– ফারুক আমিন (সম্পাদক, সুপ্রভাত সিডনি) গত ৮ ডিসেম্বর ২০২৪ রবিবার সন্ধ্যায় অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস স্টেটের বালি-গ্রিফিন ওয়ে নামক মহাসড়কে মর্মান্তিক এক দুর্ঘটনায় ইউনিভার্সিটি অফ ক্যানবেরার ফ্যাকাল্টি অফ বিজনেসের এসিস্ট্যান্ট প্রফেসর ড. মাজহারুল তালুকদার জুয়েল মৃত্যুবরণ করেছেন। তিনি ধর্মীয় ও সামাজিক কর্মকান্ডে সক্রিয় অবদানের জন্য পুরো অস্ট্রেলিয়া জুড়েই বাংলাদেশী অস্ট্রেলিয়ান কমিউনিটিতে একজন সুপরিচিত ব্যক্তিত্ব
– ফারুক আমিন (সম্পাদক, সুপ্রভাত সিডনি)
গত ৮ ডিসেম্বর ২০২৪ রবিবার সন্ধ্যায় অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস স্টেটের বালি-গ্রিফিন ওয়ে নামক মহাসড়কে মর্মান্তিক এক দুর্ঘটনায় ইউনিভার্সিটি অফ ক্যানবেরার ফ্যাকাল্টি অফ বিজনেসের এসিস্ট্যান্ট প্রফেসর ড. মাজহারুল তালুকদার জুয়েল মৃত্যুবরণ করেছেন। তিনি ধর্মীয় ও সামাজিক কর্মকান্ডে সক্রিয় অবদানের জন্য পুরো অস্ট্রেলিয়া জুড়েই বাংলাদেশী অস্ট্রেলিয়ান কমিউনিটিতে একজন সুপরিচিত ব্যক্তিত্ব ছিলেন। তার আকস্মিক মৃত্যুর ঘটনা অস্ট্রেলিয়া এবং অন্যান্য দেশের বাংলাদেশী কমিউনিটিগুলোতে অসংখ্য মানুষকে শোকাহত করেছে।
অস্ট্রেলিয়ার অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয়, সামাজিক ও দাতব্য সংগঠন ইসলামিক প্র্যাকটিস এন্ড দাওয়াহ সার্কেল (আইপিডিসি) এর একজন সংগঠক হিসেবে ড. মাজহার দীর্ঘদিন যাবত সক্রিয় ভূমিকা রেখে আসছিলেন। দুর্ঘটনার দিন তিনি পরিবারের সদস্যদেরকে নিয়ে এ সংগঠনের একটি কর্মসূচীতে অংশ নেয়ার জন্য ইয়াস রিজিওনে এসেছিলেন। দিনের শেষে গাড়ি চালিয়ে ক্যানবেরায় ফিরে যাওয়ার সময় মহাসড়কের নিউ সাউথ ওয়েলস অংশে এই দুর্ঘটনা ঘটে। এ সময় গাড়িতে তাঁর সাথে স্ত্রী এবং দুই কন্যা সন্তানও ছিলেন।
ড. মাজহারের পরিবারের সদস্যরা জানান, হাইওয়ের উপর অপর পাশের রাস্তায় বিপরীতমুখী চলমান অন্য একটি গাড়ি থেকে ভারী ও ধাতব একটি খন্ড ছিটকে এবং উড়ে এসে তাদের গাড়ির উইন্ডস্ক্রিন বা সামনের আয়না ভেঙ্গে গাড়ি চালাতে থাকা ড. মাজহারের মাথায় আঘাত করে। এ সময় গাড়িটি মহাসড়কের উপর থেমে গেলেও সৌভাগ্যক্রমে পরিবারের অন্য সদস্যরা আহত হননি। পরবর্তীতে ইমার্জেন্সি সার্ভিসের সেবাকর্মীরা দ্রুত দুর্ঘটনার স্থানে উপস্থিত হয়, কিন্তু তার আগে ঘটনাস্থলেই মাত্র ঊনপঞ্চাশ বছর বয়সী ড. মাজহারের মৃত্য হয়।
ড. মাজহারুল তালুকদার জুয়েল ছাত্রজীবন থেকেই উজ্জ্বল মেধার স্বাক্ষর রাখার পাশাপাশি সবসময় ইসলামী সংগঠনে একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন। বিভিন্ন দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে অধ্যয়নের সময় তিনি বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সমমনা ছাত্র ও সামাজিক সংগঠনগুলোর সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটি মালয়েশিয়ায় কৃতিত্বের সাথে আন্ডারগ্র্যাজুয়েট পর্যায়ের শিক্ষা শেষে তিনি জার্মানী, আমেরিকা এবং অস্ট্রেলিয়ায় উচ্চশিক্ষা সম্পন্ন করেন। পরবর্তীতে মৃত্যু পর্যন্ত প্রায় ষোল বছর যাবত তিনি অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অফ ক্যানবেরায় শিক্ষকতা করছিলেন। ড. মাজহারের পারিবারিক আদি নিবাস ময়মনসিংহের চর হরিপুর এলাকায়।
অস্ট্রেলিয়ায় আইপিডিসির কর্মকান্ডে নেতৃস্থানীয় ও নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে ভূমিকা রাখার মাধ্যমে ড. মাজহার বাংলাদেশী মুসলিম কমিউনিটির পাশাপাশি বৃহত্তর মুসলিম কমিউনিটির জন্যও স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজ করতে সব সময় সচেষ্ট ছিলেন। পরিচিতরা জানান, তিনি ব্যক্তিজীবনে সহজ সরল জীবন যাপনে অভ্যস্ত, নিরহংকারী, কর্মঠ এবং সদা হস্যোজ্জ্বল একজন মানুষ ছিলেন। নানা ধরণের অসংখ্য কাজের পাশাপাশি ইসলামিক স্কুল অফ ক্যানবেরা’র অন্যতম একজন উদ্যোক্তা ও বোর্ড সেক্রেটারী এবং ক্যানবেরা’র বেলকনেন মসজিদ প্রজেক্টের একজন সংগঠক হিসেবে অস্ট্রেলিয়ান মুসলিম কমিউনিটিতে তিনি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিলেন। ড. মাজহারের সহকর্মী ও সতীর্থরা তাঁর রুহের মাগফেরাতের জন্য এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের ধৈর্য্যধারণের তওফিকের জন্য সবার কাছে দোয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন। এছাড়াও আইপিডিসির সকল সদস্যদের পক্ষ থেকে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি ড. মনিরুজ্জামান সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন।
Leave a Comment
Your email address will not be published. Required fields are marked with *