দূতাবাস ও কনস্যুলেটের সেবার মান নিয়ে সিডনিতে গণশুনানি — উদ্বেগ প্রকাশ

সুপ্রভাত সিডনি রিপোর্ট : গত ১৮ নভেম্বর ২০২৫, মঙ্গলবার অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটির শীর্ষ নেতৃবৃন্দের এক জরুরি মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বাংলাদেশ হাই কমিশন ও কনস্যুলেট সেবার মান নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মাননীয় প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা প্রফেসর আনিসুজ্জামান চৌধুরী।

এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন,  ইব্রাহিম খলিল মাসুদ, সাবেক ডেপুটি মেয়র, কেম্বেলটাউন সিটি কাউন্সিল; সভাপতি, কমিউনিটি ভয়েস অস্ট্রেলিয়া (অস্ট্রেলিয়ায় মূলধারার একমাত্র বাংলাদেশি দলীয় প্রধান);প্রফেসর ড. শফিকুর রহমান, লেখক, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ও সাবেক অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক বিশেষজ্ঞ (মার্কিন দূতাবাস, ঢাকা)-সভাপতি, Bangladesh-Australia Trade and Investment Council (BATIC); মোহাম্মদ কাইয়ুম, সাবেক সভাপতি, জিয়া পরিষদ অস্ট্রেলিয়া ও কমিউনিটি লিডার; আবুল বাসার ভূঁইয়া, কৃষিবিদ ও কমিউনিটি লিডার; হোসেন আরজু, সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ সিনিয়র সিটিজেনস অব অস্ট্রেলিয়া; আলমগীর ইসলাম বাবু, সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব অস্ট্রেলিয়া; কায়সার আহমেদ, প্রবীণ সাংবাদিক ও কমিউনিটি লিডার; মনজুরুল আলম বুলু, প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, বাংলাদেশ সিনিয়র সিটিজেনস অব অস্ট্রেলিয়া; মনোয়ার মৃধা মুন্না, কমিউনিটি লিডার; মনোয়ার মৃধা মুন্না, কমিউনিটি লীডার, সোহেল রানা, প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, BATIC; পেশাগতভাবে কর্মরত অস্ট্রেলিয়ান এডুকেশন বোর্ডে; আরিফ রানা, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কর্মী; নাসির আহমেদ, সভাপতি, বাংলাদেশ রিফিউজি অফ  অস্ট্রেলিয়া; শফিকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ রিফিউজি অফ  অস্ট্রেলিয়া প্রমুখ।

কমিউনিটির সর্বদলীয় নেতৃবৃন্দ দীর্ঘদিন ধরে দূতাবাস ও কনস্যুলেট সেবার মান নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে আসছেন। এ বিষয়ে সচেতন নাগরিকদের উদ্যোগে পরিচালিত এক অনলাইন জরিপে বেশিরভাগ  উত্তরদাতা নেতিবাচক মতামত প্রদান করেন—অর্থাৎ অধিকাংশ প্রবাসীই সেবার মানে অসন্তুষ্ট। জরিপের একটি কপি অর্থনৈতিক উপদেষ্টা প্রফেসর আনিসুজ্জামান চৌধুরীর কাছে হস্তান্তর করা হলে তিনি প্রয়োজনীয় নির্দেশনাও প্রদান করেন।

সাধারণ কমিউনিটি সদস্যদের লিখিত ও মৌখিক অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরেই সুপ্রভাত সিডনি অফিসে আসছে। উপস্থিত কমিউনিটি নেতৃবৃন্দ বেশ কিছু প্রধান সমস্যার দিক তুলে ধরেন, যেমন—

* গ্রাহকসেবার নিম্নমান।

* আচরণগত ও মনোভাবগত সমস্যার প্রভাব।

* এনআইডি–সংক্রান্ত জটিলতা (বৈধ কিন্তু মেয়াদোত্তীর্ণ পাসপোর্টধারীদের জন্য)।

* ফোন কল রিসিভ না করা বা সাড়া না দেওয়া।

* এনভিআর–সংক্রান্ত সমস্যা, বিশেষ করে বুকিং স্লট না পাওয়া।

* আশ্রয়প্রার্থীদের ট্রাভেল ডকুমেন্ট ইস্যুতে জটিলতা।

* সাংস্কৃতিক অভিযোজনের ঘাটতি।

অনেকেই মন্তব্য করেন, “আচরণ বা কথাবার্তায় মনে হয়েছে, তারা অস্ট্রেলিয়ার মান অনুযায়ী সেবা প্রদানের ন্যূনতম শিষ্টাচারও জানেন না বা শিখেননি। অনেক সময় মনে হয়েছে, তারা ২/৩ বছর প্রচেষ্টা বা অনিয়মের আশ্রয়ে অস্ট্রেলিয়ায় এসেছেন শুধুমাত্র নিজের বা পরিবারের ভবিষ্যৎ গড়ার উদ্দেশ্যে—কমিউনিটির সেবা দেওয়া তাদের অগ্রাধিকার নয়।”

সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, কাউন্সিলর ইব্রাহিম খলিল মাসুদকে দায়িত্ব দেওয়া হয় দূতাবাস ও কনস্যুলেট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দ্রুত বৈঠক করে একটি কার্যকর সমাধান প্রস্তাবনা তৈরির—যাতে অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী বাংলাদেশিদের দীর্ঘদিনের হয়রানি ও ভোগান্তি নিরসন করা সম্ভব হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *