
শাহানাজ শিউলী: সু- সন্তান গঠনে পরিবার একটি মূল চাবিকাঠি। যে কোনো পরিবারের পরিবেশ মানুষ, কৃষ্টি এই সব কিছুর মধ্যে শিশুকাল থেকেই মায়ের আদরে পুষ্টি হতে থাকে।মায়ের সাথে যেমন সন্তানের রয়েছে নাড়ীর সম্পর্ক তেমনি রয়েছে পরিবারের সম্পর্ক।শিশুর দেহ, মন, বিশ্বাস, আদর্শ সবকিছুই পরিবারের দ্বারা পুষ্ট হয়। ফলে পরিবারের জন্য যে ভালোবাসা সৃষ্টি হয় তা অকৃত্রিম কৃতজ্ঞতার বহিঃপ্রকাশ এবং কর্তব্য ও দায়িত্বের অনিবার্য দায়বদ্ধতা। পরিবার শিশুর প্রথম এবং প্রধান শিক্ষালয়।
একটি জাতির ভবিষ্যৎ নির্ভর করে শিশুদের উপর। সু-সন্তান অর্থাৎ নৈতিক, সুশিক্ষিত দায়িত্বশীল মানবিক মূল্যবোধ সম্পন্ন সন্তান কেবল করিবার নয় পুরো সমাজের জন্য আশীর্বাদ। একজন শিশুর চরিত্র ও মানসিকতার ভিত্তি যে পরিবেশে তৈরি হয় সেটি হল তার পারিবার।বিদ্যালয় ও সমাজ অবশ্যই শিক্ষার পথে সহায়ক কিন্তু পরিবারের প্রভাব সবচেয়ে গভীর ও স্থায়ী। এ কথা বিজ্ঞান, গবেষণা ও বাস্তব অভিজ্ঞতা দ্বারা প্রমাণিত।
পরিবার শিশুর জীবনের প্রথম ও প্রাথমিক শিক্ষা কেন্দ্র। জন্মের সুপার থেকেই শিশুর চোখে যে দৃশ্য ভাসে, কানে যে শব্দ আসে এবং যেসব আচরণ সে দেখে ও অনুকরণ করে তা পরিবার থেকেই আসে।
বাবা, মা ও পরিবারের সদস্যদের কথাবার্তা, আচরণ ও জীবনধারা থেকেই শিশু ভালো- মন্দের ধারণা পায়। পরিবারের ভালোবাসা ও স্নেহ শিশুর আত্মবিশ্বাস ও মানসিক স্থিতি গড়ে তোলে। যেহেতু শিশুরা অনুকরণ প্রিয় তাই পরিবারের সদস্যরা যদি সৎ, নীতিবান ও শৃঙ্খলা বদ্ধমান তাহলে শিশুরাও ঠিক তেমনি হতে শেখে।
পারিবারিক শিক্ষা একটি শিশুর জীবনের ভিত্তি স্থাপন করে। একটি সুন্দর, সুস্থ এবং দায়িত্বশীল প্রজন্ম তৈরির পেছনে পরিবারের ভূমিকা অপরিসীম। শুধু একাডেমিক সাফল্য নয়, বরং মানবিক মূল্যবোধ পরিবারের সঠিক দিকনির্দেশনা অপরিহার্য।
পরিবারের সাথে সন্তানের সুসম্পর্ক বিষয়ে বিভিন্ন দার্শনিকের মন্তব্য ঃ
অ্যারিস্টোটলের মতে, পরিবার হলো এমন এক প্রাথমিক সংগঠন যেখানে শিশুরা প্রথম সামাজিকীকরণ শেখে। শিশুদের নৈতিক ও বুদ্ধিভিত্তিক বিকাশের ভিত্তি তৈরি হয় এবং এটি রাষ্ট্রের টিকে থাকার জন্য অপরিহার্য। শিশুদের নিবিড় সম্পর্ক পরিবারের মধ্যে শুরু হয় যেখানে তারা ভালোবাসা,যত্ন এবং শৃঙ্খলা শেখে।
রুশোর মতে, পরিবার শিশুর জন্মগত গুণাবলী কে বিকশিত করার সুযোগ দেই এবং তাকে সমাজের একজন যোগ্য আদর্শ হিসেবে গড়ে তোলে। নৈতিকতা, সহানুভূতি এবং অপারের প্রতি শ্রদ্ধাবোধের মত বিষয়গুলো বই পড়ে শেখানো যায় না, ও গুলো পরিবারের সদস্যদের দৈনন্দিন আচরণ থেকে শিশু গ্রহণ করে। কারণ শিশুরা অনুকরণ প্রিয়।
জ্যাঁ-জ্যাক রুশোর মতে,সু- সন্তান গঠনে পরিবারের ভূমিকা কেবল ভরণপোষণের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয় বরং এটি একটি শিশুর মন, চরিত্র এবং ভবিষ্যৎ জীবনের ভিক্তি স্থাপন করে। পারিবারিক বন্ধন ভালোবাসা এবং সঠিক দিক নির্দেশনা একটি একজন দায়িত্বশীল এবং নীতিবান সদস্য হিসাবে গড়ে তুলতে সাহায্য করে যা একটি রাষ্ট্রের জন্য কবি অপরিহার্য।।
জন লক বলেছেন, শিশু যখন জন্ম নেয় তখন তার মন একটি সাদা কাগজের মত থাকে। এরপর তার জীবন পরিবেশ,পরিবারের অভিজ্ঞতা দিয়ে সেই কাগজ পূর্ণ হয়। এছাড়া তিনি আরো বলেছেন, শিশুদের মন হল একটি খালি স্লেট, যা পরিপূর্ণ হয় পরিবার দ্বারা।
সু-সন্তান গঠনে পারিবারিক শিক্ষার গুরুত্ব ঃ
* শিশুদের নৈতিক ও সামাজিক মূল্যবোধ পারিবারিক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
- শিশুরা তাদের প্রথম শিক্ষা বাবা -মায়ের আচরণ ও তাদের উপর গভীর প্রভাব ফেলে। শিশুদের আত্মবিশ্বাস,দায়িত্ববোধ, সহানুভূতি এবং মানসিক ও সামাজিক বিকাশে পরিবারের ভূমিকায় বেড়ে ওঠে।
- একজন শিশু সন্তান জন্মের পর প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা গ্রহণের পূর্বে ৪