তুমি ছিলে জ্যামিতির মূল কেন্দ্রবিন্দু
মাটিতে আঙুল গাঁথা আমার কিষাণের ভাই
শতবর্ষী বটবৃক্ষের মতই গভীরে শেকড় ভূ-নিহিত;
যার স্বজনের অস্থিমজ্জার ভাঁজে ভাঁজে;
তুমি আঁকতে শিমুলের ডালে বসা ঘুঘুর ছবি
যেভাবে সূর্য আঁকে দিনান্তে পৃথিবীর বুকে বসে
আলোর পতাকা এমন সহস্রকাল হতেই।
তোমাকেও তো দিয়েছিল তেমনই এক পতাকা-
মায়ের সেই শাড়ি বাবার রক্তে মেখে বোনটি
কোথায় রাখলে সেটা ভাঁজ ভেঙে শেষবার
তখনো খুঁজে দেখেছিলে উঁইপোকা খেলো কি না,
তোমার কাছে বুঝি সেটা অতি মূল্যহীন বস্ত্র ছিল?
জানত তোমার ঔরসে আমার বংশ দেখি না
তোমার জঠরে ঠাঁই পেল অচেনা পরিজন,
আজ বুঝলাম কেন তোমার দৃষ্টি অবনত থাকে
প্রদোষ-প্রভাতে কার মোহে আচ্ছন্ন থাকতে।
কেন অঙ্গুলি আর জমাট বাঁধে না বজ্রমুষ্ঠি হতে
কণ্ঠে বাজে না লাল-সবুজের উথাল-পাথাল গান।
জানিনা, তুমি আসবে কিনা কোনদিন বঙ্গতটে
শুধে দিতে সূর্যের ঋণ তোমার লহুর রক্তে;
আবার কি দূর্বা ঘাসের পরতে শিশিরের ঘ্রাণে
ছুটে আসবে তুমি মেঠোপথে নগ্ন দু’পায়ে?
এতোটাই অচেনা হয়ে গেলে তুমি কোনকালে।
কিন্তু একি তোমার চোখমুখে কি যেন ভাসছে
অনুশোচনা নাকি অনুতাপের অগ্নি ফুলকি,
পরিশেষে তোমারও বুঝি বোধদয় জেগে উঠছে
মাতৃভূমি হচ্ছে বিন্দু যার টানে হলে দেশকেন্দ্রিক।