ফ্যাসিবাদের দুর্গ যেন আজ জ্ঞানের দুর্গ

এম,এ,ইউসুফ শামীম: আয়না ঘর থেকে পাঠাগার- পাঠাগার এর নাম শামসুল হক ভূইয়া স্মৃতি পাঠাগার যা বেশ কয়েকদিন আগেও যাত্রাবাড়ী কেন্দ্রীয় পাঠাগার নামে পরিচিত ছিল। পাঠাগারটি প্রতিষ্ঠা লাভ করে ২০০১ সনে সে সময় পাঠাগারের নাম দেওয়া হয়েছিল শামসুল হক ভূঁইয়া স্মৃতি পাঠাগার।

শামসুল হক ভূঁইয়া তিনি ছিলেন এলাকার একজন সম্মানিত মুরুব্বী এবং পাঠাগারটি স্থাপিত হয় তার বাড়ির খুব সন্নিকটে। প্রতিষ্ঠার কিছুদিন আগেই তিনি পরলোক গমন করেন তার সম্মানার্থে পাঠাগারের এই নামকরণ করা হয়। পাঠাগার তৈরিতে তার পরিবারের তেমন কোন সংশ্লিষ্টতাই ছিল না। ২০০১ সালে প্রতিষ্ঠা লাভের পর বেশ কিছুদিন পাঠাগারটি ভালোই চলছিল । পাঠাগারের মহৎ উদ্দেশ্য গুলো প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে এমন কি এখানে কুরআন শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছিল।

তার বেশ কিছুদিন পর সে সময়কালীন ক্ষমতাসীন দল পাঠাগারটি দখল করে নেয় এবং তারা দলীয় অফিসে বা ক্লাবে রূপান্তর করে।

তার কয়েক বছর পর ক্ষমতার পালা বদল হয় এবং নতুন ক্ষমতাসীন দল এই অফিসে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং পুরোপুরি পুড়িয়ে ফেলে, পাঠাগারে যে গুটিকয়েক বই অবশিষ্ট ছিল তাও তারা রাস্তায় সকলের সম্মুখে পুড়িয়ে ফেলে।

তারপর পাঠাগারটি রূপ ন্যায় ফ্যাসিবাদের দুর্গ হিসেবে যা ফ্যাসিস্টের যাত্রাবাড়ী কেন্দ্রীয় কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হয়। ফ্যাসিবাদের যতগুলো আচরণ রয়েছে তা এখান থেকেই মাইকে ঘোষণার মাধ্যমে আঞ্জাম দেয়া হতো চাঁদাবাজি, অর্থ বণ্টন, জবরদখল এবং সকল সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণ এখান থেকেই করা হতো।এভাবেই কেটে যায় দীর্ঘ ১৭টি  বছর !

২০২৪ এর জুলাই – আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পরবর্তী সময় জাতি এক নতুন দিশার দিকে অগ্রসর হতে থাকে তারই ধারাবাহিগতায় যাত্রাবাড়ীর সাধারণ ছাত্র সমাজ পাঠাগারটি পূর্ণ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ৮ আগস্ট পাঠাগারটিকে পরিচ্ছন্নতার মাধ্যমে তাদের যাত্রা শুরু করে। ইতোমধ্যেই চার এবং পাঁচ আগস্ট তৃতীয়বারের মতো আগুন লাগিয়ে দিয়েছিলো ছাত্রজনতা।

ব্যক্তি উন্নয়ন ও সমাজ পরিবর্তনে পাঠাগারের ভূমিকা অনস্বীকার্য যা আমাদের সকলেরই জানা। যাত্রাবাড়ী সাধারণ ছাত্র সমাজ বিশ্বাস করে এই পাঠাগারটি একটি মডেল পাঠাগার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে এবং যাত্রাবাড়ীর বুকে উজ্জ্বল নক্ষত্রের ভূমিকায় কাজ করবে। ইতিমধ্যে পাঠাগারটি তার পূর্ণরূপ ফিরে পেতে শুরু করেছে এবং আরো উন্নয়ন কাজ ও বই সংগ্রহ চালু আছে।

এখানে সন্তুষ্টির বিষয় এই যে, যে স্থান হতে একসময় দখলদারিত্ব চাঁদাবাজি , ফ্যাসিজমের কাজগুলোকে আঞ্জাম দেয়া হতো সেখান থেকে আজ জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে পড়ছে। অবসরে মুরুব্বিদের একটি বসার স্থান হয়েছে যেখানে তাদের জন্য নিয়মিত ৪ টি পত্রিকা রাখা হয়। উন্নত সমাজ গঠনে নানা কর্মকাণ্ড সম্পন্ন হচ্ছে এবং সমাজ উন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে এই পাঠাগার।

এখানে উল্লেখ্য, অস্ট্রেলিয়া থেকে প্রকাশিত একমাত্র বাংলা পত্রিকা সুপ্রভাত সিডনির  প্রধান সম্পাদক  আনুষ্ঠানিকভাবে গত ৭ ডিসেম্বর ২০২৪ উদ্বোধন করেন (https://suprovatsydney.com.au/2024/12/08/a-library-the-main-tool-of-nation-building/) ।

এ ধরনের একটি মহতী কাজে সহযোগিতা করার জন্য সকলের প্রতি উদাত্ত আহ্বান রইল। পাঠাগারের কর্মকর্তাদের সাথে ইমেইলে যোগাযোগ করতে পারেন : bibirbagichalibrary@gmail.com

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *