সুপ্রভাত সিডনি রিপোর্ট: গত ২৪ জানুয়ারি ২০২৫ শুক্রবার জুমার নামাজের পর সিডনির বাংলাদেশী অধ্যুষিত এলাকা লাকেম্বার রেলওয়ে প্যারেড মুসাল্লায় (কুরআনিক সোসাইটি) অস্ট্রেলিয়ার হোম এফেয়ার্স, ইমিগ্রেশন এন্ড মালটিকালচারাল এফেয়ার্স, সাইবার সিকিউরিটি এবং আর্টস মন্ত্রণালয় সমূহের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী টনি বার্ক এমপি উপস্থিত মুসল্লীদের উদ্দেশ্যে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন। ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির সংসদীয় নেতা এবং স্বরাষ্ট্র ও অভিবাসন সংক্রান্ত মন্ত্রণালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকা এ মন্ত্রী তার সামাজিক গণযোগাযোগের অংশ হিসেবে স্থানীয় মুসলিম কমিউনিটির সাথে মতবিনিময়ের জন্য এদিন মসজিদে এসেছিলেন।
টনি বার্ক তাঁর সাম্প্রতিক বাংলাদেশ সফরের বর্ণনায় বলেন, “যখন শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ছেড়ে চলে গেলো, বাংলাদেশের নতুন সরকারের সাথে অস্ট্রেলিয়ান সরকারের আলোচনার জন্য মন্ত্রীপর্যায়ে প্রথম আমিই বাংলাদেশ সফর করি। ড. ইউনুসের সাথে মিটিং এর সময় তিনি বাংলাদেশীদের ভিসা আবেদন ইন্ডিয়াতে প্রসেসিং এর প্রসঙ্গে কথা বলেন এর ফলে সৃষ্ট বিভিন্ন সমস্যার উল্লেখ করেন। সুতরাং আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি বাংলাদেশীদের ভিসা আবেদন এখন থেকে ভারতের পরিবর্তে বাংলাদেশেই প্রসেস করা হবে।“
তিনি তাঁর বক্তব্যে সশরীরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় যাওয়ার অভিজ্ঞতা এবং তরুণ শিক্ষার্থীদের কার্যক্রম দেখার কথা জানান। তিনি বলেন, সাম্প্রতিক আন্দোলনের সময় একজন তরুণ ছেলে পানি বিতরণ করার সময় মর্মান্তিকভাবে হত্যাযজ্ঞের শিকার হওয়ার মতো ঘটনা সম্পর্কে তিনি জেনেছেন। এছাড়া আবু সাঈদের মতো একজন দেশ প্রেমিককে প্রকাশ্যে হত্যা করেছে হাসিনা সরকার। ছাত্রদের অঙ্কিত দেয়ালে দেয়ালে সুন্দর কারুকার্য তাঁর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।
বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সম্পর্কে তিনি অবগত হয়েছেন এবং অস্ট্রেলিয়া সরকার এ শরণার্থীদের পুনর্বাসনের জন্য বাংলাদেশ সরকারের সাথে সক্রিয় সহযোগিতামূলক ভূমিকা রাখতে কাজ করে যাচ্ছে।
টনি বার্ক এ সময় বক্তব্যে ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের সহায়তার জন্য অস্ট্রেলিয়ান সরকারের গৃহীত সাম্প্রতিক বিভিন্ন সিদ্ধান্ত ও কাজের উল্লেখ করেন। তিনি জানান, ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের ভিসা সংক্রান্ত জটিলতার নিরসন করতে সম্প্রতি বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
বক্তব্য শেষে তিনি মুসল্লিদের সাথে বিভিন্ন প্রসঙ্গে কথা বলেন এবং একটি প্রাগ্রসর দেশ ও সমাজ গঠনে সকল জাতি, বর্ণ ও ভাষার মানুষদের গুরুত্বপূর্ণ ও গঠনমূলক অংশগ্রহণের জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানান।
বক্তব্যের পর একান্ত আলাপে সুপ্রভাত সিডনির প্রধান সম্পাদক এম.এ. ইউসুফ শামীমকে জানান, তিনি প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনুসকে বিগত ১৫ বছর ধরে জানেন। একটি আন্তর্জাতিক সেমিনারে এমিরিটাস প্রফেসর ইউনুসের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। মাননীয় মন্ত্রী টনি বার্ক আরও বলেন, প্রফেসর ইউনুস অত্যন্ত যোগ্য ব্যক্তি এবং অস্ট্রেলিয়ার পক্ষ থেকে তাঁর প্রতি পূর্ণ সমর্থন অব্যাহত থাকবে।
এখানে উল্লেখযোগ্য যে, সুপ্রভাত সিডনির প্রধান সম্পাদক আব্দুল্লাহ ইউসুফ শামীমের নেতৃত্বে সিডনি কমিউনিটির একটি শক্তিশালী দল ভারতের অস্ট্রেলিয়ান দূতাবাস ঢাকায় স্থানান্তরের জন্য বিভিন্ন মন্ত্রীদের কাছে ধর্না প্রদানের উদ্যোগ নেয়। বিশেষভাবে, মাননীয় মন্ত্রী ম্যাট থিসলেথওয়েট এমপি, মাননীয় মন্ত্রী টনি বার্ক এমপি, তৎকালীন ইমিগ্রেশন মন্ত্রী এন্ড্রো গিলিস এমপি এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রী সিনেটর পেনি ওংয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। এ বিষয়ে সুপ্রভাত সিডনি “বাংলাদেশের অস্ট্রেলিয়ান দূতাবাসে ভিসা প্রক্রিয়া নিয়ে বিশেষ পর্যালোচনা” শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ করেছে, যা গুগলে সার্চ করলে পাওয়া যাবে।
মাননীয় মন্ত্রী ম্যাট থিসলেথওয়েট এমপি গত ১৬ এপ্রিল ২০২৪ বিষয়টি পররাষ্ট্র মন্ত্রী সিনেটর পেনি ওংকে অবহিত করেন, এবং তৎকালীন ইমিগ্রেশন মন্ত্রী এন্ড্রো গিলিস এমপিকে জানানো হলে তিনি ২৬ জুন ২০২৪ তারিখে প্রতিক্রিয়া জানান।