মোহাম্মদ মির্জা সুমন (প্যারিস, ফ্রান্স): সম্প্রতি বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক অস্বাভাবিক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে ড. ইউনূস সরকারের পদত্যাগ নিয়ে। গোয়েন্দা সূত্রের বরাতে জানা যায়, ভারতীয় একটি গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছিল। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে একজন গোয়েন্দা কর্মকর্তা ভারতে ফোন করে জানান যে, “স্যার, আমাদের পয়েন্ট অব ভিউ কার্যকর হতে যাচ্ছে, ড. ইউনূস পদত্যাগ করতে যাচ্ছেন। ওপার থেকে উত্তর আসে, “ভেরি গুড, সূক্ষ্ম নজর রাখুন।
এই সময়ে দেশের ভেতরেও নানা ধরনের রাজনৈতিক চক্রান্ত শুরু হয়। ২৪টি ছাত্র আন্দোলন সংগঠনের নেতারা অতীতে বিএনপির বিরুদ্ধে উল্টোপাল্টা বক্তব্য দেওয়ার জন্য ক্ষমা চান এবং রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় হন। জামায়াতের আমির এবং বেগম খালেদা জিয়ার মধ্যে ফোনালাপ হয়।
একটি বিশেষ অংশ, যারা মূলত বাম ঘরানার — তারা ভারতের সহায়তায় ড. ইউনূস সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করতে চায় এবং দেশে অরাজকতা তৈরির ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। তারা এমন একজন বিতর্কিত ভারতপন্থী উপদেষ্টাকে প্রস্তুত রাখে, যাকে ড. ইউনূস সরকার পদত্যাগ করলে প্রধান উপদেষ্টা বানানো হবে বলে ঠিক করা হয়।
এদিকে ইউরোপ, আমেরিকা ও যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মহলে এই ঘটনাকে ঘিরে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। তারা সক্রিয়ভাবে ড. ইউনূসকে বোঝাতে শুরু করেন। একইসাথে, সরকারের দুই উপদেষ্টা সরাসরি ড. ইউনূসের বাসায় গিয়ে তাকে পরিস্থিতির গুরুত্ব বোঝানোর চেষ্টা করেন।
পরিস্থিতি আরও নাটকীয় হয়ে ওঠে যখন বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের একজন নেতা, যিনি ইতিমধ্যেই দেশের মুসলিম দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শেষ করেছেন, ড. ইউনূসের সঙ্গে সরাসরি ফোনে কথা বলেন। তিনি ড. ইউনূসকে বুঝিয়ে এই মুহূর্তে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য অনুরোধ জানান, যাতে অরাজকতা এড়ানো যায়।
ভারতের উদ্দেশ্য ছিল এই অস্থির পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে একটি স্বৈরাচারী সরকার — সম্ভবত হাসিনা ঘরানার — কায়েম করা। কিন্তু বিএনপির ওই শীর্ষ নেতার একটি ফোনেই পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। ফলত, একটি বড় রাজনৈতিক বিপর্যয় থেকে বাংলাদেশ বেঁচে যায়।
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে একটি প্রশ্ন থেকেই যায় — বারবার দেশের কিছু অংশ কীভাবে ব্যক্তিস্বার্থে ভারতের কাছে নিজেদের বিকিয়ে দেয়? দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা ও স্বাধীনতার প্রশ্নে এ ধরনের মনোভাব নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক।
পরিশেষে, অভিনন্দন জানানো যায় ড. ইউনূস সরকারকে, যিনি শেষমেশ বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়ে দেশকে এক মহা বিপদ থেকে রক্ষা করেছেন। একই সঙ্গে অভিনন্দন সেই বিএনপি নেতাকে, যিনি সময়োপযোগী হস্তক্ষেপে ভারতপন্থী একটি ক্ষুদ্র দলের প্রভাব নিষ্ক্রিয় করে পরিস্থিতি সামাল দিতে সক্ষম হয়েছেন।
লেখক পরিচিতি : মোহাম্মদ মির্জা সুমন, পিতা মোঃ হাসেম মির্জা। ঢাকায় জন্ম তবে পৈতৃক নিবাস বিক্রমপুর। ইসলামিক স্টাডিজ বিষয়ে স্নাতকোত্তর (মাস্টার্স) ডিগ্রি অর্জন করেছেন।
রাজনৈতিকভাবে প্রতিহিংসার শিকার হয়ে, ফ্যাসিস্ট হাসিনার শাসনামলে তার বিরুদ্ধে বেশ কিছু মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়। এসব কারণে তিনি দেশত্যাগে বাধ্য হয়ে ফ্রান্স চলে যান। বর্তমানে তিনি ফ্রান্সের নাগরিক হিসেবে প্যারিসে বসবাস করছেন।