728 x 90

প্রতিটি মানুষের জন্য ন্যায়বিচার প্রাপ্তিই ফ্যাসিবাদের পতনকে স্বার্থক করতে পারে: নতুন বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে সুপ্রভাত সিডনির সংবাদ সম্মেলন

– সুপ্রভাত সিডনি রিপোর্ট ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখ রোববার দুপুরে সিডনির রকডেল এলাকায় অবস্থিত স্টার বিরিয়ানি এন্ড ফাংশন সেন্টারে অস্ট্রেলিয়ার অন্যতম এবং একমাত্র বাংলাভাষী কমিউনিটি পত্রিকা সুপ্রভাত সিডনির উদ্যোগে একটি সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। পত্রিকাটির প্রধান সম্পাদক আবদুল্লাহ ইউসুফ শামীমের সাম্প্রতিক বাংলাদেশ সফরের সময় ডিজিটাল সিকিউরিটি এক্টে দায়ের করা আওয়ামী মামলার কারণে ঢাকা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে

– সুপ্রভাত সিডনি রিপোর্ট

২৯ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখ রোববার দুপুরে সিডনির রকডেল এলাকায় অবস্থিত স্টার বিরিয়ানি এন্ড ফাংশন সেন্টারে অস্ট্রেলিয়ার অন্যতম এবং একমাত্র বাংলাভাষী কমিউনিটি পত্রিকা সুপ্রভাত সিডনির উদ্যোগে একটি সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। পত্রিকাটির প্রধান সম্পাদক আবদুল্লাহ ইউসুফ শামীমের সাম্প্রতিক বাংলাদেশ সফরের সময় ডিজিটাল সিকিউরিটি এক্টে দায়ের করা আওয়ামী মামলার কারণে ঢাকা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গ্রেফতার ও হয়রানির অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতেই মূলত এ সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন কমিউনিটি নিউজ পোর্টালের প্রতিনিধি ও গণমাধ্যমকর্মীরা অংশগ্রহণ করেন।

সুপ্রভাত সিডনির সম্পাদক ড. ফারুক আমিনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত এ সংবাদ সম্মেলনের প্রথমার্ধ্বে আবদুল্লাহ ইউসুফ শামীম ঢাকা বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশনে তাকে আটকানো এবং হয়রানির ঘটনা বিস্তারিত বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, সিআইডির দায়ের করা পুরনো একটি মামলার জের ধরে তাকে ইমিগ্রেশনে গ্রেফতার করা হয়। এ মামলাটিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ১৮৭ জন বাংলাদেশী সাংবাদিক, লেখক, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যাবহারকারী একটিভিস্ট অন্তর্ভূক্ত রয়েছেন যারা দেশে গেলে একই হয়রানির শিকার হবেন। জনাব শামীম বিস্তারিত বর্ণনায় জানান কিভাবে রাত দেড়টার সময় একজন সিআইডি অফিসার এসে তাকে ‘আসামী’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে এমন হুমকিমূলক আচরণ করতে থাকেন যে এক পর্যায়ে তিনি গুমের শিকার হওয়ার আশংকা পর্যন্ত করেছিলেন। সে অফিসার কথোপকথনের এক পর্যায়ে এমনও হুমকি দেয় যে তারা আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের মতো বিখ্যাত মানুষকে পর্যন্ত কারাগারে পাঠিয়েছে সুতরাং অন্যদের জন্য আরো বেশি কিছু করতে তাদের কোন সমস্যা হবে না!!

দীর্ঘ হয়রানির মুখোমুখি হওয়ার পর তিনি দেশে ও দেশের বাইরে বিএনপি এবং জামায়াতের উচ্চপর্যায়ের নেতৃবৃন্দের সাথে যোগাযোগ করলে এক পর্যায়ে নথ আমেরিকা প্রবাসী সাংবাদিক ড. কনক সরওয়ার তাকে লাইভ অনুষ্ঠানে নিয়ে ইউটিউবে বিমানবন্দর থেকে সরাসরি তার সাক্ষাতকার প্রচার করেন। এর পরেই পরিস্থিতি বদলে যায় এবং পরবর্তীতে সকাল বেলায় তাকে ইমিগ্রেশনের আটকাবস্থা থেকে ছেড়ে দেয়া হয়।
জনাব শামীম এই সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতা তারেক রহমান, জামায়াত নেতা ডা. শফিকুর রহমান, অস্ট্রেলিয়ার ইমিগ্রেশন মিনিস্টার টনি বার্ক সহ দেশে ও বিদেশে যে সকল শুভানুধ্যায়ী, সাংবাদিক ও রাজনৈতিক সহকর্মীরা তাকে এই সংকটের সময় সহায়তা করেছিলেন, তাদের সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি জানান, পরবর্তীতে বর্তমান সরকারের বেশ কয়েকজন উপদেষ্টাও তার সাথে সাক্ষাতে সহায়তা করার আশ্বাস দিয়েছেন।

একজন প্রবাসী সংবাদমাধ্যম কর্মী হিসেবে ফ্যাসিবাদ পতন পরবর্তী বাংলাদেশে গিয়ে এমন অভিজ্ঞতার বিস্তারিত বর্ণনার পর উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রশ্নোত্তর এবং মতবিনিময় পর্বে আরো বিস্তারিত প্রসঙ্গের অবতারণা হয়। পাঁচ আগষ্টের পর প্রবাসী সাংবাদিকদের মাঝে অন্য যারা বাংলাদেশ সফর করেছেন, তারাও তাদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। সকলেই একমত হন যে বাংলাদেশের সরকারী কার্যালয়গুলোর রন্ধ্রে রন্ধ্রে দীর্ঘ পনেরো বছরের আওয়ামী করণের ফলে বর্তমানে প্রতিটি সরকারী দপ্তর ফ্যাসিবাদের প্রেতাত্মারা দখল করে রয়েছে। জনাব শামীমকে যে সিআইডি অফিসার হুমকি দিয়েছিলো এবং দুর্ব্যাবহার করেছিলো, যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে সেই অফিসার একজন প্রাক্তন ছাত্রলীগ নেতা হওয়ার, এই ধরণের অফিসারদেরকে বিতাড়িত না করলে এবং যথাযথ শাস্তি না দিলে বাংলাদেশের ভবিষ্যত সংকটপূর্ণ হতে বাধ্য। আলোচক সাংবাদিকরা আশংকা প্রকাশ করেন একজন সুপরিচিত এবং বিভিন্ন প্রভাবশালী স্থানে যোগাযোগ করতে সক্ষম পত্রিকার সম্পাদককে যদি বাংলাদেশে এমন হয়রানির মুখে পড়তে হয় এবং এমন কি গুম বা কারাবন্দী হওয়ার আশংকার মুখোমুখি হতে হয় তাহলে একজন সাধারণ মানুষ এই দেশে কি ধরণের বিপদে পড়তে পারে এবং তাদের জন্য কিভাবে ন্যায় বিচার, উপযুক্ত নাগরিক সম্মান ও মৌলিক অধিকার নিশ্চিত হতে পারে! সকলেই প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন ফ্যাসিবাদের পতনকে স্বার্থক করার জন্য সকল দায়িত্বশীল বাংলাদেশীকে সাধারণ মানুষের প্রতি তাদের দায়িত্ব পালন সম্পর্কে সচেতন ও সক্রিয় হতে হবে।

এই সংবাদ সম্মেলনে অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম প্রতিনিধি, গণমাধ্যমকর্মী এবং শুভানুধ্যায়ীদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন সিডনি বাংলা নিউজের সম্পাদক মিজানুর রহমান সুমন, বাংলা বার্তার সম্পাদক আসলাম মোল্লা, এনটিভি অস্ট্রেলিয়ার প্রতিনিধি রাশেদ শ্রাবণ, সাউথ এশিয়ান পলিসি ইনিশিয়েটিভের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর শিবলী সোহাইল, প্রবাসী টিভি অস্ট্রেলিয়ার সিইও ড. শফিকুর রহমান, বিএনপি অস্ট্রেলিয়ার নেতা মোসলেহউদ্দিন আরিফ, বাংলাকথার প্রাক্তন সম্পাদক আউয়াল খান, আরাফাত রহমান কোকো ক্রীড়াসংঘের প্রেসিডেন্ট অহিদুল ইসলাম, রায়হান হাসান, সোহেল রানা, জসিম প্রমুখ।

 

সংবাদ সম্মেলনের সরাসরি সম্প্রচার ইউটিউবে দেখতে এখানে ক্লিক করুন, অথবা লিংক: https://www.youtube.com/watch?v=VfzBtjz3h8s

Read More

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked with *

সর্বশেষ পোস্ট

Advertising