728 x 90

অষ্ট্রেলিয়ার পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থা  (শেষ পর্ব)

আকাশপথ সামসুল ইসলাম টুকু:  অস্ট্রেলিয়ার পরিবহণ ও যোগাযোগ ব্যবস্থার মধ্যে আকাশপথই সবচেয়ে জনপ্রিয়,সস্তা, আরামদায়ক ও দ্রুততম ব্যবস্থা বলেই আমার মনে হয়। জানিনা অস্ট্রেলিয়ার রাষ্ট্রীয় মূল্যায়ন কি আছে। শুনলে বাংলাদেশের মানুষ অবাক হবেন যে অস্ট্রেলিয়ায় ৬১৩ বিমান বন্দর আছে। নিঃসন্দেহে সংখ্যাটি অনেক বড়। কারন বাংলাদেশে সব মিলিয়ে ৮ বিমান বন্দর। এরমধ্যে ৩ আন্তর্জাতিক ও ৫ অভ্যন্তরীণ

আকাশপথ

সামসুল ইসলাম টুকু:  অস্ট্রেলিয়ার পরিবহণ ও যোগাযোগ ব্যবস্থার মধ্যে আকাশপথই সবচেয়ে জনপ্রিয়,সস্তা, আরামদায়ক ও দ্রুততম ব্যবস্থা বলেই আমার মনে হয়। জানিনা অস্ট্রেলিয়ার রাষ্ট্রীয় মূল্যায়ন কি আছে। শুনলে বাংলাদেশের মানুষ অবাক হবেন যে অস্ট্রেলিয়ায় ৬১৩ বিমান বন্দর আছে। নিঃসন্দেহে সংখ্যাটি অনেক বড়। কারন বাংলাদেশে সব মিলিয়ে ৮ বিমান বন্দর। এরমধ্যে ৩ আন্তর্জাতিক ও ৫ অভ্যন্তরীণ বিমান বন্দর। বাংলাদেশের অভ্যন্তিরিন রুটে বিমান ভাড়া তুলনামুলকভাবে বে তাই বিমানকে জনপ্রিয় করে তোলা সম্ভব হয়নি। তবে অষ্ট্রেলিয়া তা করতে সক্ষম হয়েছে।

অস্ট্রেলিয়ার ৬১৩ বিমান বন্দরের মধ্যে রয়েছে আন্তর্জাতিক, অভ্যন্তরীণ, সেনাবাহিনীর ও ব্যক্তিগত।

এর মধ্যে ১৭৫ টি বাণিজ্যিক বিমান বন্দর। এগুলি যেমন যাত্রী পরিবহণ করে তেমনি পন্য পরিবহণ করে।তবে মূলত পন্য বহনকারীগুলিই  বাণিজ্যিক বিমান। এগুলোকে অপারেটিং বিমান বা কার্গো বিমান বলা হয়। এসব বাণিজ্যিক বিমান আমেরিকান ইউনাইটেড, ডেল্টা, ফেডেক্স,ইউপিএস, এবং সাউথ ওয়েষ্ট  এয়ার লাইন্স পরিচালনা করে থাকে। অস্ট্রেলিয়ার বিমান পৃথিবীর ২৩ দেশের ৩৪ আন্তর্জাতিক স্থান ও ৬১ দেশীয় স্থানে চলাচল করে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য দেশগুলো হচ্ছে নিউইয়র্ক, লসএঞ্জেলস, সিঙ্গাপুর, লন্ডন, টোকিও, হংকং, নিউজিল্যান্ড অকল্যান্ড প্রভৃতি।

ইংরেজি x ও z অক্ষর ছাড়া বাকি ২৪ ইংরেজি আদ্যক্ষর দিয়ে অস্ট্রেলিয়ার যত স্থানের নাম আছে সবগুলোতেই বিমান বন্দর রয়েছে। Mআদ্যক্ষর দিয়ে সর্বোচ্চ ৭৭ টি স্থানে এবং Uঅক্ষর দিয়ে সবচেয়ে  কম মাত্র ১ টি বিমানবন্দর আছে। ছোট বড় সব মিলিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় ১৩ হাজার ৭৫০টি বিমান রয়েছে। এরমধ্যে ৫ হাজার ৪০০ টি যুদ্ধ বিমান। প্রতিদিন গড় ফ্লাইটের সংখ্যা ৯৯ হাজার ৩৪০ টি। অষ্ট্রেলিয়ানরা ভ্রমণ করতে খুব ভালবাসে। যেমন পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে তেমনি দেশের অভ্যন্তরে বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে ভ্রমণ করে। বিশেষত ছুটির মৌসুমে তারা পরিবার পরিজন নিয়ে ভ্রমণ করে। এসময় বিমান কর্তৃপক্ষ বিমান ভাড়া বাড়িয়ে দেয়। তারপরেও তাদের ভ্রমণ বন্ধ থাকেনা। অস্ট্রেলিয়ায় মোট ১৩ আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর আছে। এগুলো হচ্ছে সিডনী, ব্রিসবেন মেলবোর্ন, পার্থ, অ্যাডিলেড, ক্যানবেরা, কেয়ার্ন্স, ডারউইন, গোল্ডকষ্ট, হোবার্ট, টাউনসিল, নিউক্যাসেল ও ল্যাঞ্চেনস্টোন। তবে প্রথম ৫ টিকেই মুল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। যদিও বাকি ৮ বিমান বন্দরেও আন্তর্জাতিক সুযোগ সুবিধা রয়েছে। দেখা যাক উল্লিখিত ৫ বিমান বন্দরের সক্ষমতা কেমন।

*সিডনী বিমান বন্দর। যাকে বলা হয় কিংস্ফোর্ড স্মিথ বিমান বন্দর।এখানে টার্মিনাল ও রানওয়ে সংখ্যা ৩ করে। এখানে ৯০০ ফ্লাইট প্রতিদিন ওঠানামা করে।অর্থাৎ প্রতি  দেড় মিনিটে একটি করে ফ্লাইট উড়ে। প্রতিদিন যাত্রী সংখ্যা হয় গড়ে দেড় লাখ। তথা প্রতিটি বিমানে যাত্রী সংখ্যা হয় গড়ে ১৬৬ জন।

*মেলবোর্ন বিমান বন্দর। যাকে বলা হয় তুল্লারামিন বিমান বন্দর। এখানে.২ টার্মিনাল রয়েছে। এখানে ৩৩ অভ্যন্তরীণ ও একাধিক আন্তর্জাতিক গন্তব্যে বিমান যাতায়াত করে। এখানে যাত্রী সংখ্যা হয় প্রতিদিন প্রায় ৬৫ হাজার।

* ব্রিসবেন বিমান বন্দর। এখান থেকে প্রতিদিন ২ টার্মিনাল ও ২রানওয়ের মাধ্যমে ৫০ অভ্যন্তরীণ ও ২৯ আন্তর্জাতিক বিমান ওঠানামা করে। প্রতিদিন ৭৭ টি ফ্লাইটে ৫৫ হাজার মানুষ যাতায়াত করে।

* পার্থ বিমান বন্দর। এখানে ৫ টার্মিনাল ও রানওয়ে আছে।এখান থেকে প্রচুর খনিজ মালামাল পরিবাহিত হয় বলে টার্মিনালের সংখ্যা বেশী। এখান থেকে প্রতিদিন  ৭০টি ফ্লাইটে ৩৫ হাজার মানুষ যাতায়াত করে।

* অ্যাডিলেড বিমান বন্দর। এখানে ১টি টার্মিনালের মাধ্যমে ২৯০ টি ফ্লাইটে ২১ হাজার মানুষ যাতায়াত করে।উল্লিখিত হিসাব থেকে বলা যায় এই ৫টি আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ২ লাখ ১৫ হাজার মানুষ দেশের অভ্যন্তরে ও দেশের বাইরে যাতায়াত করে। সুতরাং বছরে ৭ কোটি ৫৬ লাখ মানুষ অষ্ট্রেলিয়া থেকে বিমানে যাতায়াত করে। এর মধ্যে শুধু সিডনী বিমান বন্দর দিয়েই ৪কোটি ৩০ লাখ  মানুষ প্রতি বছর যাতায়াত করে।

অষ্ট্রেলিয়ায় প্রথম বিমান সংস্থা হচ্ছে Quantas.।১৯২০ সালে কুইন্সল্যান্ড রাজ্যে নর্দারন টেরিটরি এরিয়েল সার্ভিস লিমিটেড এই যাত্রা শুরু করে। সিডনী বিমান বন্দরটি সিডনী মুল শহর থেকে প্রায় ৮ কিঃমিঃ দূরে মস্কট শহরতলিতে নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যের বটানি বের পাশে অবস্থিত। ৯০৭ হেক্টর এলাকায় এই বিমান বন্দরটি গড়ে উঠে।বর্তমানে এই বন্দর ৪৬ টি অভ্যন্তরীণ এবং ৪৩ টি আন্তর্জাতিক গন্তব্যে পরিষেবা দেয়। প্রতি বছর এই বিমান বন্দরে  ফ্লাইটের সংখ্যা প্রায় ৩ লাখ ২৪ হাজার। সামগ্রিকভাবে বিশ্বের ২০ তম বিমান বন্দর হিসেবে পরিচিত। অস্ট্রেলিয়ার বিমান চালক কিংসফোর্ড স্মিথ এর নামানুসারে এই বন্দরটির নামকরণ করা হয়। ১৯৩৩ সালে এর রানওয়ে নির্মিত হয়।

যে বক্তব্য দিয়ে লেখাটি শুরু করেছিলাম এবার সেই প্রসঙ্গে ফিরে আসি। বিমানে ভ্রমণ যে আরামদায়ক ও দ্রুততম সে ব্যাপারে বাখ্যা দেওয়ার প্রয়োজন নেই। কিন্তু তা সস্তা ও জনপ্রিয় কিনা সে ব্যাপারে ব্যাখ্যা প্রয়োজন। অস্ট্রেলিয়ার অভ্যন্তরীণ গুরুত্বপূর্ণ স্থান গুলোর দূরত্ব অনেক বেশী। সুতরাং ওই সকল স্থানে যাতায়াতের জন্য রেলপথ ও সড়কপথে প্রচুর সময় লাগে  এবং ভাড়াও অনেক বেশী। প্রায় ৩/৪ গুন। যা নিয়ে তৃতীয় পর্বে আলোচনা করেছি। ফলে সকলেই আকাশপথের উপর নির্ভরশীল। তাই বলে রেলপথ ও সড়কপথ ব্যবহার হয়না তা নয়। তবে দীর্ঘ পথে নয়। ফলে সময় ও অর্থের দিক থেকে আকাশপথই জনপ্রিয়। বরং দেখা যাক অস্ট্রেলিয়ার অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটগুলোর ভাড়া কত তার কয়েকটা উদাহরণ তুলে ধরি। অভ্যন্তরীণ রুটে সবচেয়ে দূরতম রুট হচ্ছে পার্থ থেকে কারাত্থা, পার্থ থেকে সিডনী,পার্থ থেকে এডিলেড, সিডনী থেকে ডারউইন। এ রুটগুলোর দূরত্ব কম বেশী প্রায় ২ হাজার কিঃমিঃ। সময় লাগে ২/৩ ঘণ্টা। ভাড়া ৬০০ থেকে ৮০০ অস্ট্রেলিয়ান ডলার। তবে ছুটির মৌসুমে ভাড়া কিছু বেশী হয়। এদিকে ক্ষুদ্রতম রুট যেমন এভন থেকে সিডনীর দূরত্ব ৭৫৬ কি;মিঃ ভাড়া ১০২ ডলার, ব্যালিনা থেকে সিডনী ৬১২ কি;মিঃ ভাড়া ৯০ ডলার। সময় লাগে সর্বোচ্চ এক থেকে দেড় ঘণ্টা। অস্ট্রেলিয়ায় এমন অভ্যন্তরীণ রুটআছে অন্ততপক্ষে ৩০ টি।

আমি ও আমার গিন্নি বাংলাদেশ থেকে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের বিমানে সিডনী গিয়েছিলাম এবং ৭৫ দিন পরে একই এয়ারলাইন্সে ফিরে এসেছিলাম। মাঝপথে সিঙ্গাপুর বিমান বন্দরে যাওয়ার সময় ৪ ঘন্টা এবং ফেরার সময় ২ ঘন্টার বিরতি বা ট্রঞ্জিট ছিল। ফলে সিঙ্গাপুর ও সিডনী  বিমান বন্দরের ভেতরটা দেখেছি এবং লাউঞ্জে বসে বিমান বন্দরের বহিরাংশ (আংশিক) দেখেছি। সুতরাং এ দুটি বিমান বন্দরের অবস্থা ও বিমানের যাত্রী সেবা সম্পর্কে কিছু বলা যায় যেটুকু আমার চোখে পড়েছে এবং অনুভব করেছি। যাওয়ার সময় ভেবেছিলাম বিমানে বাঙালি পাবো কিনা, পাশের যাত্রী এবং বিমানবালাদের সাথে কথা বিনিময় করতে পারবো কিনা,তারা কিবা খাবার দেবে, তা খেতে পারবোতো ইত্যাদি নানা চিন্তায় ছিলাম। কিন্তু দেখা গেল কোনো সমস্যাই হলোনা। ঢাকা বিমান বন্দরে পৌঁছালে আমার এক আত্মীয় বিমান বন্দরের প্রশাসনিক কর্মকর্তার নির্দেশে জনৈক জাকির হোসেন আমাদের লাগেজ নিয়ে ইমিগ্রেসনের কাজ দ্রুত  সম্পন্ন করে দিল। আমাদের লাইনে দাঁড়াতে হলোনা। এরপর দেখা হলো আসিফের সাথে। সে আমার ছেলের সহপাঠী, প্রকৌশলী। সেও সিডনিতে চাকুরি করে। সেদিন সে বাংলাদেশ থেকে কর্মস্থলে ফিরছিল। তাকে আমার ছেলে বলেছি আমাদের সহযোগিতা করার জন্য। বিমানে উঠার পূর্বে আসিফের সাথে চেকিং এর জন্য লাইনে দাঁড়ালাম। সেখানে পকেটের ও হ্যান্ড ব্যাগে রক্ষিত জিনিস পত্র এমনকি জুতা স্টকিন খুলে  বের করে তাদের বক্সে রেখে চেকিং করাতে হয়। কিন্তু এত দ্রুত যে জিনষ পত্র ফেলে যাবার সমুহ সম্ভাবনা থাকে। বিষয়টা ঢাকা বিমান কর্তৃপক্ষ একটু সময় নিয়ে করতে পারে। কিন্তু যাত্রীদের ব্যতিব্যস্ত রাখার মানসিকতা কাজ করে। চেকিং শেষে বিমানে উঠলাম। তিন চেয়ার বিশিষ্ট আমাদের আসনের একটিতে একজন বাঙালি পড়েছিল। সে বিমানের দেওয়া কম্বল ও বালিশ নিয়ে মাথা নিচু করে শুয়ে থাকলো কিন্তু আমাদের সাথে কথা বললোনা।তবে বুঝলাম সে সিঙ্গাপুরে নামবে। দেখলাম বিমানবালারা সিঙ্গাপুরের। তাদের বিনয়ী আচরণ ও সহযোগিতা ভালোই লাগলো। প্রায় একই ধরনের খাবার পরিবেশন করা হলো। সিঙ্গাপুর বিমান বন্দরে নামার সময় বিমানবালারা আমাকে হুইল চেয়ার দিতে চাইলো কিন্তু আমি প্রত্যাখান করলাম। তাই আসিফের পেছনে আমরা দুজন চলমান রাস্তায় অতি সাবধানে দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে সিডনীগামী লাউঞ্জে এলাম। ৪ ঘণ্টা বিরতির পর সিডনীগামী বিমানে উঠলাম। দেখলাম আমাদের আসনে এক অপরিচিত যুবক। তার সাথে কথা বলে জানতে পারলাম তার নাম শাহাদাত। সে আমাদের মহল্লা ইসলামপুরে ভাড়া থাকে, আসল বাড়ী মহিপুরে।সে সিডনী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজ্ঞানের কোনো বিষয়ে  পিএইচডি করছে। ভালই হলো তার সাথে গল্প করতে করতে ৮ ঘন্টা পেরিয়ে গেল। সিডনী পৌছে গেলাম। বিমান থেকে নেমে শাহাদাত আমাদের পথ দেখিয়ে ইমিগ্রসনে নিয়ে গেল সাথে আসিফও ছিল। শাহাদাত আমাদের লাগেজ নিতে সাহায্য করলো ঘূর্ণায়মান ফিতা থেকে। বিমান বন্দর থেকে বের হলে বেশ ঠান্ডা অনুভব করলাম। সাথে সাথে গরম কাপড় পরে নিলাম। আমার ছেলে সপ্নের সাথে দেখা হলো। আমাদের লাগেজগুলো সে তার  কারের পেছনে নিয়ে প্রায় এক ঘন্টার বেশী সময় গাড়ী চালিয়ে  তার মিন্টোস্থ বসভবনে পৌঁছালো।

যাইহোক দুটি বিমান বন্দরের ভেতরটা পুরোপিরি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। কোথাও কোনো কাগজের টুকরো চোখে পড়লোনা। বাথরুম টয়লেট ঝকঝকে তকতকে। যাত্রীদের আবর্জনা ফেলার জন্য বিভিন্নস্থানে ঢাকনা যুক্ত ডাস্টবিন রয়েছে। তারপরেও পরিচ্ছন্ন কর্মীরা প্রতিনিয়ত পরিচ্ছন্ন করার কাজে ব্যস্ত রয়েছে।বিভিন্নস্থানে রয়েছে পানির সুব্যবস্থা। যাত্রীদের বিভিন্ন টার্মিনালে যাবার পথ দেখাচ্ছে টার্মিনাল কর্মীরা। অসুস্থ ও সিনিয়র সিটিজেনদের হুইল চেয়ারে করে বিভিন্ন টার্মিনালে পৌঁছে দিচ্ছে টার্মিনাল কর্মীরা যাত্রীরা যেন বিব্রত বোধ না করে তার সকল ব্যবস্থা করে রেখেছে  টার্মিনাল কর্তৃপক্ষ।ইমিগ্রেশনে অহেতুক কোনো হয়রানি নেই। নেই অতিকথা। যাত্রীরাও সুশৃঙ্খল। বিভিন্ন এয়ারলাইন্স এর পাইলট  বিমানবালাদেরও সফর শেষে ইমিগ্রেশনে দাঁড়াতে হয়। তবে তাদের লাইন  ভিন্ন। বিমানের খুবই অপ্রশস্ত রাস্তা দিয়ে ছোট ট্রলিতে প্রায় ২/৩ শ’ যাত্রীর খাবার পৌঁছে দিচ্ছে দুজন পুরুষ ও দুজন মহিলা বিমামবালা । কোনো সমস্যা হয়না। এজন্য তাদের প্রশংসা করতেই হয়। খাবার পরিবেশনের পূর্বেই তারা যাত্রীদের পছন্দ জেনে নেয় এবং সেইমত খাবার পরিবেশন করে।অষ্ট্রেলিয়া যাওয়ার সময় কোনো বিমান বন্দরই ভালভাবে দেখা সম্ভব হয়নি আমার মানসিক অস্থিরতার কারণে। তবে ফেরার সময় দেখলাম সিডনী বিমান বন্দর। ইমিগ্রেসন শেষে সিঙ্গাপুরগামী টার্মিনালের দৃশ্য দেখলাম লাউঞ্জের জানালা  দিয়ে। বেশকিছু বিমান নির্দিষ্ট রুটে  যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে, কিছু বিমান উড়ে যাচ্ছে। সিঙ্গাপুরে এসে  কিছু পথ চলমান রাস্তায়  এসে একটি ট্রেনে  ঊঠলাম। যাকে বলা হয় উড়ন্ত ট্রেন। প্রায় তিনতলা উপরে দিয়ে  ট্রেনটি চলাচল করে। প্রায় ২ মাইল আসর পর এক স্থানে নামিয়ে দিল। সেখান থেকে একটি ছোট খোলা জীপে করে আমাদের পৌছে দিল ঢাকাগামী টার্মিনালে। সবকিছু যেন মন্ত্রের মতই সম্পন্ন হয়ে গেল কয়েক মিনিটের মধ্যে অত্যন্ত সুশৃঙ্খল্ভাবে। রাতের বেলায় ঝকমকে বৈদ্যুতিক আলোয় এই বিমান বন্দরের বিশালত্ব দেখে স্তম্ভিত হলাম। ৯.৭ বর্গ মাইল এলাকা জুড়ে বিমান বন্দর। সিঙ্গাপুর থেকে প্রায় ২৪ কিঃমিঃ দূরে চেঙ্গি নামক স্থানে এই বন্দরটি অবস্থিত। তাই এটাকে চেঙ্গি বিমান বন্দর বলা হয়। বিশ্বের প্রথম ১০ টি বৃহৎ বিমান বন্দরের মধ্যে সিঙ্গাপুর বিমান বন্দর  অন্যতম ।

Read More

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked with *

সর্বশেষ পোস্ট

Advertising