
আতিকুর রহমান (সিডনি): ডক্টর আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর রহঃ এর উধৃত এক ঘটনা। ঘটনাটি প্রায়ই আমার মনে পড়ে। মাঝে মধ্যে অনেককেই বলি, তাদের উৎসাহীত করি। আসুন রহঃ এর মুখেই শুনি (যদিও উনার বর্ণনা ভাষাগত দিক থেকে ভিন্ন)
এক ভদ্রলোক আমার বাসায় আসলেন। তিনি তার মুছিবত বর্ণনা করে দোয়া চাইলেন। ভদ্রলোক তার এক খন্ড জমিতে ফ্ল্যাট বানাতে এক রিয়াল ইস্টেট কোম্পানির সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। জমির দলিল হস্তান্তর করেছেন তাদের। বিল্ডিং তৈরী হলে চুক্তিমোতাবেক তাকে কয়েকটি ফ্ল্যাট দেয়া হবে বাকীগুলো রিয়াল ইস্টেট কোম্পানি নেবে। এখন রিয়াল ইস্টেট কোম্পানি তার জমিতে ফ্ল্যাটও বানাচ্ছে না আবার তাকে তার জমির কাগজও বুঝিয়ে দিচ্ছেনা। পার্টি খুব শক্ত জোড় করার সুযোগ নেই। হুজুর দোয়া করবেন।
আমি সব শুনে ভদ্রলোককে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায়ের পরামর্শ দিলাম। বললাম তাহাজ্জুদ নামাজে সিজদায় গিয়ে আল্লাহ তা’আলার নিকট নিজের মুছিবতের কথা বর্ণনা করুন। আল্লাহ তা’আলার নিকট সাহায্য চান। ভদ্রলোক আমার কথায় রাজি হয়ে চলে গেলেন।
এর মধ্যে অনেকদিন অতিবাহিত হয়ে গেছে। একদিন আমি টিভি প্রোগ্রামের জন্য বাসার বাহিরে যাবার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। এমন সময় সেই ব্যক্তি বাসায় এসে হাজির। নিজে থেকেই সে বললোঃ হুজুর আপনি যে আমল শিখিয়ে দিয়েছিলেন তা শুরু করার কিছুদিনের মধ্যেই একদিন বাসার দরজায় কড়া নাড়ার শব্দ। দরজা খুলে দেখি সেই রিয়াল ইস্টেট কোম্পানির লোক জমির দলিল হাতে দাড়িয়ে। বলেঃ আপনার জমির কাগজ ফেরত নিন। আমরা আসলে আপনার জমিতে কিছু করতে পারলাম না। তাই আপনার জমির কাগজ ফেরত দিতে এসেছি।
হুজুর, আমি তাদের কিছুই বলিনি। নিজে থেকেই তারা আমার জমির কাগজ ফেরত দিয়ে দিয়েছে। আমি খুশীও হয়েছি আবার কষ্টও লাগছে। মনে হচ্ছে আরও কিছুদিন পরে জমির কাগজ ফেরত দিলেই ভালো হতো। আল্লাহর দরবারে আরও কিছুদিন দোয়া করতে পারতাম।
সুপ্রিয় ভাই-বোনেরা রাতের শেষ অংশে সিজদায় পড়ে আল্লাহ তা’আলার নিকট ইবাদতের স্বাদ যারা একবার পেয়ে যায় তারা এ স্বাদ কিছুতেই ছাড়তে চায় না। আল্লাহ আমাদের সবাইকে তৌফিক দান করুক, আ-মীন।