728 x 90

  টুকরো খবর : দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন : উত্তাল বাংলাদেশ

  কায়সার আহমেদ: জ্বলছে ঢাকা, জ্বলছে সমগ্র বাংলাদেশ। বিএনপি ও তার সমমনা বিরোধী দলগুলোর তীব্র বিরোধিতা ও প্রতিরোধের মাঝে, প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল গত ১৫ই নভেম্বর বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা করেন। তার ঘোষিত তফশিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ১৭ই ডিসেম্বর। ১৮ই ডিসেম্বর থেকে বৈধ প্রার্থীরা ও তাদের দল প্রচার

 

কায়সার আহমেদ: জ্বলছে ঢাকা, জ্বলছে সমগ্র বাংলাদেশ। বিএনপি ও তার সমমনা বিরোধী দলগুলোর তীব্র বিরোধিতা ও প্রতিরোধের মাঝে, প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল গত ১৫ই নভেম্বর বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা করেন। তার ঘোষিত তফশিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ১৭ই ডিসেম্বর। ১৮ই ডিসেম্বর থেকে বৈধ প্রার্থীরা ও তাদের দল প্রচার শুরু করতে পারবে। নির্বাচনের তারিখ ৭ জানুয়ারি ২০২৪। তিনি জানান যে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার জন্যে তাকে সময় মত নির্বাচন এর আয়োজন করতেই হবে।

তফশিল ঘোষণার পর থেকে ভোটগ্রহণ সকল কার্যক্রম নির্বিঘ্ন ও নিরপেক্ষ করার পদক্ষেপ নেয়া শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন। বাংলাদেশকে নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেয়ার উদ্দেশ্য নিয়ে, এবারই দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মত নির্বাচন পূর্বে অনিয়ম প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রনের লক্ষ্যে ৩০০টি সংসদীয় আসনে একজন যুগ্ম জেলা জজ বা প্রয়োজনরোধে সিনিয়র সহকারী জজ বিশিষ্ট ৩০০টি নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটি গঠন করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশনের সম্মতি না নিয়ে প্রশাসন ও আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার কোন সদস্যকে বদলি না করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে সকল সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে। এদিকে জাতীয় নির্বাচনের তফশিল প্রত্যাখান করে সমগ্র দেশের বিভিন্ন স্থানে বিএনপি ও তার সমমনা দলগুলোর আহ্বানে চলছে অবরোধ, ককটেল বিস্ফোরণ, বাসে আগুন, ট্রেন লাইনে অগ্নিসংযোগ। এমনকি পুলিশের গাড়ীতে চলছে হামলা।

এদিকে সরকারী দল আওয়ামী লীগ সাধারন সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বিরোধী দলকে মত পাল্টে নির্বাচনে অংশগ্রহনের আহ্বান জানিয়ে বলেন, দরজা খোলা আছে, আসুন অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতা করুন। তিনি আরো বলেন আমরা একা ক্ষমতায় যেতে চাই না। সবাইকে নিয়ে ভোটের লড়াইয়ে যেতে চাই। তিনি আরো বলেন দেশ সংবিধান মতেই চলবে তাই সংবিধানের বাইরে যাবার কোন সুযোগ নেই। সংলাপের বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা সংলাপের পক্ষে। ২০১৮ সালে বিএনপির সংগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বয়ং দুবার সংলাপ করেছেন। ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে ফোন করেছেন। কিন্তু প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া গালাগাল করেছেন। তার ছেলে মারা গেছে, তখন প্রধানমন্ত্রী গিয়েছেন, তাকে ঢুকতে দেয়া হয়নি। এবারও রাষ্ট্রপতি তাদের ডেকেছেন, নির্বাচন কমিশন ডেকেছেন। তারা সাড়া দেয়নি। এখন নির্বাচনের তফশিল হয়ে গেছে। এখন সর্বময় ক্ষমতা সংবিধান ও নির্বাচন কমিশন এর কাছে।

এদিকে বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের তফশিল ঘোষনার পর নিজেদের অবস্থান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার বলেন, বাংলাদেশের জনগণের মতোই যুক্তরাষ্ট্রও বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চায়। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের বাংলাদেশের নির্বাচনি তফশিল ঘোষনা পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশে বিরোধী দলগুলোর প্রতিবাদ-বিক্ষোভ উপেক্ষা করে ৭ জানুয়ারি সংসদ নির্বাচনের তারিখ ঘোষনা করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক সমঝোতার আহ্বানকে উপেক্ষা করা হয়েছে। প্রধান বিরোধী সহ বেশ কিছু রাজনৈতিক দল এটি প্রত্যাখান করেছে এবং তাদের বিরুদ্ধে দমন-পীড়ন চলছে। এই অবস্থায় একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজন এবং সরকারকে জবাদিহির আওতায় আনতে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান কি হতে পারে?

জবাবে মার্কিন কর্মকর্তা ম্যাথু মিলার বলেন, বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন নিয়ে আমরা ধারাবাহিক যে বার্তা দিয়ে এসেছি তার কোন পরিবর্তন হয়নি। বাংলাদেশের জনগণ যা চায়, যুক্তরাষ্ট্রও তাই চায়। আর সেটি হলো শান্তিপূর্ণ অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান। তিনি আরো বলেন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে আলাদা করে কোনো একক রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করে না; যুক্তরাষ্ট্র একটি রাজনৈতিক দলের উপর অন্য রাজনৈতিক দলকে প্রাধান্য দেয় না। যুক্তরাষ্ট্র সকল পক্ষকে সংযম প্রদর্শন, সহিংসতা এড়াতে এবং শান্তিপূর্ণভাবে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে একসাথে কাজ করার আহ্বান জানায়। এদিকে তফশিল ঘোষনার পর থেকেই দেশব্যাপি চলছে লাগাতার অবরোধ, হরতাল, মিছিল। বিভিন্ন সভা-সমাবেশ করছে বিএনপি জামায়াতে ইসলামী সহ সমমনা দলগুলো।

এদিকে ২২শে নভেম্বর রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভারের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে দাবী করেন যে স্বাধীন বাংলাদেশ, বিদেশি শুভাকাঙ্ক্ষীদের সহযোগিতা ছাড়াই বিদ্যমান আইন অনুযায়ী ২০২৪- এর ৭ই জানুয়ারীর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন করতে সক্ষম বাংলাদেশ। বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের প্রতি এমন আত্মবিশ্বাস আছে রাশিয়ার। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্ররা।

এই প্রসঙ্গে রাশিয়ান মুখপাত্র আরো বলেন, অক্টোবরের শেষের দিকে বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস এবং বিরোধীদলের শীর্ষ নেতাদের বৈঠকের বিষয়ে খবর পাওয়া গেছে। বৈঠকে তারা দেশে ব্যাপক সরকারবিরোধী বিক্ষোভ সংগঠিত করার পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেছেন বলে জানা গেছে। এ ধরনের কর্মকান্ড বাংলাদেশের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের চেয়ে কম কিছু নয়। তিনি আরো বলেন যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আচরণ নগ্নভাবে ভিয়েনা কনভেনশনের লংঘন এবং এটিকে ওয়াশিংটন ও তার মিত্রদের পক্ষ থেকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার শামিল।

ঢাকাস্থ মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে নিয়ে রাশিয়ান মুখপাত্রের উপরোক্ত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রনালয় থেকে প্রতিক্রিয়ায় জানানো হয় যে রাশিয়ান মুখপাত্র ইচ্ছেকৃতভাবে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতি ও পিটা হাসের বিভিন্ন বৈঠক বিষয়াদি ভুলভাবে উপস্থাপন করেছেন। বাংলাদেশের কোন রাজনৈতিক দলকে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন করে না।

এদিকে রাশিয়ান মুখপাত্রের উপরোক্ত বক্তব্যের জবাবে বিএনপি কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বিএনপির সমাবেশ আয়োজনে কোনো বিদেশি কূটনীতিক সহায়তা করেছেন, এমন অনাকাংখিত ও অনভিপ্রেত অভিযোগ ইতিপূর্বে উত্থাপিত হয়নি। এ ধরনের বাস্তবতা-বিবর্জিত বক্তব্য বাংলাদেশের জনগণের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আকাংখার বিরোধী। কার্যত: মিস জাখারোভার দৃষ্টিভঙ্গি গণতন্ত্রকামী জনগনের স্পৃহাকে অবমূল্যায়নের মাধ্যমে, দুর্নীতিগ্রস্থ আওয়ামী লীগ সরকরের ফ্যাসিস্ট শাসনব্যবস্থাকেই সমর্থন করছে। তিনি আরো বলেন রাশিয়ান পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় বিষয়ক মুখপাত্রের বিবৃতি গণতন্ত্রকামী বাংলাদেশিদের অনুভূতিকে প্রচন্ড আঘাত করেছে। নিজেদের অধিকার হারিয়ে, আজ নিজ দেশে পরাধীন আওয়ামী বলয়ের বাইরের সব মানুষ। হাজার-হাজার পরিবার আজও শোকাহত, যাদের স্বজনরা শহিদ হয়েছেন ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের দমন-নিপীড়নে। আজও গণতন্ত্র, বাকস্বাধীনতা ও আইনের অনুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য নিজেদের জীবনবাজি রেখে, হামলা-মামলায় জর্জরিত হয়ে, রাজপথে আন্দোলন করছেন লাখ লাখ মানুষ।

রিজভী আরো বলেন, ইতিহাসের এই সন্ধিক্ষণে বাংলাদেশের জনগন কৃতজ্ঞতার সাথে স্বীকার করে বিশ্বের গণতান্ত্রিক দেশগুলোর ইতিবাচক সমর্থনকে, যার উদ্দেশ্য গণতন্ত্র, সুশাসন, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও মানবাধিকার নিশ্চিত করা। দেশের মানুষ এও প্রত্যাশা করে যে, গণআকাংখার বিরুদ্ধে গিয়ে অন্য কোন বিদেশি রাষ্ট্র, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকারের জনবিচ্ছিন্ন ও গণবিরোধী অপশাসনকে অযাচিত সমর্থন করবে না। পারস্পরিক ব্যবসা-বাণিজ্য রাশিয়ার অবদানকে আমরা গভীরভাবে স্বীকার করি এবং দুই দেশের জনগনের মধ্যে বিদ্যমান সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্কের মূল্যায়ন করি।

বিএনপির প্রত্যাশা রাশিয়া বাংলাদেশের জনগণের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, স্বাধীনতার সংকল্প ও মহান আত্মত্যাগের উপযুক্ত সম্মান করবে। গণমানুষের ভোটাধিকার, মানবাধিকার ও বাকস্বাধীনতাসহ অন্যান্য মৌলিক অধিকার পুনরুদ্ধারের জন্য চলমান সংগ্রামে রাশিয়ার সমর্থন ঐক্যবদ্ধ বাংলাদেশকে উদ্বুদ্ধ করবে। আর তাই বিএনপি বিশ্বাস করে ও আশাবাদি যে বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুন:প্রতিষ্ঠার জন্যে গণতন্ত্রমনা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পাশাপাশি রাশিয়াও ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।

এদিকে নির্বাচনে দলের মনোনয়ন ফরম বিক্রির উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্পষ্টত:ই বলেন দিয়েছে দেশের সংবিধান সমুন্নত রেখে ভোটের মাধ্যমেই সরকার পরিবর্তন হবে। তিনি বলেন আমরা চাই জনগনের ভোটাধিকার অব্যাহত থাকুক। যারা নির্বাচন বানচালের জন্য অগ্নিসংযোগ করছে, তাদের প্রতিহত করতে দেশবাসীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, দীর্ঘ সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আমরা জনগনের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করেছি। সুতরাং যারা সন্ত্রাসবাদের মাধ্যমে নির্বাচন ও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে বানচালের চেষ্টা করছে, তাদের সম্পর্কে জনগনকে সচেতন থাকতে হবে।

তিনি আরো বলেন, ভোটের অধিকার দেশবাসীর অধিকার। ভোট দিয়ে তারা তাদের পছন্দমতো নেতা নির্বাচন করবে, যারা সংসদে বসবে, আইন পাশ করবে, রাষ্ট্র পরিচালনা করবে। যদি কেহ নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করে, অগ্নিসন্ত্রাস অব্যাহত রাখে, তার পরিণতি ভালো হবে না বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। নির্বাচনকে বানচাল করতে অগ্নিসন্ত্রাস করে, মানুষকে পুড়িয়ে মারে, এত সুন্দর রাস্তাঘাট, মেট্রোরেল থেকে শুরু করে থার্ড টার্মিনাল সবকিছু আমাদের সরকার করেছে; এগুলো যারা ধ্বংস করতে যাবে আমি জনগনকে আহ্বান করছি তাদের হাত ভেঙ্গে দিন, তাদের প্রতিরোধ করুন। যাদের জনগনের প্রতি আস্থা নেই তারাই নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছে। বিএনপির মহাসমাবেশ-পরবর্তী হরতাল-অবরোধ চলাকালে সমগ্র বাংলাদেশে প্রচুর সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ সদর দপ্তরের সূত্রে জানা যায় যে এর মধ্যে ৩১০টি ভাঙচুর এবং ৩৭৬টি অগ্নিসংযোগ হয়েছে।

সম্প্রতি সিলেট সফরকালে জেলা প্রশাসক ও জেলা রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে নির্বাচন কমিশনার আনিছুর রহমান বলেন যে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা থাকায় যথাসময়ে নির্বাচন করতেই হবে। তবে বিশেষ কোন দল নির্বাচন অংশগ্রহনে আগ্রহ দেখালে এখনো তফশিল পেছানোর সুযোগ রয়েছে। তারা নির্বাচনে এলে আমরা বিবেচনা করবো। কারণ পরে যথেষ্ট সময় আছে। তবে এখন পর্যন্ত কারও কাছ থেকে সেরকম কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। তিনি বলেন, নির্বাচন কারো জন্যে অপেক্ষ করবে না। সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার জন্য নির্বাচন করতে হবে, না হয় সাংবিধানিক শূন্যতা সৃষ্টি হবে।

তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন চাচ্ছে নির্বাচনে সকল দলের অংশগ্রহণ। কিন্তু কোনো দল না এলে নির্বাচন কমিশনের কিছু করার নেই। তবে কমিশন আশা করছে নির্বাচনে সকল দলের অংশগ্রহন। ইতিহাস ঘাটলে দেখা যাবে শতভাগ দল কখনোই নির্বাচনে অংশগ্রহন করেনি। অধিকাংশ দল নির্বাচন করলেই নির্বাচনি আমেজ চলে আসে। কমিশনে নিবন্ধিত ৪৪টি দলের সবাই নির্বাচনে অংশগ্রহন করুক সেটাই আমরা চাই। বিভিন্ন চলমান রাজনৈতিক কর্মচূচি চলছে, সেটাকে কেন্দ্র করে বিচ্ছিন্নভাবে কিছু ঘটনা ঘটছে বটে তবে তাতে নির্বাচনি পরিবেশ বিঘ্ন হওয়ার মতো নয়।

বাংলাদেশে যে দলগুলো নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত সেগুলো হলো: লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি – (এলডিপি), জাতীয় পার্টি – (জেপি), বাংলাদেশ সাম্যবাদী দল- (এমএল), কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), গণতন্ত্রী পার্টি, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, বিকল্পধারা বাংলাদেশ, জাতীয় পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), জাকের পার্টি, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি), বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি), জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, গণফোরাম, গণফ্রন্ট, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওযামী পার্টি (বাংলাদেশ ন্যাপ), বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, ইসলামী ঐক্যজোট, বাংলাদেশ ফেলাফত মজলিশ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, খেলাফত মজলিশ, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (বিএমএল), বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট (মুক্তিজোট), বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট (বিএনএফ), জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম), বাংলাদেশ কংগ্রেস, তৃণমূল বিএনপি, ইনসানিয়াত বিপ্লব বাংলাদেশ, বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (বাংলাদেশ জাসদ), বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম) ও বাংলাদেশ সুপ্রীম পার্টি (বি,এস,পি)।

বাংলাদেশে তিনটি তত্বাবধায়ক সরকার পরিচালিত তিনটি নির্বাচন মোটামুটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়েছিলো। তারপরও যে দল ক্ষমতায় আসতে পারেনি, তারা নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন। ১৯৯১ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বিএনপি ১৪০টি আসনে জয় লাভ করে সরকার গঠন করলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ৮৮টি আসন পায়। তখন আওয়মী লীগ নেত্রী দাবী করেন নির্বাচনে সুক্ষ কারচুপি হয়েছে। অন্যদিকে ১৯৯৬ সালে জুন মাসে আওয়ামী লীগ ১৪৬ আসনে জয় লাভ করে সরকার গঠন করলে বিএনপি পেয়েছিলো ১১৬টি আসন। তখনো বিএনপি সোচ্চার ছিলেন যে নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে। এখানে উল্লেখ্য যে ১৯৯৬ সালের নির্বাচন তত্বাবধায়ক সরকার গঠনের বিতর্কে আওয়ামী লীগ নির্বাচন বয়কট করলে, বিএনপি সরকার আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়ে ফেব্রুয়ারী ১৫ তারিখে একটি নির্বাচন করে সরকার গঠন করলেও আওয়ামী লীগ তীব্র আন্দোলন গড়ে তুললে সেই সরকার পদত্যাগ করে নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠিত করে।

 

Read More

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked with *

সর্বশেষ পোস্ট

Advertising