্বার্থকে সেবা করার মতো এতোটা অনুগত শক্তি আর কেউ হতে পারবে না। শেখ হাসিনা নিজের মুখেই বারবার স্বীকার করেছে এ বিষয়টি, সে বলেছে “ভারতকে যা দিয়েছি, তা তারা আজীবন মনে রাখবে”। অথচ কি দিয়েছে তা জনগণের কাছে কখনোই প্রকাশ করা হয় না। সর্বোপরি উগ্র হিন্দুত্ববাদী আদর্শে পরিচালিত বিজেপি সরকারের কর্তৃক মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রতিবেশী বাংলাদেশকে প্রতিপক্ষ বিবেচনা করার বিষয়টি তো রয়েছেই।

সবকিছু মিলে বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদের ক্ষমতা আঁকড়ে থাকার মরণপন চেষ্টার প্রতিক্রিয়ায়, এবার প্রতিহিংসাপরায়ণ ক্ষমতালোভী দুর্নীতিবাজ এই দানবের থাবার শিকার হয়েছে দেশের সাধারণ মানুষ। অল্পবয়সী ছাত্রছাত্রীরা এবং দেশের সাধারণ মানুষ চরম আত্মত্যাগ করেও, অবর্ণনীয় নির্যাতনের শিকার হয়েও রাস্তা থেকে হটে যায়নি। আওয়ামী লীগের বর্বরতম ক্রমাগত আক্রমণের মুখে বাংলাদেশের মানুষ আবারও তাদের লুকিয়ে থাকা স্বাধীনচেতা স্বত্তাকে বের করে এনেছে। আগামী দিনগুলোতে যে কোন সময় হয়তো আমরা মুক্তি পাবো দীর্ঘদিনের জগদ্দল পাথর হিসেবে জাতির ঘাড়ে চেপে বসা সিন্দাবাদের দৈত্য শেখ হাসিনা ও তার আওয়ামী দুর্বৃত্তদের হাত থেকে, অথবা এই মুক্তির সংগ্রাম অনেক দীর্ঘও হতে পারে। সমস্ত ঘটনাপরিক্রমার মাঝে যে কোন সচেতন ও বিবেকবান মানুষকে আওয়ামী বর্বরতার শিকার হয়ে ঝরে যাওয়া প্রাণগুলোর চরম আত্মত্যাগ এবং নির্যাতনের শিকার হয়ে মারাত্মক আহত হাজার হাজার মানুষের কষ্ট ব্যাথিত করে তুলে। কিন্তু অন্য আরেকটি আঙ্গিকে এই অমানবিক ভোগান্তি ও কষ্টগুলোই হলো বাংলাদেশের জন্য গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের প্রসব যন্ত্রণা। নতুন একটি পরিবর্তিত বাংলাদেশের অপেক্ষায় আজ পুরো দেশ অগ্নিগর্ভ হয়ে আছে।

 

Read More

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked with *

সর্বশেষ পোস্ট

Advertising