আতিকুর রহমান : মানুষের রুহানি বিষয়গুলো বড়ই অদ্ভুত। মানসিক প্রশান্তি, অশান্তির নিড় হলো এই রুহ। কখনো মন বিক্ষিপ্ত, এটা রুহের মাঝ থেকেই হচ্ছে। কখনো মন প্রশান্ত এটাও সেই একই স্থান। শয়তানের অসওয়াসা আসে এই রুহ থেকেই। নামাজে খুশু-খুজু না আসার উপকরণ একই জায়গা থেকেই উৎপত্তি। আমাদের মনের অশান্তির বেশীরভাগই নিজেদের কামাই করা। নিজের অজান্তে নিজেই
আতিকুর রহমান : মানুষের রুহানি বিষয়গুলো বড়ই অদ্ভুত। মানসিক প্রশান্তি, অশান্তির নিড় হলো এই রুহ। কখনো মন বিক্ষিপ্ত, এটা রুহের মাঝ থেকেই হচ্ছে। কখনো মন প্রশান্ত এটাও সেই একই স্থান। শয়তানের অসওয়াসা আসে এই রুহ থেকেই। নামাজে খুশু-খুজু না আসার উপকরণ একই জায়গা থেকেই উৎপত্তি।
আমাদের মনের অশান্তির বেশীরভাগই নিজেদের কামাই করা। নিজের অজান্তে নিজেই নিজের ক্ষতি সাধন করছি। জনৈক স্কলার বলেছিলেন যে ব্যক্তি অপরের প্রতি শত্রুতা লালন করে বাস্তবিকতা হলো: শত্রুতা লালনকারী ব্যক্তিই অন্তরের দিক থেকে অধিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যার প্রতি শত্রুতা লালন করা হয় সে হয়তো এ বিষয়ে কিছুই জানছে না। এমনকি শত্রতা লালনকারী ব্যক্তির সামান্য অশান্তিও ঐ ব্যক্তিকে স্পর্শ করছে না। শত্রুতা লালনকারী ব্যক্তি নিজের আগুনে নিজেই জ্জলছে। আফসোস। আল্লাহর রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অন্যের প্রতি খারাপ ধারণা, অধিক ধারণা পোষন করা থেকেও বিরত থাকতে বলেছেন। একজনের খারাপগুলো দেখার অবস্থা তৈরী হলে বেশী বেশী করে তার গুণগুলো নিয়ে ভাবা। সকলের প্রতি সুধারণা পোষন করা। হিংশা ও নিজের ইগোকে প্রাধান্য না দেয়া। আপনি হয়তো জেনে অবাক হবেন আপনার ইগো কিন্তু আপনার বন্ধু নয় বরং আপনার শত্রু। আপনার মনের মধ্যেই তার বসবাস। উল্লেখিত আমল করলে উল্লেখিত সমস্যার অনেকটাই সমাধান হয়ে যাবে, ইনশাআল্লাহ।
প্রশ্ন হলো কেউ যদি জুলুম করে থাকে তখন কি করতে হবে? কেউ জুলুম করে থাকলে কয়েকটি পন্থা অবলম্বন করা যেতে পারে:
১) জালেমকে ক্ষমা করে দেয়া। সাথে তার হেদায়েতের জন্য দোয়া করা। যদি তা সম্ভব না হয় তবে
২) জালেমের বিরুদ্ধে মহান আল্লাহর নিকট অভিযোগ করা বা বদদোয়া করা। সেটা করতে না চাইলে
৩) আল্লাহ তা’আলার নিকট নিজ অন্তরকে প্রশান্ত করার জন্য দোয়া করা।
দৈনন্দিন চলার পথে অনেক বিষয় নিজেদের পছন্দ মতো হয়না যা আমাদের পিড়া দেয়। এসব বিষয়গুলোর মধ্যে বেশিরভাগ বিষয় ছোটখাটো কিন্তু তা মনের মাঝে বিচরণ করতেই থাকে। অনেক সময় ভূলে থাকা কঠিন। সালাতে দাঁড়ালে এসব বিষয় আরও বেশী করে মনে পরে। জনৈক স্কলার বলেছিলেন এগুলো শয়তানের আক্রমণ। শয়তান এসব ছোটখাটো বিষয়গুলো নিয়ে আপনার মনে অস্থিরতা তৈরি করে আপনার সালাতকে ছিনিয়ে নিচ্ছে। এধরণের পরিস্থিতিতে আমি নিজে মেডিশেসন বা মোরাকাবা করি। চোখ বন্ধ করে মনের জগতে প্রবেশ করি। প্রতিটি বিষয় একেক করে টেবিলে উপস্থাপন করি। মনের সাথে বোঝাপড়া করি যাতে সে এ বিষয়গুলো আর মনের মাঝে না নিয়ে আসে। এভাবেই বিষয়গুলো সামাল দেই, আলহামদুলিল্লাহ। শয়তান সুযোগ নিতে পারে না। ইস্তিগফার, দরুদ বেশী বেশী করে পাঠ করলে মনে প্রশান্ত হয়ে উঠে।
মনের বিক্ষিপ্ততার অন্যতম কারণ হলো একসাথে অনেকগুলো বিষয় মাথায় নেয়া। যার অন্যতম কারণ স্মার্ট ফোনের ব্যবহার। মাত্রাতিরিক্ত তথ্য মাথায় ঢোকে যাচ্ছে স্মার্ট ফোনের কারণে। ফেসবুক পাঁচ মিনিট স্ক্রল করলে দেখবেন কমপক্ষে ২০-৫০টি ভিন্ন ভিন্ন তথ্য আপনার মাথায় প্রবেশ করছে যা আপনার স্বাভাবিক কাজের ক্ষেত্রে বড় ধরনের ডিস্ট্রাকশন বা বিক্ষিপ্ততা। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে আমরা যে কাজ গুলো করি তার মাঝে ৪০-৪৫% ডিস্ট্রাকশন হয়। এটা যারা কমিয়ে আনতে সক্ষম হয় তারাই সফলকাম, ইনশাআল্লাহ। এক সাথে একটি কাজে মনোযোগ দেয়া, কাজের সময় স্মার্ট ফোন হাতের নাগালের বাহিরে রাখা। দিনে নির্দিষ্ট সময় ছাড়া ইমেইল, নোটিফিকেশন, ম্যাসেঞ্জার চেক ইত্যাদি করা থেকে বিরত থাকা।
Leave a Comment
Your email address will not be published. Required fields are marked with *