ডা.ইমাম হোসেন ইকবাল: কুরআনে আল্লাহ তায়ালা প্রথম আদেশ করে বলেন “পড় তোমার প্রতিপালকের নামে, যিনি (সব কিছু) সৃষ্টি করেছেন”সূরা আলাক,আয়াত:০১), অথচ আজ আমরা মুসলমানজাতি পড়া বিমুখ ও পড়তে অনাগ্রহী, জ্ঞান আহরণ ও অর্জনে অনিহা ও উদাসীনতার চাদরে আবৃত এবং শয়তানের জালে বন্দী। জ্ঞান – বিজ্ঞান, আবিস্কার ও গবেষণায় মুসলমানগণ ছিল সেরা জাতি। ইসলামের সোনালী যুগে বিজ্ঞানের সব শাখায় মুসলমানদের অবদান অবিস্মরণীয়। নতুন বছরের শুরুতেই আমাদের সোনালী অতীত ফিরিয়ে আনতে জ্ঞান অর্জনে অগ্রনি হয়ে নিজের ঈমান, আমল,গবেষণা ও আবিস্কার ইত্যাদির মানোন্নয়ন যাঁর যাঁর জায়গা থেকে যতটুকু সচেষ্ট হওয়া সম্ভব ততটুকুনই চলমান করা একান্ত কর্তব্য বলে মনে করি। তাই জ্ঞান বিষয়ক কিছু হাদিস ও কুরআনের বক্তব্য আপনাদের সম্মুখে দাওয়াতি কাজের নিয়তে তুলে ধরলাম।
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, একদা আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জনসমক্ষে উপবিষ্ট ছিলেন, এমন সময় তাঁর নিকট জনৈক ব্যক্তি এসে জিজ্ঞেস করলেন ‘ঈমান কি?’ তিনি বললেনঃ ‘ঈমান হল, আপনি বিশ্বাস রাখবেন আল্লাহর প্রতি, তাঁর ফেরেশতাগণের প্রতি, (ক্বিয়ামাতের দিন) তাঁর সঙ্গে সাক্ষাতের প্রতি এবং তাঁর রসূলগণের প্রতি। আপনি আরো বিশ্বাস রাখবেন পুনরুত্থানের প্রতি।’ তিনি জিজ্ঞেস করলেন, ‘ইসলাম কি?’ তিনি বললেনঃ ‘ইসলাম হল, আপনি আল্লাহর ইবাদত করবেন এবং তাঁর সাথে অংশীদার স্থাপন করবেন না, সালাত প্রতিষ্ঠা করবেন, ফরয যাকাত আদায় করবেন এবং রমযান-এর সিয়ামব্রত পালন করবেন।’ ঐ ব্যক্তি জিজ্ঞেস করলেন, ‘ইহসান কি?’ তিনি বললেনঃ ‘আপনি এমনভাবে আল্লাহর ‘ইবাদত করবেন যেন আপনি তাঁকে দেখছেন, আর যদি আপনি তাঁকে দেখতে না পান তবে (মনে করবেন) তিনি আপনাকে দেখছেন।’ ঐ ব্যক্তি জিজ্ঞেস করলেন, ‘কিয়ামত কবে?’ তিনি বললেনঃ ‘এ ব্যাপারে যাকে জিজ্ঞেস করা হচ্ছে, তিনি জিজ্ঞেসকারী অপেক্ষা অধিক জ্ঞাত নন। তবে আমি আপনাকে ক্বিয়ামাতের আলামতসমূহ বলে দিচ্ছিঃ বাঁদী যখন তার প্রভুকে প্রসব করবে এবং উটের নগণ্য রাখালেরা যখন বড় বড় অট্টালিকা নির্মাণে প্রতিযোগিতা করবে। (ক্বিয়ামাতের জ্ঞান ) সেই পাঁচটি জিনিসের অন্তর্ভুক্ত, যা আল্লাহ ব্যতীত কেউ জানে না।’ অতঃপর আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এই আয়াতটি শেষ পর্যন্ত তিলাওয়াত করলেনঃ ‘কিয়ামাতের জ্ঞান কেবল আল্লাহরই নিকট।’ (সূরা লুক্বমান ৩১/৩৪)
এরপর ঐ ব্যক্তি চলে গেলে তিনি বললেনঃ ‘তোমরা তাকে ফিরিয়ে আন।’ তারা কিছুই দেখতে পেল না। তখন তিনি বললেন, ‘ইনি জিবরীল (‘আঃ) ; লোকদেরকে তাদের দ্বীন শেখাতে এসেছিলেন।’ আবূ ‘আবদুল্লাহ বুখারী (রহঃ) বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এসব বিষয়কে ঈমানের অন্তর্ভুক্ত করেছেন।(সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৫০)
হুমায়দ ইব্নু ‘আবদুর রহমান (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেনঃ আমি মু’আবিয়াহ (রাঃ)-কে খুৎবায় বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি, আল্লাহ যার মঙ্গল চান, তাকে দ্বীনের ‘ইল্ম দান করেন। আমি তো বিতরণকারী মাত্র, আল্লাহই ( জ্ঞান ) দাতা। সর্বদাই এ উম্মাত কিয়ামাত পর্যন্ত আল্লাহর হুকুমের উপর কায়িম থাকবে, বিরোধিতাকারীরা তাদের কোন ক্ষতি করতে পারবে না। (সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৭১)
ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একবার আমাকে জাপটে ধরে বললেন, ‘হে আল্লাহ! আপনি তাকে কিতাবের (কুরআন) জ্ঞান দান করুন।’(সহীহ্ বুখারী, হাদিস নং ৭৫)
আল কুরআনে জ্ঞান অর্জনের গুরুত্ব :
ইহুদী ও খৃস্টানরা কখনো তোমার ওপর খুশী হবে না, হ্যাঁ, তুমি যদি (কখনো) তাদের দলের অনুসরণ করতে শুরু করো (তখনই এরা খুশী হবে), তুমি তাদের বলে দাও, আল্লাহ তায়ালার হেদায়াতই হচ্ছে একমাত্র পথ; (সাবধান,) তোমার কাছে সঠিক জ্ঞান আসার পরও যদি তুমি তাদের ইচ্ছানুসারে চলতে থাকো, তাহলে আল্লাহ তায়ালা ছাড়া তুমি কোনো বন্ধু ও সাহায্যকারী পাবে না।(আল-বাক্বারা:১২০)
যাদের ইতিপূর্বে কিতাব দেয়া হয়েছে তাদের সামনে যদি তুমি (দুনিয়ার) সব কয়টি প্রমাণও এনে হাযির করো, (তারপরও) এরা তোমার কেবলার অনুসরণ করবে না, আর (এর পর) তুমিও তাদের কেবলার অনুসরণকারী হতে পারো না, (তাছাড়া) এদের এক দলও তো আরেক দলের কেবলার অনুসরণ করে না; আমার পক্ষ থেকে এ জ্ঞান তোমাদের কাছে পৌঁছার পর তুমি যদি তাদের ইচ্ছা আকাংখার অনুসরণ করো, তাহলে অবশ্যই তুমি যালেমদের দলে শামিল হয়ে যাবে।(আল-বাক্বারা:১৪৫)
(শয়তানের কাজ হচ্ছে,) সে তোমাদের (সব সময়) পাপ ও অশ্লীল কাজের আদেশ দেয়, যাতে করে আল্লাহ তায়ালার নামে তোমরা এমন সব কথা বলতে শুরু করো যা সম্পর্কে তোমরা কিছুই জানো না।(আল-বাক্বারা:১৬৯)
তাদের যখন বলা হয়, আল্লাহ্ তায়ালা যা কিছু নাযিল করেছেন তোমরা তা মেনে চলো, তারা বলে, আমরা তো শুধু সে পথেরই অনুসরণ করবো যে পথের ওপর আমরা আমাদের বাপ দাদাদের পেয়েছি; তাদের বাপ-দাদারা যদি (এ ব্যাপারে) কোনো জ্ঞান বুদ্ধির পরিচয় নাও দিয়ে থাকে, কিংবা তারা যদি হেদায়াত নাও পেয়ে থাকে (তবুও কি তারা তাদের অনুসরণ করবে)?(আল-বাক্বারা:১৭০)
নিসন্দেহে (মানুষের) জীবন বিধান হিসেবে আল্লাহ তায়ালার কাছে ইসলামই একমাত্র (গ্রহণযোগ্য) ব্যবস্থা। যাদের আল্লাহর পক্ষ থেকে কেতাব দেয়া হয়েছিলো, তারা (এ জীবন বিধান থেকে বিচ্যুত হয়ে) নিজেরা একে অপরের প্রতি বিদ্বেষ ও হিংসার বশবর্তী হয়ে (বিভিন্ন দলে উপদলে বিভক্ত হয়ে) মতানৈক্যে লিপ্ত হয়ে পড়েছিলো, (তাও আবার) তাদের কাছে (আল্লাহর পক্ষ থেকে) সঠিক জ্ঞান আসার পর। যে ব্যক্তি আল্লাহর বিধান অস্বীকার করবে (তার জানা উচিত), অবশ্যই আল্লাহ তায়ালা দ্রুত হিসাব গ্রহণকারী।(আলে-ইমরান:১৯)
এ বিষয়ে আল্লাহর কাছ থেকে (সঠিক) জ্ঞান আসার পরও যদি কেউ তোমার সাথে (খামাখা) ঝগড়া-বিবাদ ও তর্ক করতে চায় তাহলে তুমি তাদের বলে দাও, এসো (আমরা সবাই এ ব্যাপারে একমত হই), আমরা আমাদের ছেলেদের ডাকবো এবং তোমাদের ছেলেদেরও ডাকবো, (একইভাবে আমরা ডাকবো) আমাদের নারীদের এবং তোমাদের নারীদেরও, (সাথে সাথে) আমরা আমাদের নিজেদের এবং তোমাদেরও (এক সাথে জড়ো হওয়ার জন্যে) ডাক দেবো, অতপর (সবাই এক জায়গায় জড়ো হলে) আমরা বিনীতভাবে দোয়া করবো, (আমাদের মধ্যে) যে মিথ্যাবাদী তার ওপর আল্লাহর অভিশাপ বর্ষিত হোক। (আলে-ইমরান:৬১)
হ্যাঁ, এর কয়েকটি বিষয়ে তোমাদের (হয়তো) কিছু কিছু জানাশোনা ছিলো এবং সে বিষয়ে তো তোমরা তর্ক বিতর্কও করলে, কিন্তু যেসব বিষয়ে তোমাদের কোনো জ্ঞানই নেই সেসব বিষয়ে তোমরা বিতর্কে লিপ্ত হচ্ছো কেন? আল্লাহ তায়ালাই (সব কিছু) জানেন, তোমরা কিছুই জানো না,(-আলে-ইমরান:৬৬)
এতীমদের প্রতি লক্ষ্য রাখতে থাকবে যতোক্ষণ না তারা বিয়ের বয়স পর্যন্ত পৌঁছে, অতপর যদি তোমরা তাদের মধ্যে (সম্পদ পরিচালনার) যোগ্যতা অনুভব করতে পারো, তাহলে তাদের ধন-সম্পদ তাদের হাতেই তুলে দেবে এবং তাদের বড়ো হবার আগেই (তাড়াহুড়ো করে) তা হযম করে ফেলো না, (এতীমদের পৃষ্ঠপোষক) যদি সম্পদশালী হয় তাহলে সে যেন (এই বাড়াবাড়ি থেকে) বেঁচে থাকে (তবে হ্যাঁ), যদি সে (পৃষ্ঠপোষক) গরীব হয় তাহলে (সমাজের) প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী সে যেন তা থেকে (নিজের পারিশ্রমিক) গ্রহণ করে, যখন তোমরা তাদের ধন-সম্পদ তাদের ফিরিয়ে দেবে, তখন তাদের ওপর সাক্ষী রেখো, (যদিও) হিসাব গ্রহণের জন্যে আল্লাহ্ তায়ালাই যথেষ্ট! (আন্-নিসা:৬)
(এ পরিস্থিতিতে) যদি তোমার ওপর আল্লাহ তায়ালার অনুগ্রহ ও দয়া না থাকতো, তাহলে এদের একদল লোক তো তোমাকে (প্রায়) ভুল পথে পরিচালিত করেই ফেলেছিলো! যদিও তারা এই আচরণ দিয়ে তাদের নিজেদের ছাড়া অন্য কাউকেই পথভ্রষ্ট করতে পারছিলো না, (অবশ্য) তাদের এ (প্রতারণামুলক) কাজ দ্বারা তারা তোমার কোনোই ক্ষতি সাধন করতে সক্ষম হতো না! (কারণ) আল্লাহ তায়ালা তাঁর গ্রন্থ ও (সে গ্রন্থলব্ধ) কলা-কৌশল তোমার ওপর নাযিল করেছেন এবং তিনি তোমাকে এমন সব কিছুর জ্ঞান শিক্ষা দিয়েছেন, যা (আগে) তোমার জানা ছিলো না; তোমার ওপর আল্লাহ তায়ালার অনুগ্রহ ছিলো অনেক বড়ো!(আন্-নিসা:১১৩)
তাদের (এ মিথ্যা) উক্তি যে, আমরা অবশ্যই মারইয়ামের পুত্র ঈসাকে হত্যা করেছি, যিনি ছিলেন আল্লাহর রসূল, (যদিও আসল ঘটনা হচ্ছে) তারা কখনোই তাকে হত্যা করেনি, তারা তাকে শূলবিদ্ধও করেনি, (মূলত) তাদের কাছে (ধাঁধার কারণে) এমনি একটা কিছু মনে হয়েছিলো; (তাদের মাঝে) যারা (সঠিক ঘটনা না জানার কারণে) তার ব্যাপারে মতবিরোধ করেছিলো, তারাও (এতে করে) সন্দেহে পড়ে গেলো, এ ব্যাপারে তাদের অনুমানের অনুসরণ করা ছাড়া সঠিক কোনো জ্ঞানই ছিলো না, (তবে) এটুকু নিশ্চিত, তারা তাকে হত্যা করেনি।
বরং (আসল ঘটনা ছিলো,) আল্লাহ তায়ালা তাকে তাঁর নিজের কাছে তুলে নিয়েছেন; আল্লাহ তায়ালা মহাপরাক্রমশালী ও মহাপ্রজ্ঞাময়। (কাউকে উঠিয়ে নেয়া তার কাছে মোটেই কঠিন কিছু নয়।)(আন্-নিসা:১৫৭,১৫৮)
যেসব মানুষ আল্লাহ তায়ালার ওপর ঈমান এনেছে এবং ভালো কাজ করেছে, (সেদিন) তিনি তাদের এর জন্যে পুরোপুরি পুরস্কার দেবেন, আল্লাহ তায়ালা তাঁর একান্ত অনুগ্রহ থেকে তাদের (পাওনা) আরো বাড়িয়ে দেবেন, অপরদিকে যারা আল্লাহ তায়ালার বিধান মেনে নেয়া লজ্জাজনক কিছু মনে করলো এবং অহংকার করলো, তাদের (সবাইকেই) আল্লাহ তায়ালা কঠোর শাস্তি দান করবেন, (সেদিন) তারা আল্লাহ ছাড়া দ্বিতীয় কোনো অভিভাবক ও সাহায্যকারী পাবে না।(-আন্-নিসা:১৭৩)
যখন এদের বলা হয়, আল্লাহ তায়ালা যা কিছু নাযিল করেছেন তোমরা সেদিকে এসো, (এসো তাঁর) রসুলের দিকে, (তখন) তারা বলে, আমরা আমাদের বাপ-দাদাদের যে বিধানের ওপর পেয়েছি তা-ই আমাদের জন্যে যথষ্টে; যদিও তাদের বাপ-দাদারা (সত্য-মিথ্যা সম্পর্কে) কিছুই জানতো না এবং তারা হেদায়াতের পথেও চলতো না।
হে ঈমানদার লোকেরা, তোমাদের নিজেদের দায়িত্ব তোমাদের নিজেদের ওপর, অন্য (কোনো) ব্যক্তি যদি গোমরাহ হয়ে গিয়ে থাকে তাহলে সে পথভ্রষ্ট ব্যক্তি তোমাদের কোনো ক্ষতি সাধন করতে পারবে না, যতোক্ষণ পর্যন্ত তোমরা নিজেরা সঠিক পথের ওপর চলতে থাকবে; তোমাদের ফেরার জায়গা (কিন্তু) আল্লাহর দিকেই, অতপর আল্লাহ তায়ালা তোমাদের (সেদিন) বলে দেবেন তোমরা কে কী করছিলে! (আল-মায়েদা:১০৪-১০৫)
যেদিন আল্লাহ তায়ালা সকল রসুলকে একত্রিত করে জিজ্ঞেস করবেন, তোমাদের (দাওয়াতের প্রতি মানুষদের পক্ষ থেকে) কিভাবে সাড়া দেয়া হয়েছিলো; তারা বলবে, আমরা তো (তার) কিছুই জানি না; যাবতীয় গায়বের বিষয়ে তুমিই পরিজ্ঞাত। (আল-মায়েদা:১০৯)
(এর পরই) তার জাতির লোকেরা তার সাথে (আল্লাহ তায়ালার ব্যাপারে) বিতর্ক শুরু করে দিলো; (জবাবে) সে বললো, তোমরা কি আমার সাথে স্বয়ং (কুল মাখলুকাতের মালিক) আল্লাহ তায়ালার ব্যাপারে তর্ক করছো, অথচ তিনিই আমাকে সঠিক পথের দিশা দিয়েছেন; আমি (এখন আর) তোমাদের (মাবুদদের) ডরাই না- যাদের তোমরা আল্লাহ তায়ালার (কাজে) অংশীদার (মনে) করো । অবশ্য আমার মালিক যদি অন্য কিছু চান (সেটা আলাদা কথা); আমার মালিকের জ্ঞান সব কিছুর ওপর পরিব্যাপ্ত; (এরপরও) কি তোমরা সতর্ক হবে না?(আল-আনয়াম:৮০)
অচিরেই এ মুশরিক লোকগুলো বলতে শুরু করবে, যদি আল্লাহ তায়ালা চাইতেন তাহলে আমরা ও আমাদের পূর্বপুরুষরা তো শিরক করতাম না, না (এভাবে) আমরা কোনো জিনিস (নিজেদের ওপর) হারাম করে নিতাম, (তুমি তাদের বলো, এর) আগেও অনেকে (এভাবে আল্লাহর আয়াতকে) অস্বীকার করেছে, অবশেষে তারা আমার শাস্তির স্বাদ ভোগ করেছে, তুমি (তাদের) জিজ্ঞেস করো, তোমাদের কাছে কি সত্যিই (এমন) কোনো জ্ঞান (মজুদ) আছে? (থাকলে) অতঃপর তা বের করে আমার জন্যে নিয়ে এসো, তোমরা তো কল্পনার ওপর (নির্ভর করেই) কথা বলো এবং (হামেশাই) মিথ্যার অনুসরণ করো।(আল-আনয়াম:১৪৮)
তুমি (এদের আরো) বলো, হ্যাঁ, আমার মালিক যা কিছু হারাম করেছেন তা হচ্ছে যাবতীয় প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য অশ্লীল কাজ, গুনাহ ও অন্যায়ভাবে বাড়াবাড়ি করা, (তিনি আরো হারাম করেছেন) আল্লাহর সাথে (অন্য কাউকে) শরীক করা, যার ব্যাপারে তিনি কখনো কোনো সনদ নাযিল করেননি এবং আল্লাহ তায়ালা সম্পর্কে তোমাদের এমন সব (বাজে) কথা বলা, যার ব্যাপারে তোমাদের কোনোই জ্ঞান নেই।(আল-আরাফ:৩৩)
আমি তাদের কাছে এমন একটি কিতাব পৌঁছিয়েছিলাম, যা আমি (বিশদ) জ্ঞান দ্বারা (সমৃদ্ধ করে) বর্ণনা করেছি, যারা (এর ওপর) ঈমান আনবে, এ কিতাব (হবে) তাদের জন্যে (সুস্পষ্ট) হেদায়াত ও রহমত।(আল-আরাফ:৫২)
আসল কথা হচ্ছে, তারা মিথ্যা সাব্যস্ত করছে সেই বিষয়কে যার জ্ঞান তারা আয়ত্ত করতে পারেনি, এবং এখনও তার পরিণাম তাদের সামনে আসেনি। ২৬ তাদের পূর্বে যারা ছিল তারাও এভাবেই (তাদের নবীগণকে) অস্বীকার করেছিল। সুতরাং দেখ সে জালেমদের পরিণাম কী হয়েছে। (সূরা ইউনুস,আয়াত:৩৯)
তারা বলে, আল্লাহ তায়ালা (নিজের একটি) ছেলে গ্রহণ করেছেন, (অথচ) আল্লাহ তায়ালা মহাপবিত্র; তিনি স্বয়ংসম্পূর্ণ, অভাবমুক্ত; আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সবই তাঁর; তোমাদের কাছে এ (দাবীর) পক্ষে কোনাে দলিল-প্রমাণ নেই; তােমরা কি আল্লাহ তায়ালা সম্পর্কে এমন সব কথা বলে বেড়াচ্ছ, যে বিষয়ে কোন জ্ঞান তোমাদের নেই ।(হে নবী,) তুমি বলাে, যারা আল্লাহ তায়ালার ওপর মিথ্যা আরোপ করে, তারা কখনােই সফলকাম হবে না।(এ মিথ্যাচার হচ্ছে) পার্থিব (জীবনের একটা) সম্পদ, পরিশেষে তাদের আমার কাছেই ফিরে আসতে হবে, অতঃপর আমি তাদের কুফরী করার জন্য এক কঠোর আযাবের স্বাদ গ্রহণ করাবাে।(ইউনুস:৬৮,৬৯,৭০)
আল্লাহ বললেন, হে নূহ! জেনে রেখ, সে তোমার পরিবারবর্গের অন্তর্ভুক্ত নয়। সে তো অসৎ কর্মে কলুষিত। সুতরাং তুমি আমার কাছে এমন কিছু চেও না, যে সম্পর্কে তোমার কোনও জ্ঞান নেই। আমি তোমাকে উপদেশ দিচ্ছি তুমি অজ্ঞদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না। নূহ বলল, হে আমার প্রতিপালক! যে বিষয়ে আমার জ্ঞান নেই, ভবিষ্যতে আপনার কাছে তা চাওয়া হতে আমি আপনার আশ্রয় চাই। আপনি যদি আমাকে ক্ষমা না করেন ও আমার প্রতি দয়া না করেন, তবে আমিও ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাব। (সূরা হুদ,আয়াত:৪৬,৪৭)