সুপ্রভাত সিডনি রিপোর্ট: গত ২ জানুয়ারি ২০২৫, বৃহস্পতিবার, বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলের নিমন্ত্রণে সিডনি কমিউনিটির শীর্ষ নেতৃবৃন্দ এক সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হন। এই সভায় উপস্থিত ছিলেন অস্ট্রেলিয়া থেকে প্রকাশিত একমাত্র বাংলা পত্রিকা সুপ্রভাত সিডনির প্রধান সম্পাদক এবং অস্ট্রেলিয়া বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা আব্দুল্লাহ ইউসুফ শামীমের নেতৃত্বে একটি সর্বদলীয় বিশেষ টীম। এই বিশেষ সাক্ষাতে অংশগ্রহণ করেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, কলামিস্ট
সুপ্রভাত সিডনি রিপোর্ট: গত ২ জানুয়ারি ২০২৫, বৃহস্পতিবার, বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলের নিমন্ত্রণে সিডনি কমিউনিটির শীর্ষ নেতৃবৃন্দ এক সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হন। এই সভায় উপস্থিত ছিলেন অস্ট্রেলিয়া থেকে প্রকাশিত একমাত্র বাংলা পত্রিকা সুপ্রভাত সিডনির প্রধান সম্পাদক এবং অস্ট্রেলিয়া বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা আব্দুল্লাহ ইউসুফ শামীমের নেতৃত্বে একটি সর্বদলীয় বিশেষ টীম।
এই বিশেষ সাক্ষাতে অংশগ্রহণ করেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, কলামিস্ট ও মানবাধিকার কর্মী শিবলী আব্দুল্লাহ, নটরডেম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. ফজলে রাব্বি, কমিউনিটি ইয়ুথ অ্যান্ড সিটিজেন ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট ড. মারুফ আহমেদ (সাবেক মেজর), বাংলাদেশী সিনিয়র সিটিজেন অব অস্ট্রেলিয়ার প্রতিষ্ঠাতা-নেতা মনজুরুল আলম বুলু, কমিউনিটি ইয়ুথ অ্যান্ড সিটিজেন ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশনের সহ সভাপতি সোহেল রানা, সাবেক সভাপতি বিএনপি অস্ট্রেলিয়া মনিরুল হক জর্জ, সাবেক সভাপতি জিয়া পরিষদ অস্ট্রেলিয়া রুহুল আহমেদ সওদাগর, এবং বিএনপি নেতা মোসলেহউদ্দিন আরিফ।
আলোচ্য বিষয়গুলির মধ্যে ছিল কিভাবে কমিউনিটির সাথে কনস্যুলেটের সম্পর্ক আরও দৃঢ় করা যায়, কনস্যুলেটের সেবার মান কীভাবে বৃদ্ধি করা যায় , একটি অভিযোগ বক্স স্থাপন এবং নিয়মিত কনস্যুলেট জেনারেলের তত্ত্বাবধানে জনগণকে অবহিত করা, দূতাবাসের ওয়েবসাইটের মান উন্নয়ন, NID, পাসপোর্ট ও ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধনের জন্য প্রতিটি স্টেট থেকে ব্যবস্থা করা, নব প্রজন্মের অস্ট্রেলিয়ান বাংলাদেশিদেরকে দূতাবাসের বিভিন্ন সেক্টরে কাজের সুযোগ দেওয়া, বাংলাদেশী রিফ্যুজিদের সমান অধিকার ও সেবা নিশ্চিত করা, এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
এছাড়া, আলোচনা করা হয় অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশকে বিশ্ব বাজারে আমদানি-রপ্তানি বাড়ানোর জন্য কনস্যুলেটের ভূমিকা, পতিত সরকার এবং তার সমর্থকদের মিথ্যা তথ্যের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা, দেশবিরোধী ফ্যাসিবাদী সরকারের প্রতি শূন্য সহনশীলতার অবস্থান প্রকাশ করার মত বিষয়গুলোও।বাংলাদেশ থেকে সরাসরি অস্ট্রেলিয়ায় বিমান বাংলাদেশ যাতায়াতের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।
উপস্থিত নেতৃবৃন্দ একে একে তাদের বক্তব্য পেশ করেন এবং কনস্যুলেট জেনারেল শাখাওয়াত হোসেন অত্যন্ত মনোযোগ সহকারে সকলের কথা শ্রবণ করেন। কনস্যুলেট থেকে আরও উপস্থিত ছিলেন মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম খান রানা (কনসাল)। অবশেষে, কনস্যুলেট জেনারেল শাখাওয়াত হোসেন সকলের প্রতিটি প্রশ্নের সুশৃঙ্খলভাবে উত্তর দেন এবং কমিউনিটির কাছ থেকে সহযোগিতা কামনা করেন।
কনস্যুলেট জেনারেল শাখাওয়াত হোসেন একজন অভিজ্ঞ কূটনীতিক এবং ২০০৬ সাল থেকে বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিসের সদস্য। দীর্ঘ কূটনৈতিক ক্যারিয়ারে তিনি ঢাকা এবং বিদেশে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন।
১৫ বছরেরও বেশি কূটনৈতিক কর্মজীবনের সময়, কনস্যুলেট জেনারেল শাখাওয়াত হোসেন ঢাকা ও বিদেশে বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে, তিনি বহিঃপ্রচার, দক্ষিণ এশিয়া, আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং প্রটোকল উইং-এ অসংখ্য পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন।
সিডনিতে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেলের অফিসে বর্তমান দায়িত্ব গ্রহণের আগে, তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ডিরেক্টর পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কার্যালয় এবং ডেপুটি চিফ অব প্রটোকল (ভিজিট) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এর আগে, তিনি কেনিয়ার নাইরোবিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনে ২০০৯ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে পনের মাস এবং দক্ষিণ আফ্রিকার প্রিটোরিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনে দুই মাস ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১২সালে, তাকে মরিশাসের পোর্ট লুইসে একটি নতুন বাংলাদেশ মিশন খোলার দায়িত্ব দেওয়া হয়।
২০১২ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত স্পেনে বাংলাদেশ দূতাবাসে কাউন্সেলর হিসেবে দায়িত্ব পালন করার সময় কনস্যুলেট জেনারেল শাখাওয়াত হোসেন মাদ্রিদের অফিসিয়াল ল্যাঙ্গুয়েজ ইনস্টিটিউটে (Escuela Oficial de Idiomas Jesus Maestro) স্প্যানিশ অধ্যয়ন করেন।
পরবর্তীকালে, তিনি ২০১৮ সাল পর্যন্ত ভারতের ত্রিপুরায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে বাংলাদেশের প্রথম সহকারী হাইকমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
কনস্যুলেট জেনারেল শাখাওয়াত হোসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফার্মেসিতে স্নাতকোত্তর (এম ফার্ম) এবং ব্যাচেলর অব ফার্মেসি (বি. ফার্ম) সম্পন্ন করেন। বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিসে যোগদানের আগে তিনি ২০০২ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত ঢাকায় এসকায়েফ ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেডে কাজ করেন। কনস্যুলেট জেনারেল শাখাওয়াত হোসেন বাংলা, ইংরেজি ও স্প্যানিশ ভাষায় সাবলীল। তিনি বিবাহিত এবং একটি কন্যা সন্তানের পিতা।
সিডনিতে কনস্যুলেট অফিসে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে সেবার মান আগের চেয়ে অনেক উন্নত হয়েছে, তবে তিনি আরো উন্নতির জন্য তার পরিকল্পনা ও আইডিয়া শেয়ার করেন। এধরনের গুণী কূটনীতিক ব্যক্তিত্বের দীর্ঘ মেয়াদী অবস্থান আমাদের কমিউনিটির জন্য আরও উন্নতি বয়ে আনবে, এমনটাই সকলের বিশ্বাস।
Leave a Comment
Your email address will not be published. Required fields are marked with *