728 x 90

মাহে রমজানের তাৎপর্য

রোজা ফারসি শব্দ। এর আরবি প্রতি শব্দ ‘সওম’। আভিধানিক অর্থে সওম বলতে বোঝায় ‘বিরত থাকা’, ‘বর্জন করা’ ইত্যাদি। শরিয়াতের পরিভাষায় সুবেহ সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে পানাহার ও ইন্দ্রিয় তৃপ্তি থেকে বিরত থাকার নাম ‘সওম’ বা রোজা। সওম ইসলামের মৌলিক ইবাদত এবং ইসলামের পাঁচ স্তম্ভের অন্যতম। নামাজের পরই রোজার স্থান। প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক এবং

রোজা ফারসি শব্দ। এর আরবি প্রতি শব্দ ‘সওম’। আভিধানিক অর্থে সওম বলতে বোঝায় ‘বিরত থাকা’, ‘বর্জন করা’ ইত্যাদি। শরিয়াতের পরিভাষায় সুবেহ সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে পানাহার ও ইন্দ্রিয় তৃপ্তি থেকে বিরত থাকার নাম ‘সওম’ বা রোজা। সওম ইসলামের মৌলিক ইবাদত এবং ইসলামের পাঁচ স্তম্ভের অন্যতম। নামাজের পরই রোজার স্থান। প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক এবং দৈহিকভাবে সামর্থ্যবান মুসলিম নর-নারীর ওপর সওম ফরজ করা হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা কুরআনে ঘোষণা করেন, ‘হে তোমরা যারা ঈমান এনেছ, তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হলো যেমন ফরজ করা করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর, যেন তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পারো।’ (সূরা আল-বাকারা, আয়াত-১৮৩)

কুরআনের এ আয়াতের বক্তব্য অনুযায়ী, রমজানের সিয়াম পালনের উদ্দেশ্য হলো তাকওয়ার গুণ অর্জন। একজন রোজাদারের সামনে হালাল খাবার গ্রহণের সুযোগ থাকা সত্ত্বেও সে তা গ্রহণ থেকে বিরত থাকে। তার কারণ আল্লাহর ভয়। রোজাদার সারাদিন ক্ষুধার তাড়নায় কষ্ট পায়। তার মনের কুপ্রবৃত্তি তাকে খাবার গ্রহণে সারাক্ষণ প্ররোচিত করতে থাকে। কিন্তু মহান আল্লাহর ভয়ে রোজাদার মনের তাড়নার বিরুদ্ধে লড়াই করে। রমজানের সিয়াম সাধনা মুসলিম জীবনের এক অনন্য ইবাদত। রমজান মুসলিম জীবনে প্রতি বছর রহমত, নাজাত ও মাগফিরাতের বারতা নিয়ে হাজির হয়। একটি টেকসই ও আদর্শ জীবন গঠনের শিক্ষা নিয়ে আসে রমজান। ইসলাম সাম্য-মৈত্রী, খোদাভীতি, আত্মসংযম, আত্মশুদ্ধি, শৃঙ্খলা, মমত্ববোধ, দান, ভালোবাসা ও ভ্রাতৃত্বের যে মহান শিক্ষা দিয়েছে তার বাস্তবায়নের সুযোগ বয়ে আনে রমজানের রোজা। রোজার অসংখ্য শিক্ষা রয়েছে।

ইবাদতের সুযোগ সৃষ্টি : রোজা পবিত্রতা অর্জন ও ইবাদতের মাস। এ মাসে রোজাদারের মন নরম ও পবিত্র থাকে। রোজাদার এ মাসে অধিক ফজিলত লাভ করতে চায়। ক্ষুধার যন্ত্রণা, প্রবৃত্তির তাড়না থেকে বেঁচে থাকার প্রয়াস রোজাদারের জীবনকে নতুনভাবে তৈরি করে। এ সময় রোজাদার বেশি বেশি দৈহিক ও আর্থিক আমল করার জন্য প্রস্তুত থাকে। তাই রোজাদার বেশি বেশি দান করে, অসহায় ও দরিদ্রকে অর্থ বা খাবার দিয়ে সওয়াব কামাই করার চেষ্টা করে। বছরের অন্য সময় যারা ফরজ নামাজ বা অন্য আমল নিয়মিত আদায় করে না, নফল ও সুন্নতের আমল চর্চা করে না, রোজার সময় তারা ফরজ আদায় তো করেই, এমনকি নফল ও সুন্নতের প্রতিও নজর দেয়। রোজার কারণেই মানুষের মধ্যে ইবাদতের এই অনুভূতি তৈরি হয়। তখন মানুষের মনে রাসূল সা:-এর সেই হাদিস উদ্ভাসিত হয়ে উঠে, যেখানে বলা হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি এ মাসে কোনো সুন্নত বা নফল ইবাদত করবে তাকে বিনিময়ে অন্য মাসে আদায়কৃত ফরজ ইবাদতের সওয়াব দেয়া হবে। আর এ মাসে যে ব্যক্তি কোনো ফরজ ইবাদত করবে সে অন্য মাসে আদায়কৃত ৭০টি ফরজ ইবাদতের সমান সাওয়াব পাবে।’(বায়হাকি)

আবু হুরায়রা রা: বর্ণিত- রাসূল সা: আরো বলেন, ‘রমজান মাসে আদম সন্তানের প্রত্যেকটি নেক আমলের সাওয়াব ১০ গুণ থেকে ৭০০ গুণ বাড়িয়ে দেয়া হয়।’ (বুখারি ও মুসলিম)। ফলে রোজাদার রোজার মাসে সাহরি, ইফতার, তারাবিহ, তাহাজ্জুদ, জিকির আজকার, কুরআন তিলাওয়াত, দান, খয়রাত, জাকাতসহ নানান ইবাদতের মাধ্যমে তার আমলকে সমৃদ্ধ করার প্রয়াস পায়। এভাবে ইবাদত করার সুবর্ণ সুযোগ কেবল রমজানের রোজার কারণেই সম্ভব হয়।

সংযম ও ত্যাগ-তিতিক্ষার প্রশিক্ষণ : রমজানের সিয়াম সাধনার বড় শিক্ষা হলো ধৈর্য, ত্যাগ-তিতিক্ষা ও সংযমের অনুশীলন। এই গুণগুলো একে অন্যের পরিপূরক। ধৈর্য না থাকলে জীবনে কোনো কিছুই অর্জন করা যায় না। মহানবী সা: এক হাদিসে রোজার মাসকে ধৈর্যের মাস বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘রমজান সবরের মাস, আর সবরের পুরস্কার হলো জান্নাত।’ (বায়হাকি)

ত্যাগ-তিতিক্ষা ও সংযম সাধনা ছাড়া বড় কিছু অর্জন করা যায় না। রোজায় মুত্তাকি হওয়ার নিয়ামত লাভ করার জন্য চাই ধৈর্য, ত্যাগ ও সংযমের গুণ। রোজাদারকে সারাদিন উপোস থাকা, খাবার ও পানীয় মজুদ থাকা সত্ত্বেও তা থেকে বিরত থাকা, আরামের ঘুম থেকে জেগে দীর্ঘ এক মাস মধ্যরাতে সাহরি খাওয়া, ইফতারের পর ক্লান্ত শরীরে এশার নামাজের পরে অতিরিক্ত ২০ রাকাত তারাবিহ নামাজ পড়া, ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও ঝগড়া-ফ্যাসাদে জড়িয়ে না পড়া, অন্যায়-মিথ্যা ও ভোগের সামগ্রীকে পরিহার করা সত্যিকার অর্থে চরম ধৈর্য ও সংযমের কাজ। রোজাদার এক মাস এভাবে চলার কারণে তার মধ্যে ধৈর্য, ত্যাগ ও সংযমের মনোভাব তৈরি হয়। রাসূল সা: বলেন, ‘রোজা ঢালস্বরূপ’।

এর মানে রোজা মানুষকে অন্যায়, অসত্য ও অসুন্দর কাজ থেকে বাঁচিয়ে রাখে। ঢাল দ্বারা মানুষ যেমন আত্মরক্ষা করে তেমনি রোজার ঢাল মানুষকে গোনাহ ও শয়তানের আক্রমণ থেকে রক্ষা করে। এ আত্মরক্ষার জন্যই রোজাদারকে কঠিন ধৈর্য ও সংযমের অনুশীলন করতে হয়। আর যদি রোজাদার ধৈর্য ও সংযম রক্ষা করে রোজা পালন করতে না পারে তার রোজা রাখার কোনো মূল্য নেই। আবু হুরায়রা রা: থেকে বর্ণিত- রাসূল সা: বলেন, ‘যে মিথ্যা বলা ও তদানুযায়ী আমল করা বর্জন করেনি তার এ পানাহার পরিত্যাগ করায় আল্লাহর কোনো প্রয়োজন নেই।’ (সহিহ বুখারি) আক্রমণ থেকে রক্ষা করে। এ আত্মরক্ষার জন্যই রোজাদারকে কঠিন ধৈর্য ও সংযমের অনুশীলন করতে হয়। আর যদি রোজাদার ধৈর্য ও সংযম রক্ষা করে রোজা পালন করতে না পারে তার রোজা রাখার কোনো মূল্য নেই। আবু হুরায়রা রা: থেকে বর্ণিত- রাসূল সা: বলেন, ‘যে মিথ্যা বলা ও তদানুযায়ী আমল করা বর্জন করেনি তার এ পানাহার পরিত্যাগ করায় আল্লাহর কোনো প্রয়োজন নেই।’ (সহিহ বুখারি)

সহমর্মিতা ও সৌহার্দ বৃদ্ধি করে : রমজান মাস সহমর্মিতা ও সৌহার্দের মাস। এ প্রসঙ্গে মহানবী সা: বলেছেন, ‘রমজান পারস্পরিক সহানুভূতি প্রকাশের মাস।’ (বায়হাকি)। ধনী বা সম্পদশালী মুসলমানরা সারাদিন রোজা রেখে ক্ষুণিবৃত্তির কষ্ট এবং উপবাস রাখার জ্বালা উপলব্ধি করতে পারে। ফলে অসহায় ও গরিব মানুষের যে কী কষ্ট তা তারা অনুধাবন করার প্রয়াস পায়। এতে বিত্তহীন ও গরিব-দুঃখীর প্রতি তাদের মনে সহমর্মিতা ও সৌহার্দবোধ তৈরি হয়। তারা সহজেই অনুভব করতে পারে গরিব ও বিত্তহীনদের প্রতি তাদের দায়িত্ববোধের কথা। আল্লাহ তায়ালা ধনীদের সম্পদে গরিবের অধিকার সংরক্ষণ করে রেখেছেন। তিনি বলেছেন, ‘তাদের (ধনীদের) সম্পদে রয়েছে অভাবগ্রস্ত ও বঞ্চিতের অধিকার।’ (সূরা জারিয়াত, আয়াত-১৯)

রোজার সময় ধনী এবং বিত্তশালীরা অভাবগ্রস্ত ও অসহায় মানুষের হক সম্পর্কে সচেতন হয়ে উঠার সুযোগ পায়। ফলে জাকাত, ফিতরা এবং দান ইত্যাদির মাধ্যমে সওয়াব অর্জনের চেষ্টা করে। জাকাত সম্পর্কে রাসূল সা: বলেন, ‘রমজানের রোজা রাখবে, নিজেদের সম্পদের জাকাত আদায় করবে এবং তোমাদের শাসকদের আনুগত্য করবে, তা হলেই তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের জান্নাতে প্রবেশ করবে।’ (আলমগিরি, প্রথম খণ্ড)।

ফিতরার ব্যাপারে রাসূল সা: বলেন, ‘যে ব্যক্তি সদকায়ে ফিতরা আদায় করবে না, তার রোজা কবুল হবে না।’ এ জন্য ঈদুল ফিতরের নামাজে যাওয়ার আগেই ফিতরা আদায় করে দিতে হয়। এভাবে দান, জাকাত ও ফিতরা প্রদানের মাধ্যমে সমাজে আর্থিকভাবে দুর্বল, অসহায় ও ঋণগ্রস্ত মানুষ উপকৃত হয়। তাদের দুঃখ-কষ্ট লাঘব হয়। এর মাধ্যমে সহমর্মিতা ও সৌহার্দ প্রদর্শনের মহান ঔদার্য রোজাদারকে তার প্রত্যাশিত জান্নাতে প্রবেশের দ্বার উন্মুক্ত করে।

রোজা শুধু বাহ্যিক পানাহার বর্জনের নাম নয়, বরং রোজার আরো কিছু দাবি ও শিক্ষা আছে। তা হলো আল্লাহর পুরো আনুগত্য করা এবং পাপ কাজ ছেড়ে দেওয়া। না হলে রোজা পালন অর্থহীন হয়ে যায়। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি মিথ্যা বলা এবং সে অনুযায়ী আমল বর্জন করেনি, তার এই পানাহার পরিত্যাগ করায় আল্লাহর কোনো প্রয়োজন নেই। ’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১৯০৩)

রোজার ১০ পুরস্কার

রোজা রাখার একাধিক পুরস্কারের কথা কোরআন ও হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। এর মধ্যে ১০টি বিশেষ পুরস্কার বর্ণনা করা হলো—

১. স্বয়ং আল্লাহ কর্তৃক পুরস্কার : আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ তাআলা বলেন, মানুষের প্রতিটি কাজ তার নিজের জন্যই—রোজা ছাড়া। তা আমার জন্য, আমি নিজেই তার পুরস্কার দেব। আর রোজাদারদের মুখের গন্ধ আল্লাহর কাছে মিসকের ঘ্রাণের চেয়ে বেশি সুগন্ধযুক্ত। ’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৫৯২৭)

২. রোজা অতুলনীয় আমল : আবু উমামা (রা.) বলেন, ‘আমি একবার রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে এসে বললাম, আমাকে এমন একটি ইবাদতের নির্দেশ দিন, যা আমি আপনার নির্দেশক্রমে পালন করব। তিনি বললেন, তুমি রোজাকে আঁকড়ে ধরো, যেহেতু এর কোনো বিকল্প নেই। ’ (সুনানে নাসায়ি, হাদিস : ২২২০)

৩. রোজা ঢালস্বরূপ : আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘রোজা ঢালস্বরূপ। সুতরাং অশ্লীলতা করবে না এবং মূর্খের মতো কাজ করবে না। যদি কেউ তার সঙ্গে ঝগড়া করতে চায়, তাকে গালি দেয়, তবে সে যেন দুইবার বলে, আমি সওম পালন করছি। ’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১৮৯৪)

অন্য হাদিসে এসেছে, রোজা জাহান্নাম থেকে রক্ষাকারী ঢাল। হাদিসবিশারদরা বলেন, রোজা ইহকালে পাপ কাজ থেকে এবং পরকালে জাহান্নাম থেকে রক্ষাকারী।

৪. জাহান্নাম থেকে মুক্তি : আবু সাঈদ খুদরি (রা.) বলেন, আমি নবী (সা.)-কে বলতে শুনেছি, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় এক দিনও সিয়াম পালন করে, আল্লাহ তার মুখমণ্ডলকে জাহান্নামের আগুন থেকে ৭০ বছরের রাস্তা দূরে সরিয়ে নেন। ’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ২৮৪০)

৫. ফিতনা থেকে আত্মরক্ষা : হুজায়ফা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘মানুষ নিজের পরিবার-পরিজন, ধন-সম্পদ, সন্তান-সন্ততি, পাড়া-প্রতিবেশীদের ব্যাপারে যে ফিতনায় পতিত হয়, নামাজ, রোজা, দান, (ন্যায়ের) আদেশ ও অন্যায়ের নিষেধ তা দূরীভূত করে দেয়। ’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৫২৫)

৬. রোজা সুপারিশকারী : রোজা পরকালে আল্লাহর কাছে রোজাদারের পক্ষে সুপারিশ করবে। আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ বলেন, ‘রোজা ও কোরআন বান্দার জন্য সুপারিশ করবে। রোজা বলবে, হে আমার প্রতিপালক! নিশ্চয়ই আমি তাকে দিনের বেলা পানাহার ও প্রবৃত্তি থেকে বিরত রেখেছি। সুতরাং তার ব্যাপারে আমার সুপারিশ গ্রহণ করুন। কোরআন বলবে, আমি তাকে রাতের বেলা ঘুম থেকে দূরে রেখেছি। সুতরাং তার ব্যাপারে আমার সুপারিশ গ্রহণ করুন। অতঃপর তাদের সুপারিশকারী হিসেবে গ্রহণ করা হবে। ’ (মিশকাতুল মাসাবিহ, হাদিস : ১৯৬৩)

৭. জান্নাত লাভ : সাহল (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেন, ‘জান্নাতের রাইয়্যান নামক একটি দরজা আছে। এই দরজা দিয়ে কিয়ামতের দিন রোজা পালনকারীরাই প্রবেশ করবে। তাদের ছাড়া আর কেউ এ দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না। ঘোষণা দেওয়া হবে, রোজা পালনকারীরা কোথায়? তখন তারা দাঁড়াবে। তারা ছাড়া আর কেউ এই দরজা দিয়ে প্রবেশ করবে না। তাদের প্রবেশের পরই দরজা বন্ধ করে দেওয়া হবে, যাতে এই দরজা দিয়ে আর কেউ প্রবেশ না করে। ’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১৮৯৬)

৮. আল্লাহর ক্ষমা লাভ : পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘অবশ্যই আত্মসমর্পণকারী পুরুষ ও আত্মসমর্পণকারী নারী, মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারী, অনুগত পুরুষ ও অনুগত নারী, সত্যবাদী পুরুষ ও সত্যবাদী নারী, ধৈর্যশীল পুরুষ ও ধৈর্যশীল নারী, বিনীত পুরুষ ও বিনীত নারী, দানশীল পুরুষ ও দানশীল নারী, রোজা পালনকারী পুরুষ ও রোজা পালনকারী নারী, লজ্জাস্থান সংরক্ষণকারী পুরুষ ও লজ্জাস্থান সংরক্ষণকারী নারী, আল্লাহকে বেশি স্মরণকারী পুরুষ ও বেশি স্মরণকারী নারী—এদের জন্য আল্লাহ রেখেছেন ক্ষমা ও মহা প্রতিদান। ’ (সুরা : আহজাব, আয়াত : ৩৫)

৯. দোয়া কবুল : আল্লাহ রোজাদারের দোয়া কবুল করেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তিন ব্যক্তির দোয়া কবুল হয় : রোজাদারের দোয়া, অত্যাচারিত ব্যক্তির দোয়া ও মুসাফিরের দোয়া। ’ (সুনানে বায়হাকি)

১০. অন্তরের পরিশুদ্ধি : রোজা অন্তরের ওয়াসওয়াসা তথা সংশয় দূর করে। আমর ইবনে শুরাহবিল (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আমি কি তোমাদের অন্তরের ওয়াসওয়াসা (সংশয়) দূর করার আমল সম্পর্কে অবহিত করব না? সাহাবিরা বললেন, কেন নয়? তিনি বললেন, তা হলো প্রত্যেক মাসের তিন দিন রোজা পালন করা। ’ (সুনানে নাসায়ি, হাদিস : ২৩৮৬) আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাই রোযা পালনের জন্য মানসিক প্রস্তুতি গ্রহণ এবং তাকওয়া অর্জন করে প্রতিটি কর্মে তার প্রতিফলন করার তাওফিক দান করুন। কুরআন নাযিলের এই মহান মাসে কুরআন শিক্ষা গ্রহণ, কুরআন তিলাওয়াত, কুরআনের অর্থ বুঝতে সচেষ্ট হওয়া এবং কুরআনের আদেশ -নিষেধ গুলো নিজের ব্যক্তি জীবন, পারিবারিক জীবন, সামাজিক জীবন ও আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে বাস্তবায়নের আন্তরিক প্রচেষ্টা সহ কুরআনের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তোলার আহবান জানাচ্ছি। যাদের লেখা হতে দাওয়াতি কাজে সহায়তা নিয়েছি আল্লাহ তায়ালা তাদের উত্তম বিনিময় দান করুন।

Read More

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked with *

সর্বশেষ পোস্ট

Advertising