728 x 90

সমাজের সব শ্রেণীর মানুষের খবর প্রকাশে স্বতন্ত্র গণমাধ্যমের গুরুত্ব অপরিসীম – সিনেটর ফাতিমা প্যামেন

ড. ফারুক আমিন:  গত ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ রবিবার সন্ধ্যায় সিডনির ব্যাংকসটাউন এলাকায় অবস্থিত হাইলাইন ভেন্যু সেন্টারে অস্ট্রেলিয়ান মুসলিম কমিউনিটির বহুল প্রচারিত ইংরেজী পত্রিকা অস্ট্রেলেশিয়ান মুসলিম টাইমস বা এমাস্ট AMUST)এর দশ বছর পূর্তি অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়। এ অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে অন্যান্য ভাষার বিভিন্ন কমিউনিটি পত্রিকা, স্থানীয় সমাজসেবক, রাজনীতিবিদ, ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ এবং শিক্ষাবিদদের সাথে উপস্থিত ছিলেন ওয়েস্টার্ন

ড. ফারুক আমিন:  গত ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ রবিবার সন্ধ্যায় সিডনির ব্যাংকসটাউন এলাকায় অবস্থিত হাইলাইন ভেন্যু সেন্টারে অস্ট্রেলিয়ান মুসলিম কমিউনিটির বহুল প্রচারিত ইংরেজী পত্রিকা অস্ট্রেলেশিয়ান মুসলিম টাইমস বা এমাস্ট AMUST)এর দশ বছর পূর্তি অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়। এ অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে অন্যান্য ভাষার বিভিন্ন কমিউনিটি পত্রিকা, স্থানীয় সমাজসেবক, রাজনীতিবিদ, ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ এবং শিক্ষাবিদদের সাথে উপস্থিত ছিলেন ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া থেকে নির্বাচিত আফগান বংশোদ্ভুত মুসলিম সিনেটর ফাতিমা প্যামেন Senator Fatima Payman

দীর্ঘ দশ বছর যাবত এমাস্ট প্রতি মাসে পত্রিকা হিসেবে ছাপা হয়ে আসছে এবং পুরো অস্ট্রেলিয়া জুড়ে এ পত্রিকাটির পাঠকরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছেন। এছাড়াও ওয়েবসাইটে পত্রিকাটির পাঠক রয়েছে অনেক। অস্ট্রেলিয়ার শিক্ষানুরাগী ও সচেতন মুসলিম পরিবারগুলোকে এমাস্টকে গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা হয়। পত্রিকাটির দশ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে নাম দেয়া হয়েছিলো ইংক এন্ড ইমপ্যাক্ট, অর্থ্যাৎ কালি এবং ফলাফল। যদিও পত্রিকাটির ওয়েবসাইটের পাঠক বর্তমানে ছাপা সংখ্যার চেয়ে বেশি, তথাপি একটি পত্রিকার আদি এবং প্রচলিত বৈশিষ্ট্য অনুসারে কালি দিয়ে ছাপানো অক্ষরের সামাজিক গুরুত্ব ও ফলাফলকে প্রতীক হিসেবে উপস্থাপন করার জন্যই অনুষ্ঠানের এ নামকরণ, এমনটিই জানান অনুষ্ঠানের শরুতে শুভেচ্ছা বক্তব্যে এমাস্টের প্রধান সম্পাদক জিয়া আহমেদ।

পত্রিকাটির সহ প্রতিষ্ঠাতা কাজী আশফাক আহমেদের স্মরণে অনুষ্ঠানে একটি সংক্ষিপ্ত ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়। সত্তরের দশকে অস্ট্রেলিয়ায় অভিবাসী হিসেবে আগত স্বল্পসংখ্যক মুসলিমদের মাঝে ধর্মীয় ও সামাজিক কার্যক্রম প্রতিষ্ঠায় এই মেধাবী মানুষটি কিভাবে খোলা মনে ধর্ম, বর্ণ, জাতীয়তা নির্বিশেষে সব ধরণের মানুষদের সাথে সংযুক্ত হয়েছিলেন তা তথ্যচিত্রটিতে পরিস্কার বুঝা যায়। কাজী আশফাক আহমেদের প্রতিষ্ঠিত বিভিন্ন সামাজিক, অর্থনৈতিক, ধর্মীয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো আজও অস্ট্রেলিয়ান মুসলিম কমিউনিটিগুলোর অগ্রযাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

সম্প্রতি ফিলিস্তিন ইস্যুতে ক্ষমতাসীন লেবার পার্টি থেকে পদত্যাগকারী ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার মুসলিম সিনেটর ফাতিমা প্যামেন ছিলেন এ অনুষ্ঠানের মূল আকর্ষণ। তিনি তার গুরুত্বপূর্ণ এবং অর্থবহ বক্তব্যে একটি স্বতন্ত্র গণমাধ্যম হিসেবে এমাস্টের দীর্ঘ এক দশকের ভূমিকার প্রশংসা করেন।

তিনি বলেন, আধুনিক যুগে মূল ধারার গণমাধ্যম পৃথিবীর সব দেশেই একটি পর্যায়ে গিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক স্বার্থ এবং কোটারি স্বার্থের সহায়ক শক্তি হিসেবে ভূমিকা পালন করতে শুরু করে। যদিও গণমাধ্যমের প্রত্যাশিত ভূমিকা ছিলো সব মানুষের পক্ষে সমান সহায়তা নিয়ে এবং সমাজের বিবেক হিসেবে কার্যকর ভূমিকা রাখা, কিন্তু গণমাধ্যমগুলো তাদের মালিকানা ও নানা স্বার্থ ও মতবাদ সংশ্লিষ্টতার ফলে উল্টা পরিকল্পিত শব্দ ব্যবহার ও খবর বাছাই এর মতো পরোক্ষ কৌশল ব্যবহার করে জনগণের চিন্তাভাবনাকে অন্যায়ভাবে প্রভাবিত করার চেষ্টা করে। এই ধরণের পরিস্থিতিতে স্বতন্ত্র গণমাধ্যমগুলো ন্যায় ও অধিকার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে অপরিসীম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

 

ডা. হাফিজ ওয়ালিউল্লাহর কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে শুরু হওয়া এই দশম বর্ষপূর্তির অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন এমাস্ট এর প্রকাশিকা মিসেস মাহের আহমেদ, ড. মাশহিদ আনসারী, কলম্বান সেন্টারের খ্রিষ্টান ধর্মযাজক ফাদার প্যাট্রিক ম্যাকলনারনি, ইহুদি ধর্মযাজক রাব্বি যালমান কাসটেল, প্রফেসর তালাল ইয়াসিন সহ অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন সংগঠন এবং সতন্ত্র গণমাধ্যমের প্রতিনিধিবৃন্দ।

এমাস্টের এ দশম বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে বিভিন্নমুখী গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন সংগঠন ও গণমাধ্যমকে এওয়ার্ড দেয়া হয়। এর মাঝে বাংলাদেশী কমিউনিটিতে ষোল বছরেরও অধিক সময়কাল ধরে নিরবিচ্ছিন্ন প্রকাশনার জন্য সিডনি থেকে প্রকাশিত একমাত্র বাংলা কমিউনিটি নিউজপেপার সুপ্রভাত সিডনিকে দেয়া হয় ইংক এন্ড ইমপ্যাক্ট এওয়ার্ড। সুপ্রভাত সিডনি টিমের পক্ষ থেকে এই ইংক এন্ড ইমপ্যাক্ট এওয়ার্ড গ্রহণ করেন পত্রিকাটির প্রধান সম্পাদক আবদুল্লাহ ইউসুফ শামীম।

এছাড়াও পত্রিকাটির পক্ষ থেকে সম্পাদক ফারুক আমিন এবং বিশেষ প্রতিনিধি এএনএম মাসুম এ বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে আমন্ত্রিত অতিথিদের জন্য বিভিন্ন জিনিসের নিলাম এবং নৈশভোজ সম্পন্ন হয়। বিগত বছরগুলোতে প্রকাশিত এমাস্টের বিভিন্ন উল্লেখযোগ্য ও বিশেষ সংখ্যা নিলামের সময় ২০১৮ সালে বাংলাদেশের স্বৈরশাসক ও ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনার অস্ট্রেলিয়া সফরের সময় তাকে নিয়ে প্রকাশিত রিপোর্ট সংবলিত সংখ্যাটিও নিলামে উঠে।

সম্প্রতি বাংলাদেশে জনগণের অভ্যুত্থানের পরিণতিতে ক্ষমতা র্পটপরিবর্তনের প্রেক্ষিতে এ সংখ্যাটিও নিলামের সময় অনেকের মাঝে আগ্রহ দেখা যায়। অনুষ্ঠানের আয়োজকরা নিলামে অর্জিত অর্থ ফিলিস্তিনের গাজায় শরণার্থীদের জন্য ব্যয় করার ঘোষণা দেন।

Read More

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked with *

সর্বশেষ পোস্ট

Advertising