728 x 90

সিডনিতে বৈধ রেমিট্যান্স পাঠানোর সফল সচেতনতা সভা

– সুপ্রভাত সিডনি রিপোর্ট বৈধপথে রেমিটেন্স প্রেরণে প্রবাসীদের মধ্যে সচেতনতা ও উৎসাহিত করার লক্ষ্যে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে একটি অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত ৩১ জানুয়ারি ২০২৫ শুক্রবার বাংলাদেশ হাইকমিশন এবং বাংলাদেশ কনসুলেট জেনারেল সিডনির যৌথ উদ্যোগে ওই সভা অনুষ্ঠিত হয়। সিডনিতে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল মো. শাখাওয়াত হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন

– সুপ্রভাত সিডনি রিপোর্ট

বৈধপথে রেমিটেন্স প্রেরণে প্রবাসীদের মধ্যে সচেতনতা ও উৎসাহিত করার লক্ষ্যে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে একটি অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত ৩১ জানুয়ারি ২০২৫ শুক্রবার বাংলাদেশ হাইকমিশন এবং বাংলাদেশ কনসুলেট জেনারেল সিডনির যৌথ উদ্যোগে ওই সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সিডনিতে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল মো. শাখাওয়াত হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ হাইকমিশন ক্যানবেরার চার্জ ড্যা অ্যাফের্য়াস ড. দেওয়ান মোঃ শাহারিয়ার ফিরোজ।

চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স মতবিনিময়কালে উল্লেখ করেন, প্রবাসীদের কল্যাণে কাজ করছে বাংলাদেশ সরকার। প্রবাসীদের কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

এ সময় বাংলাদেশ হাইকমিশনের শ্রম কল্যাণ উইংয়ের কাউন্সেলর মো. সালাহউদ্দিন প্রবাসীদের ওয়েজ আরনার্স ডেভোলপমেন্ট বন্ডে বিনিয়োগ করার আহ্বান জানান। তিনি প্রবাসীদের কল্যাণার্থে বাংলাদেশ সরকার গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ অবহিতকরণ সভায় উপস্থাপন করেন।

সভায় বক্তারা বলেন, বৈধ চ্যানেলের মাধ্যমে প্রবাসীদের কষ্টার্জিত অর্থ দেশে পাঠোনোর ফলে দেশ উপকৃত হচ্ছে। প্রবাসীদের অবদানকে উৎসাহিত করতে বাংলাদেশ সরকার প্রবাসীদের প্রেরিত রেমিটেন্সের ওপর সরাসরি ২ দশমিক ৫ শতাংশ নগদ প্রণোদনা দিচ্ছে। উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কমিউনিটির সিনিয়র নেতা লিয়াকত আলী স্বপন, রুহুল আহমেদ সওদাগর মনজুরুল আলম বুলু এবং আব্দুল্লাহ ইউসুফ শামীম ।
আরো উপস্থিত ছিলেন এ এন এম মাসুম, ডক্টর শফিকুর রহমান,আশরাফুল আলম রনি, মোহাম্মদ জাকির হোসেন রাজু, ইকবাল চৌধুরী (গ্লেনফিল্ড),সোহেল রানা,আবুল হাসান,বাচ্চু, লেনিন, আব্দুল কুদ্দুসসহ আরো অনেকে।

বাংলাদেশ কম্যুনিটির সিনিয়র নেতা রুহুল আহমেদ সওদাগর বলেন, আজকের এই রেমিটেন্স বিষয়ক মহতি অনুষ্ঠানের জন্য আমি মাননীয় কনস্যুলেট জেনারেল, সিনিয়র স্টাফ ও অন্যান্য সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। দেশের কল্যানে আমরা বিদেশে অবস্থানরত সকল রেমিটেন্স যোদ্ধারা বাংলাদেশে বৈধভাবে টাকা পাঠানোর অনেক গুরুত্ব আছে। এই বিষয়ে মাননীয় উপস্থাপক বুঝিয়ে বলেছেন। আশা করি আমরা সকলেই দেশের কল্যানে বৈধ উপায়ে টাকা পাটাবো।
কনস্যুলেট সেবা বা Service এর ব্যাপারে দুই একটি অভিযোগ থাকলেও আমি বিভিন্ন সময়ে Consulate Office এ এসে বেশ ভাল Service পেয়েছি। বাংলাদেশ এম্বাসি বা কনসুলেট জেনারেল এর প্রতি আমার বিশেষ একটি অনুরোধ, আপনারা Sydney Convention Centre, Darling Harbour এ একটি International বানিজ্য মেলা করেন। এর ফলে দেশি-বিদেশি অনেকেই বাংলাদেশে Investment করার বা ব্যাবসা- বানিজ্য করার জন্য আগ্রহী হবে।

বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ , সাংবাদিক ও ব্যবসায়ী প্রফেসর ডঃ শফিকুর রহমান বলেন – রেমিটেন্স প্রবাহে মুল বাঁধা হচ্ছে ব্যাংকিং চ্যানেলে টাকা না পাঠিয়ে নন-বাঙ্কিং চ্যানেলে টাকা পাঠানো। তাই, নন-বাঙ্কিং চ্যানেল গুলি বন্ধ করা গেলে রেমিটেন্স প্রবাহ বহুগুণে বৃদ্ধি পাবে।

অস্ট্রেলিয়া থেকে প্রকাশিত একমাত্র সংবাদপত্র সুপ্রভাত সিডনির প্রধান সম্পাদক আব্দুল্লাহ ইউসুফ শামীম বলেন, কনসাল জেনারেল মো. শাখাওয়াত হোসেন এবং বাংলাদেশ হাইকমিশন ক্যানবেরার চার্জ ড্যা অ্যাফের্য়াস ড. দেওয়ান মোঃ শাহারিয়ার ফিরোজের কষ্ট বিফলে যায়নি, এতো সুন্দর একটি অনুষ্ঠান উপহার দেবার জন্য দূতাবাসের সকল স্টাফ ও বিশেষ করে উপরে উল্লেখিত দুজনকে অস্ট্রেলিয়ার বাংলাদেশ কমুনিটির পক্ষ থেকে অশেষ ধন্যবাদ ও অভিনন্দন।

টি আরো বলেন- যদিও বিগত প্রায় ১৬টি বছর বিশেষ একটিদল দূতাবাস ও কনসাল অফিসকে কুক্ষিগত করে রেখেছিল এবং ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে। আজকে এতগুলো বছর পর এভাবে সর্বস্তরের কমিউনিটির নেতৃবৃন্ধকে নিয়ে একটি সফল অনুষ্ঠান করতে পেরেছেন এজন্য আবারো মোবারকবাদ জানাই।

এতবড় অস্ট্রেলিয়া মহাদেশে আমাদের দেশীয় কোনো ব্যাঙ্ক নেই,যদিও আওয়ামী আমলে সিডনিতে একটি ব্যাঙ্ক কিছুদিন চালিয়েছিলো , কিন্ত সেখানেও আওয়ামী দোসরদের কর্মকান্ডে ব্যাঙ্ক বন্ধ করে ভেগে যেতে বাধ্য হয়েছেন। আগামীতে দলীয় প্রভাববিহীন একটি ব্যাঙ্ক চালু করা সময়ের দাবি। তবে হ্যা, অবৈধভাবে বা হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাঠাতে যেমন কোনো ফি দিতে হয়না, ঠিক সেদিকেও লক্ষ রাখতে হবে। সর্বনিম্ন বা নামে মাত্র যৎসামান্য ফি ধরা যেতে পারে যা নাকি কারো গায়ে লাগবেনা। তবেই হয়তোবা বেশিরভাগ মানুষ উৎসাহিত হবে বৈধ পথে দেশে টাকা পাঠাতে।

প্রজেক্টারের সাহায্যে আয়োজকরা একটি সুনির্দিষ্ট ছকের মাধ্যমে গ্রাফ এবং বিভিন্ন বিষয়বস্তু তুলে ধরেন এবং তা বিশদভাবে ব্যাখ্যা করেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি নিম্নগামী গ্রাফকে উদ্দেশ্য করে অস্ট্রেলিয়ান লিবারেল পার্টির অন্যতম নেতা ও বিশিষ্ঠ ব্যবসায়ী , এ এন এম মাসুম মন্তব্য করেন, এই গ্রাফের নিম্নগতি মূলত গত ১৬ বছরের চলমান লুটপাটের বিরুদ্ধে জনগণের চরম ক্ষোভ এবং প্রতিবাদের বহিঃপ্রকাশ। টাকা পয়সা লুটপাট করে বাহিরে পাচারের পথ সুগম করতেই শিক্ষার্থীদের ফাইল বন্ধ করা হয়েছিল। কারন বেশিরভাগ হুন্ডী ব্যাবসার নায়ক এই অবৈধ আওয়ামী মন্ত্রী এমপিরা।

তারপর, তিনি আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্থাপন করেন। তিনি বলেন, “কেন অস্ট্রেলিয়ায় উচ্চশিক্ষা নিতে আসা শিক্ষার্থীদের ফাইল আটকে রাখা হয়েছে?” এস এস টিভির জনপ্রিয় লাইভ স্ট্রিমার এ এন এম মাসুম তার বক্তব্যে আরও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “গত ফ্যাসিস্ট সরকারের অনেক মন্ত্রী-এমপির অবৈধ উপার্জন রক্ষার্থে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের উপর এই অবিচার চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল।” তিনি বর্তমান সরকারের কাছে জোরালো আবেদন জানান, যেন অবিলম্বে শিক্ষার্থীদের ফাইল পুনরায় খোলা হয় এবং তাদের পড়াশোনার পথ সুগম করা হয়।

বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোঃ ইকবাল চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগ প্রক্রিয়া সহজীকরণ এবং বিদেশী বিনিয়োগকারীদের জন্য আরও নমনীয় শর্তাবলী প্রতিষ্ঠা এবং পূর্ববর্তী সরকারের বিনিয়োগ দুর্নীতি, যার মধ্যে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে অনৈতিক কমিশন গ্রহণ অন্তর্ভুক্ত সেগুলো সম্পর্কে সতর্ক ঠকাতে হবে। তিনি অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাসের সহায়তায় সিডনিতে একটি বিনিয়োগ সেল প্রতিষ্ঠারও অনুরোধ করেন, যার মূল কাজ হবে বাংলাদেশের বিনিয়োগ ক্ষেত্রগুলি তুলে ধরা এবং অস্ট্রেলিয়ান বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে উৎসাহিত করা।

আরেকজন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সোহেল রানা বলেন, ব্যাংক অথবা বিদেশে অর্থ প্রেরণকারী প্রতিষ্টানের সাথে ব্যবসায়িক সম্পর্ক তৈরী করতে হবে। যেমন ওয়েস্টার্ন ইউনিয়ন রিয়া মানি ট্রানফার এ ধরনের কোম্পানির সাথে কর্পোরেট চুক্তির মাধ্যমে ডিসকাউন্ট ফি ,প্রতিযোগিতামূলক বিনিময় হার নির্ধারণ করতে হবে যাতে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ভালো সেবা পায়। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশী মিডিয়া ও বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে বিস্তারিত বিশদ প্রচার ও প্রচারণা চালনা প্রয়োজন। বাংলাদেশ থেকে আনীত আমদানিকৃত পণ্যের মোড়কে স্টিকার সংযুক্ত করা যেতে পারে -“বৈধ পথে রেমিটেন্স পাঠান “। ব্যবসায়ী, কমিউনিটি লীডার ও সাধারণ বাংলাদেশিদের একটি ডাটাবেস তৈরী করে নিয়মিত মেসেজ দিয়ে উৎসাহিত করা যেতে পারে।

বাংলাদেশী রিফিউজি অফ অস্ট্রেলিয়ার সাধারণ সম্পদক মোঃ শফিকুল ইসলাম বলেন: আমি অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী একজন রেমিটেন্স যোদ্ধা ২০০৮ সালে মালয়েশিয়ায় আমার বাবার কাছে যাই। ২০১২ সালে আমি জীবন মরণের ঝুঁকি নিয়ে নৌকা করে অস্ট্রেলিয়াতে আসি। আমি একজন
Construction worker with high skill and qualifications. আমি কঠোর পরিশ্রম করি এবং বিপুল পরিমাণ অর্থ বাংলাদেশ রেমিট্যান্স পাঠাই,যার দ্বারা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কাঠামোকে শক্তিশালী করে। শুধু আমি না আমি ছাড়া আরও ৩০০ জন বাংলাদেশি নৌকা করে অস্ট্রেলিয়াতে এসেছে তারা প্রত্যেককেই কঠোর পরিশ্রম করে এবং এই পরিশ্রমের টাকা বাংলাদেশে রেমিটেন্স পাঠায়। আমাদের এই প্রত্যেকটা লোক মাসে ৪ থেকে ৫ লক্ষ টাকা দেশে রেমিটেন্স পাঠায়।

কিন্তু দুঃখের বিষয় হইতেছে যে, আমাদের কাছে কোন স্থায়ী ভিসা নেই। আমরা অস্থায়ী ভিসাতে অবস্থিত করতেছি। আমি বাংলাদেশ দূতাবাস এবং বাংলাদেশ সরকার তথা ডক্টর ইউনুস কে অনুরোধ করবো : আপনারা আনুষ্ঠানিকভাবে অস্ট্রেলিয়ার সরকারের সাথে পরামর্শ করে আমাদেরকে একটা স্থায়ী বাসনের জন্য ব্যবস্থা করা হোক এবং আমরা যেসকল বাংলাদেশী সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত আছি সে সকল সুযোগ-সুবিধা আমাদেরকে প্রদান করা হোক। যেমন আমাদের অনেকের পাসপোর্ট নাই, পাসপোর্ট নিতে গেলে অনেক রকম হয়রানির শিকার হতে হয়। পাসপোর্ট ছাড়া দেশে কোন অ্যাকাউন্ট খুলতে পারি না, পাসপোর্ট ছাড়া বাংলাদেশে কোন ইনভেস্ট করতে পারি না ইত্যাদি। একজন বাংলাদেশী নাগরিক হিসেবে একজন রেমিটেন্স যোদ্ধা হিসাবে আমাদের এ সকল সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা হোক। দয়া করে আপনারা একটু সদয় হবেন আমাদের প্রতি, আমাদেরকে সাপোর্ট করবেন, পারলে বাংলাদেশ এবং অস্ট্রেলিয়া সরকারের কাছে চিঠি লিখবেন আমাদের স্থায়ী নির্বাসনের জন্য।

পতিত স্বৈরাচারী সরকারের কিছু উচ্ছিষ্টভোগী ব্যক্তির উপস্থিতিতে অনেকেই তাদের প্রতি বিরক্তি প্রকাশ করে আয়োজকদের কাছে জানতে চান, “এদেরকে কে নিমন্ত্রণ করেছে?” উত্তরে আয়োজকরা বলেন, “আমরা ব্যক্তিগতভাবে তাদেরকে নিমন্ত্রণ করিনি, তারা ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দেখে হয়তো এসেছেন।”

অত্যন্ত সুন্দর ও সাবলীলভাবে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানের জন্য উপস্থিত কমিউনিটির শীর্ষ নেতারা কনসাল ও দূতাবাসকে বিশেষ ধন্যবাদ জানান। অনুষ্ঠান শেষে উপস্থিত অতিথিদের জন্য একটি মনোমুগ্ধকর নাস্তা পরিবেশন করা হয়েছিল, যা সবার কাছে প্রশংসিত হয়েছে।

পুরো অনুষ্ঠানের ভিডিও এবং স্থির চিত্র ধারণ করেন অস্ট্রেলিয়া থেকে প্রকাশিত একমাত্র বাংলা পত্রিকা এবং এস এস টিভির লাইভ স্ট্রিমার মোহাম্মদ জাকির হোসেন রাজু।

Read More

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked with *

সর্বশেষ পোস্ট

Advertising