মার্চ মাসের ২৫ তারিখ শনিবার অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস স্টেটের সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। চলতি সংখ্যার পত্রিকার যখন পাঠকের হাতে থাকবে, এর মাঝেই নির্বাচনের ফলাফল নিশ্চিত হয়ে যাবে। সুপ্রভাত সিডনির পাঠকরা জেনে যাবেন এনএসডব্লিউ প্রিমিয়ার হিসেবে লিবারেল নেতা ডমিনিক পেরোটেট তার ক্ষমতা চলমান রাখছেন না কি লেবার নেতা ক্রিস মিনস এই স্টেটের নতুন প্রিমিয়ার
মার্চ মাসের ২৫ তারিখ শনিবার অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস স্টেটের সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। চলতি সংখ্যার পত্রিকার যখন পাঠকের হাতে থাকবে, এর মাঝেই নির্বাচনের ফলাফল নিশ্চিত হয়ে যাবে। সুপ্রভাত সিডনির পাঠকরা জেনে যাবেন এনএসডব্লিউ প্রিমিয়ার হিসেবে লিবারেল নেতা ডমিনিক পেরোটেট তার ক্ষমতা চলমান রাখছেন না কি লেবার নেতা ক্রিস মিনস এই স্টেটের নতুন প্রিমিয়ার হতে যাচ্ছেন। একদিকে যেমন এই স্টেটে লিবারেল পার্টির শক্ত জনভিত্তি রয়েছেন, অন্যদিকে সাম্প্রতিক ফেডারেল সরকারী নির্বাচনে লেবার পার্টির বিজয় এবং ভিক্টোরিয়ান নির্বাচনে লেবার পার্টির ক্ষমতার ধারাবাহিকতা ধরে রাখার ঘটনাগুলোও পটপরিবর্তনের একটি সম্ভাবনার ইশারা দেয়।
ফেডারেল সরকার পদ্ধতিতে স্টেট সরকারের গুরুত্ব এবং ক্ষমতা অনেক। তার পাশাপাশি নিউ সাউথ ওয়েলস হলো অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্টেট, যার রাজধানী বিশ্ববিখ্যাত শহর সিডনি। অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশী প্রবাসীদের মাঝে সব চেয়ে বেশিসংখ্যক প্রবাসী বসবাস করেন এই এনএসডব্লিউ স্টেটে। বর্তমান এনএসডব্লিউ সরকারের ক্ষমতায় আছে লিবারেল পার্টি। ২০১১ থেকে শুরু করে দীর্ঘ এক যুগের এই লিবারেল ক্ষমতার অবসান কি এই নির্বাচনে হতে যাচ্ছে, না কি ক্ষমতাসীন দলই আবার নির্বাচনে জয় লাভ করে তাদের শাসন ধারাবাহিক করবে, এই প্রশ্নের সামনে উৎসুক দাঁড়িয়ে আছে সিডনির মানুষ, এনএসডব্লিউ’র মানুষ এবং সর্বোপরি পুরো অস্ট্রেলিয়ার জনগণ।
২০২৩ সালের এই এনএসডব্লিউ নির্বাচনে বিভিন্ন আসন থেকে বেশ কয়েকজন বাংলাদেশী প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধীতা করছেন। লেবার ও লিবারেল দুই দলেই বিভিন্ন জায়গায় বাংলাদেশী বংশোদ্ভুত প্রার্থীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ ও প্রচারণা চোখে পড়েছে প্রবাসী বাংলাদেশীদের। রকডেল আসন থেকে লিবারেল প্রার্থী মুহাম্মদ রানা, ম্যাকুয়ারি ফিল্ড আসনে লিবারেল প্রার্থী জহুরুল কাজী, গ্র্যানভিল আসন থেকে লিবারেল প্রার্থী এএনএম মাসুম, অবার্ন আসন থেকে লিবারেল প্রার্থী মোহাম্মদ হাসিন জামান প্রবাসীদের মাঝে আলোচনায় এসেছেন। লেবার পার্টি সাধারণত অভিবাসীদের মাঝে তুলনামূলকভাবে জনপ্রিয় দল হলেও এবারের নির্বাচনে কোন বাংলাদেশী লেবার মনোনয়ন পাননি। এর বাইরে মাউন্ট ড্রুইট আসন থেকে গ্রিনস পার্টির হয়ে এএসএম মাহবুব মোর্শেদ প্রতিদ্বন্ধীতা করছেন এই রাজ্য সংসদ নির্বাচনে।
সাধারণত রাজনীতিমনস্ক বাংলাদেশী প্রবাসীরা দেশের বাইরে এসেও বিএনপি-আওয়ামী লীগ-জামায়াত এইসব দেশীয় রাজনৈতিক দলের শাখা খুলে নিজেরা মারামারি ও বিভাজন করেন। এই সংস্কৃতি অস্ট্রেলিয়া, নর্থ আমেরিকা, বৃটেন সহ ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের প্রায় সব দেশেই দেখা যায়। বাংলাদেশী রাজনৈতিক দলের এইসব বিদেশী শাখাগুলো মূলত টাকার যোগান ও বিভিন্ন সুযোগের সদ্ব্যবহারের জন্য ব্যবহৃত হয়। এইসব অপসংস্কৃতিকে আমরা যখন স্বাভাবিক হিসেবে মেনে নিয়েছে, এমন পরিস্থিতিতে অন্যদেশের মূলধারার রাজনীতিতে প্রবাসী বাংলাদেশীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ অত্যন্ত ইতিবাচক ও প্রশংসাযোগ্য একটি বিষয়। বাংলাদেশে কোন সুষ্ঠ নির্বাচন হয়না বহু বছর। কোটি কোটি বাংলাদেশী মানুষ সাবালক হয়ে বর্তমানে পৌঢ়ত্বে পৌছতে যাচ্ছে যারা জীবনে কোন নির্বাচনে ভোট দেয়ার সুযোগ পায়নি। অন্যান্য সভ্য ও সুস্থ সমাজের এইসব নির্বাচন দেখার অভিজ্ঞতা থেকে প্রবাসীরা প্রত্যাশা করার সুযোগ পায়, হযতো কোন একদিন বাংলাদেশেও সুষ্ঠ ও স্বাভাবিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেও হতে পারে।
Leave a Comment
Your email address will not be published. Required fields are marked with *