728 x 90

ভালোবেসে গেলাম শুধু ভালোবাসা পেলাম না 

 ড. মোঃ নুরুল আমিন: স্বাধীনতার মাস এই মার্চ মাস। ১৯৭১ সালে এই মাসেই বাংলাদেশের মানুষ স্বাধীনতা পেতে অংশ নেয় এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে। দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন হয়েছিলো বাংলাদেশ। লক্ষ শহীদের রক্তের অর্জন এই স্বাধীনতা। এই স্বাধীনতার মাস এলেই কিছু বুদ্ধিজীবীদের মুখে ভারতে বন্দনা শোনা যায় অহরহ। ভারত নাকি আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছে! আমাদের

 ড. মোঃ নুরুল আমিন: স্বাধীনতার মাস এই মার্চ মাস। ১৯৭১ সালে এই মাসেই বাংলাদেশের মানুষ স্বাধীনতা পেতে অংশ নেয় এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে। দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন হয়েছিলো বাংলাদেশ। লক্ষ শহীদের রক্তের অর্জন এই স্বাধীনতা। এই স্বাধীনতার মাস এলেই কিছু বুদ্ধিজীবীদের মুখে ভারতে বন্দনা শোনা যায় অহরহ। ভারত নাকি আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছে! আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতের সহযোগিতা অতুনলীয়। কিন্তু ভারত আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছে এভাবে বললে আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের মহান ত্যাগ অস্বীকার করা হয়। আর ভারত যে একান্ত স্বার্থহীনভাবে বাংলাদেশকে স্বাধীন করতে সাহায্য করেছে তাও কিন্তু নয়। যদিও মুক্তিযুদ্ধে ভারত অবদান অনেক, তবু ভারত কিছুটা কুট চাল চেলেছেন নিজেদের স্বার্থেই । ভারত চেয়েছিলেন পাকিস্তানকে ভেংগে দুর্বল করা, নিজেদের আধিপত্য শক্তিশালী করা। “ইনসাইড দি র” বইয়ের ৭৮ পৃষ্ঠায় তাদের পরিকল্পনা এভাবেই এসেছে “ভালো দেখিয়েছেন, কাজটা ভালোভাবেই হয়েছে (পাকিস্তান দ্বিখণ্ডিকরন), এখন পরবর্তী কাজটা নিয়ে ভাবতে হবে।” পরবর্তী কাজটা ছিলো সিকিম।  বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতেরও কোন স্বার্থ ছিলো। একেবারেই নিঃস্বার্থভাবে ভারত সহযোগিতা করেনি। যুদ্ধের শেষে পাকিস্তানিদের থেকে খুব সুকৌশলে আত্নসমর্পণের দলিল সই করে নিয়েছেন। পাকিস্তানকে হয়তো একটি শিক্ষা দিয়েছেন – এটা প্রমান রাখার জন্য। পাকিস্তানি বাহিনীর উপর ভারতীয় বাহিনীর বিজয় উল্লাস করার জন্য। তা না হলে, যে বাংগালী নিজের রক্ত ঢেলে দিয়ে দেশ প্রেমের নিমিত্তে ৯ মাস যুদ্ধ করেছেন, তাদের কাছে আত্নসমর্পণ করা হলো না কেন? মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল এম এ জি ওসমানী ছিলো আমাদের। কিন্তু ভারতীয় জেনারেলের হাতে আত্নসমর্পণ করল কেন? উল্লেখ্য যে আত্নসমর্পনের ৭ দিন পর এম এ জি ওসমানী ভারত থেকে বাংলাদেশে ফেরত আসে। ভারত সুকৌশলে তাকে কি ভারতে আটকে রেখেছিলো? এর উত্তর অজানা। যখন ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে পাকিস্তানী সৈন্যরা আত্নসমর্পন করে ভারতীয় জেনারেলের কাছে তখন মুক্তিযোদ্ধা এবং বাংলাদেশের মুক্তিপিপাসু জনগণ শুধু এই দৃশ্য তাকিয়ে দেখেছেন। এভাবেই বর্ননা করেছেন মুক্তিযুদ্ধের নয় নম্বর সেক্টর কমান্ডার মেজর জলিল তার লেখা “অরক্ষিত স্বাধীনতাই পরাধীনতা” নামক বইয়ে। মেজর জলিলের বর্ননায় ১৭ ডিসেম্বর খুলনাতেও একটি আত্নসমর্প্ননের অনুষ্ঠান হয়। মেজর জলিল সেই এলাকার সেকটর কমান্ডার হওয়া স্বত্বেও ভারতীয় বাহিনী মেজর জলিলের কাছে পাকিস্তানী বাহিনীকে আত্নসমর্পন করতে দেয়নি! এরপরে ভারতের স্বার্থ সুস্পষ্টভাবে পরিলক্ষিত হয়। যুদ্ধের শেষেরদিকে পাকিস্তানি বাহিনীর ফেলে যাওয়া ট্যাংক, গাড়ী ও অন্যান্য সামরিক সরঞ্জাম ভারতীয় বাহিনী লুট করে ভারতে নিতে থাকে । মেজর জলিল খুলনা সীমান্তে ভারতীয় বাহিনীর এ কাজে বাধা দেয়। যুদ্ধ হয়। পরে সে গ্রেফতার হয়। ” আমার স্বাধীন বাংলাদেশে আমি প্রথম রাজবন্দী ” এভাবেই তিনি বর্ননা করেছেন তার বইয়ে। 

মুক্তিযুদ্ধে  সহায়তার অন্তরালে ভারত কিভাবে  কুটচাল চেলেছেন তার প্রমাণ হচ্ছে , বাংলাদেশের মুক্তিপিপাসু জনগণ যখন প্রানপনে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে, তখন ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার সহায়তায় শেখ ফজলুল হক মনি, সিরাজুল আলম খান, আব্দুর রাজ্জাক ও তোফায়েল আহমেদের নেতৃত্বে “মুজিব বাহিনী” নামে প্রবাসী সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে একটি সশস্ত্রবাহিনী গঠন করা হয়। এর ফলে স্বাধীনতা সংগ্রামের আন্দোলন অনেকটাই বিভক্ত হয়ে যায়। ১৯৭১ এর আগষ্ট মাসে তাজ উদ্দিন আহমেদ দিল্লি সফরে গিয়ে মুজিব বাহিনীর কর্মকাণ্ড নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান রামনাথ কাও এবং পি এন হাকসার সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি অভিযোগ করেন যে, মুজিব বাহিনী মুলত সরকারের অধীনের মুক্তি বাহিনীকে মুজিব বাহিনীতে যোগ দেয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করে চলেছেন। মুজিব বাহিনীর কর্মকাণ্ড সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে মঈদুল হাসান রচিত “মুলধারা ৭১” বইটি পড়তে পারেন। আওয়ামীলীগের জাতীয় পরিষদের প্রতিটি সদস্যকে পাহারা দিত মুজিব বাহিনী যাতে তারা ভারতের শিকল থেকে বের না হয়। আসলে ভারত চেয়েছিলও বাংলাদেশকে একটি তাবেদারি রাষ্ট্রে পরিণত করে ভু-রাজনীতিতে তাদের একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার। আর এজন্য যুদ্ধকালীন সময়ে ৭ দফার একটি চুক্তি করেছিলো। যার উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে ভারতের সেনাপ্রধানের নির্দেশে যুদ্ধ পরিচালিত হবে, প্রশাসনের সমস্ত পদে মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়োগ এবং ভারতীয় নাগরিক নিয়োগ করা হবে, বাংলাদেশের কোন সেনাবাহিনী থাকবেনা,  সেনাবিহিনী অনির্দিষ্টকালের জন্য বাংলাদেশে থাকবে ইত্যাদি (তথ্যঃ বাঙ্গালির মুক্তিযুদ্ধে অন্তরালের শেখ মুজিব, ডাঃ কালিদাস বৈদ্য, পৃষ্ঠা ১৬৬-১৬৭)। এরকম একটি চুক্তি দেখে স্বাভাবিকভাবেই যেকোনো বিবেকবান মানুষের মধ্যে এ ধারনা হওয়া বাস্তব যে, বাংলাদেশ আসলে পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ভারতের অধীনে যাচ্ছে অথবা ভারতের তাবেদারি রাষ্ট্রে পরিণত হতে যাচ্ছে। 

বাংলাদেশ ভারতের অধীনে না গেলেও সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি ছিলো ভারতমুখী। নতজানু এই পররাষ্ট্রনীতিতে ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শাসিত বাংলাদেশ সরকার ভারতকে খুশি রাখতে সর্বদাই সক্রিয় ছিলো। কারণ ভারতের সহযোগিতা প্রাপ্ত স্বাধীনতার বাংলাদেশ। আসলে মিত্র শক্তির কৃপায় স্বাধীন বাংলাদেশের গায়ে রয়েছে ভারতের পরানো শেকল। বাংলাদেশ থেকে চাল ও রিলিফ পাচার হতো ভারতে। বাংলাদেশকে শ্মশানে পরিণত করেও স্বাদ মিটেনি ভারতের। আরও চাই। কিন্তু বাংলাদেশ আর কি দিবে! স্বাধীনতা নামের অন্তরালে ভারতের শিকল পড়া জিঞ্জিরে এক ভয়াল দুর্ভিক্ষ দেখে বাঙ্গালী ১৯৭৪ সালে। একদিকে দুর্ভিক্ষে পরাজিত জনতা অন্যদিকে ভারত প্রেমিকদের উল্লাস। জনতা ক্রমশ হয়ে উঠে ভারত বিদ্বেষী। দুর্ভিক্ষে পরাজিত কংকালসার বাঙ্গালী আকাশচুম্বী শেখ মুজিবকে দেখে রাজপথে  আর হাত তোলে না- ১৯৭৪ সালে ২৭ সেপ্টেম্বর লন্ডন থেকে প্রকাশিত স্টেটম্যান পত্রিকায় এভাবেই ব্যাখ্যা করা হয় বংগবন্ধুর অবস্থা। এধরণের অনেকগুলো বিদেশি সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদন নিয়ে প্রকাশিত হয়েছে একটি বই “বিদেশী সাংবাদিকের দৃষ্টিতে শেখ মুজিবের বাংলাদেশ “। যাহোক ১৯৭১ সালে জন্ম নেয়া সেই বাংলাদেশ এখন পঞ্চাশে পৌঁছেছে। ক্ষমতার পালাবদল এবং নানা রকম রাজনৈতিক হিংসা প্রতিহিংসায় এগিয়ে চলছে বাংলাদশে। সরকার পরিবর্তনের ধারায় ভারত বন্দনা কিছুটা ভাটা পড়লেও আওয়ামী সরকার আমলে এই বন্দনা বেড়ে যায়। ভারত প্রেমিকদের উল্লাস বাড়ে। স্বয়ং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীও একদা বলেছিলেন যে বাংলাদেশ ভারতকে যত কিছু দিয়েছে, সেটি ভারত চিরদিন মনে রাখবে (ইনকিলাব ২০ এপ্রিল ২০২১; ভারতের অখন্ডতা রক্ষায় বাংলাদেশ সাহায্য করেছে: কিন্তু ওরা কৃতজ্ঞতা স্বীকার করেনি)।  এছাড়াও বিভিন্ন মন্ত্রীগণ বিভিন্ন সময়ে ভারত বাংলাদেশের সম্পর্ককে স্বামী- স্ত্রীর সম্পর্ক বলে অভিহিত করেছেন। কখনো বলা হয়েছে রাখি বন্ধন । আসলে স্বামী-স্ত্রী, কিংবা রাখী বন্ধনের নামের আড়ালে বিশেষকরে আওয়ামী শাসন আমলে  বাংলাদেশে আটকে আছে ভারতের পায়ের নীচে। কিন্তু ভারত কি এসব ভাবে?  

ভারত চেয়েছিলো বাংলাদেশের কোন সেনাবাহিনী থাকবেনা; স্বামী-স্ত্রী, কিংবা রাখী বন্ধনের আড়ালে বাংলাদেশের গায়ে রয়েছে ভারতের পরানো শেকল; বাংলাদেশ ভারতকে রাস্তা দিলো কিন্তু ভারত রাস্তা দিলোনা!  সমগ্র বাংলাদেশকে ভারত তাদের ইচ্ছে মতো ব্যবহারের সুযোগ পেলেও বাংলাদেশকে এতটুকু ছাড় দেয়নি ভারত; দীর্ঘদিন ধরেই ভারতকে শুধু ভালোবেসেই চলেছে বাংলাদেশ। এ যেন এক নিঃস্বার্থ ভালোবাসা! 

প্রথমত আসি ট্রানজিট বিষয়ে।  গত ৪ নভেম্বর ২০১৫ সালে  দৈনিক প্রথম আলোতে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিলো ‘এক রুপিতে ট্রানজিট।  প্রতিবেদন মোতাবেক মাত্র এক রুপি প্রতীকী মাশুল দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা থেকে একটি পণ্যবাহী ট্রাক সড়কপথে ঢাকা হয়ে ত্রিপুরার আগরতলায় যায়।  সড়কপথে কলকাতা থেকে আসাম ও মেঘালয় হয়ে আগরতলার দূরত্ব ১ হাজার ৫৫৯ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে পণ্য পরিবহন করতে সময় লাগে মোট আট দিন। অন্যদিকে,  কলকাতা-ঢাকা-আগরতলা পথে দূরত্ব মাত্র ৫৬০ কিলোমিটার যা পাড়ি দিতে সময় লাগে  মাত্র ৫১ ঘণ্টা। আর দূরত্ব কমেছে প্রায় এক হাজার কিলোমিটার। খবরটি আশ্চার্যজনক হলেও ইতিপুর্বে ৪ বছর ব্যাপী ভারতকে বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে বেশ কয়েকবার বিনাশুল্কে পণ্য পরিবহনের সুযোগ করে দেয়া হয়েছিলো। ত্রিপুরার পালাটানা বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভারী যন্ত্রাংশ থেকে শুরু করে চালের একাধিক চালান ত্রিপুরায় পৌঁছাতে বাংলাদেশের ভেতর দিয়েই ভারতীয় ট্রাকগুলো  চলতে এমনকি  তিতাস নদীতে আড়াআড়ি বাঁধ দেওয়ার মতো অবিশ্বাস্য ঘটনাও ঘটেছে (প্রথম আলো, ১৪ এপ্রিল ২০১৪; চোখের সামনে খুন হচ্ছে নদী)। ভারতকে এসব সুবিধা দেয়ার পিছনে কখনো  ‘মানবিক কারণ’ দেখিয়ে, কখনোবা ‘প্রতীকী মাশুল’ ধরে এই সুবিধাগুলো দেয়া হয়েছে। কিন্তু কলকাতা থেকে আগরতলায় এতদিন যে পণ্য পরিবহনে সময় লাগত আট দিন, ‘মানবিক কারণে’ সময় কমে লাগে মাত্র ৫১ ঘণ্টা। কিন্তু বিনিময়ে বাংলাদেশের ভাগ্যে জুটল মাত্র এক রুপি! অধিকন্তু, ভারত  ট্রান্সশিপমেন্টের জন্য বাংলাদেশের চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর ব্যবহার করে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোয় পণ্য সরবরাহে ২০১৮ সালের অক্টোবরে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে চুক্তি সই হয়।  আগে যেখানে ১৪০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে কলকাতা বন্দর দিয়ে রফতানি হতো আসামের পণ্য, এখন সেখানে  ভারতীয় পণ্যবাহী জাহাজ আসে মোংলা বন্দরে এবং বাংলাদেশের ৫২০ কিলোমিটার সড়ক ব্যবহার করে অনায়াশেই পণ্য পৌঁছে যাচ্ছে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় আসাম ও মেঘালয় রাজ্য। এতে ভারতের সময় ও অর্থ বাঁচে। প্রতি টনে পণ্য পরিবহনে বাংলাদেশ পাবে মাত্র ৫৫৪ টাকা এবং প্রতি কিলোমিটার সড়ক ব্যবহারে খরচ হবে দুই টাকার মতো (বিডি মর্নিং ১৪ আগস্ট ২০২২; ভারত রাস্তা নিল তবে বাংলাদেশকে যাওয়ার সুযোগ দিল না )। পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ভারতের এতোবড় একটি দূর বাধা করেছে যার ফলে শুধু যে পরিবহনের ক্ষেত্রে সময় এবং দূরত্ব তিন ভাগের দুই ভাগ কমে গেল তাই নয়, ভারতের সামনে বিরাজমান বিদেশি রাষ্ট্রের সামরিক হুমকি যেন অনেক কমে গেল । বর্তমানে পদ্মা সেতু ও অন্যান্য সেতু ব্যবহার করে কলকাতা থেকে বাংলাদেশ হয়ে আগরতলা যেতে হলে ভারতের সময় লাগে ৬ থেকে ৭ ঘণ্টা । শুধু বন্দর ও রাস্তার ট্রানজিট নয়, যেখানেই ভারতের সুবিধা হচ্ছে সেখানেই সুযোগ করে নিচ্ছে ভারত। পাকিস্তান আমলে কলকাতা থেকে ছেড়ে আসা ট্রেন তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের ভেতর ঢুকে খানিকটা পথ অতিক্রম করার পরে আবার ভারতে প্রবেশ করতো যা  ১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের পর বন্ধ হয়ে যায়। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ২০১১ সালে ভারত সফরের সময় এই রেলপথ পুনরায় চালুর জন্য একটি চুক্তি হয়। চুক্তি অনুযায়ী রেলপথ নির্মানের কাজ চলছে । এই রেলপথ পুনরায় চালু হলে কলকাতা থেকে ছেড়ে আসা ট্রেন বাংলাদেশের ভূখণ্ডে প্রবেশ করে কিছুটা পথ পাড়ি দিয়ে আবার ভারতে প্রবেশ করে গন্তব্যে পৌঁছাবে। যারফলে, ভারতের রেলে যাত্রাপথ অন্তত ২০০ কিলোমিটার কমে যাবে (বিবিসি বাংলা, ৩ অক্টোবর ২০১৯; বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে শিলিগুড়ি যাবে ভারতের ট্রেন)। ২০২০ সালের ১৭ ডিসেম্বর উদ্বোধনের পর ইতিমধ্যেই ১ আগস্ট ২০২১ সালে পণ্যবাহী ট্রেনের মাধ্যমে ৫৫ বছর পর আবার চালু হয়েছে সেই ট্রেন (জনকণ্ঠ,  ১ আগস্ট ২০২১; চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রেলপথে ৫৫ বছর পর নিয়মিত পণ্যট্রেন চলাচল শুরু)। অবশেষে ২০২২ সালের জুন মাসে মিতালী এক্সপ্রেস নামক একটি যাত্রীবাহী ট্রেনের মাধ্যমে ৫৭ বছর পর এই রেল পথের সূচনা হয় (ডয়েচ ভেলে ১ জুন ২০২২; যাত্রী নিয়ে চিলাহাটি-হলদিবাড়ি পথে ট্রেন)। যদিও বলা হচ্ছে এই রেল পথ চালুর পর দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য সুবিধা বাড়বে। এর প্রকৃত সুফল পাবে যদি বাংলাদেশ এই পথ ব্যবহার করে নেপাল ও ভুটানে পণ্য রপ্তানির সুযোগ পায়। অথবা মাশুল পরিশোধের বিনিময়ে ভুটান ও নেপাল এই রেল পথ ব্যবহারের সুযোগ পায়। ইতিমধ্যেই ভুটান এই রেলপথ ব্যবহারের আগ্রহ প্রকাশ করেছে (সময় নিউজ, ১১ নভেম্বর ২০২২, চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রেল লিংক ব্যবহারে ভুটানের আগ্রহ)। কিন্তু ভারত আজ সেটা ছাড় দেয়নি। বাংলাদেশ ভারতকে রাস্তা দিলো কিন্তু ভারত রাস্তা দিলোনা!   

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় আসাম ও মেঘালয় রাজ্য সহ অন্যান্য প্রদেশে পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে ভারত আরো এক ধাপ সুবিধা পেলো! ইতিমধ্যেই নামমাত্র শুল্ক নিয়ে ভারতকে চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহারের অনুমুতি দেয়া হয়েছে। ট্রানজিট পণ্য পরিবহনের চুক্তির আওতায় পরীক্ষামূলক ভাবে ভারতের প্রথম চালান নিয়ে এমভি সেঁজুতি নামের জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে এসে পৌঁছেছে ২১ জুলাই ২০২০ সালে। ভারতীয় পণ্য ব্যবহারের জন্য বাংলাদেশ কাস্টমস কর্তৃপক্ষ যে সাত ধরনের ফি আদায় করে তা হলো প্রতি চালানের প্রসেসিং মাশুল ৩০ টাকা, প্রতি টনের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট মাশুল ২০ টাকা, নিরাপত্তা মাশুল ১০০ টাকা, এসকর্ট মাশুল ৫০ টাকা, কনটেইনার স্ক্যানিং মাশুল ২৫৪ টাকা এবং অন্যান্য প্রশাসনিক মাশুল ১০০ টাকা (২১ জুলাই ২০২০, প্রথম আলো; ভারতের প্রথম চালান চট্টগ্রাম বন্দরে)। যদিও ডকুমেন্ট প্রসেসিং মাশুল হিসেবে প্রতি টনে ১০ টাকা আদায়ের প্রস্তাব করেছিলো বাংলাদেশ কিন্তু খরচ অনেক বেড়ে যাবে বলে ওই প্রস্তাবে ভারত আপত্তি জানায় ।  যার ফলে, প্রতি চালানে মাত্র ৩০ টাকা ডকুমেন্ট প্রসেসিং চার্জ নির্ধারণ করা হয় (শেয়ার বিজ ২০ জুলাই ২০২০; নামমাত্র খরচে চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করবে ভারত!)। উক্ত রিপোর্টে বলা হয় যে, বন্দর ব্যবহারের যে মাশুল নির্ধারন করা হয় তা আসলে ৩৪ বছরের পুরোনো হার। একই সাথে, বাংলাদেশের আমদানিকারকরা চট্টগ্রাম বন্দরে ৪ দিন পর্যন্ত কনটেইনার বিনা মাশুলে রাখার সুযোগ পায়, তবে ভারতের আমদানিকারকদের জন্য এ সময় নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ গুন বা ২৮ দিন! এছাড়াও চুক্তিতে উল্লেখ না থাকলে বন্দর ব্যবহারের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবে ভারত। অর্থাৎ একই সাথে ভিন্ন ভিন্ন দেশের জাহাজ আসলে ভারতের জাহাজ পণ্য খালাসের সুযোগ পাবে। ভারতের সাথে যেকোনো চুক্তি হয়েছে সব ক্ষেত্রেই ভারত অগ্রাধিকার পেয়েছে। বিনিময়ে বাংলাদেশ কখনই কিছু পায়নি! স্বাধীনতার ৫০ বছর পরেও তাই ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক যেন লাভ-হেট এর মতো (বিবিসি বাংলা, ৬ ডিসেম্বর ২০২১; ভারত-বাংলাদেশ: পাঁচ দশক পরও প্রতিবেশী দেশের মধ্যে কেন ‘লাভ-হেট’ সম্পর্ক) । বাংলাদেশ ভালোবাসে ভারতকে কিন্তু ভারত কি ভালোবাসে বাংলাদেশকে?  

ভারতের উত্তর-পুর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর চট্টগ্রাম বন্দর সহজে ব্যবহারযোগ্য করার নিমিত্তে আর কিছু পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে ভারতের স্বার্থেই। লোকসানের ওজুহাতে ১৯৯৬ সালে বন্ধ হয়ে যাওয়া ফেনী-বিলোনিয়া রেল যোগাযোগ দীর্ঘ ২১ বছর বন্ধ থাকার পর বাংলাদেশ-ভারত যৌথ উদ্যোগে ফের চালু হচ্ছে (ইনকিলাব, ১৫ জানুয়ারি, ২০১৮; জরিপ কাজ শেষ চালু হচ্ছে ফেনী-বিলোনিয়া রেললাইন)। ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলা স্টেশন থেকে বিলোনিয়া পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণ করে ফেনী-বিলোনিয়া রেললাইন পুনঃস্থাপনের মাধ্যমে চট্টগ্রাম বন্দরে মালামাল পরিবহন করে নিতে এ রেল চালুর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে ।  শুধু তাই নয়, চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহারের সুবিধার জন্য ভারত ও বাংলাদেশের সীমান্তে দুই দেশের মধ্যে সংযোগ স্থাপনকারী ‘বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সেতু-১’নির্মান করা হয়েছে (বিবিসি বাংলা, ৮ মার্চ ২০২১; সীমান্তে প্রথম যে নদীসেতু যুক্ত করবে বাংলাদেশ ও ভারতকে)। প্রায় ১৩৩ কোটি রুপি ব্যয়ে নির্মিত ১.৯ কিমি দীর্ঘ এ সেতু খাগড়াছড়ির রামগড়ের সঙ্গে ত্রিপুরার সাবরুমকে যুক্ত করেছে। এই সেতু থেকে চট্টগ্রাম বন্দরের দূরত্ব মাত্র ৮০ কিলোমিটার। এই সেতুর মাধ্যমে ভারতের ত্রিপুরা, মিজোরামসহ ৭ রাজ্যের (সেভেন সিস্টার) সঙ্গে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বন্দরের হাতের নাগালে চলে আসবে এবং পণ্য পরিবহণের খরচ ও সময় কমবে। শুধু তাই নয়, ভবিষ্যতে আশুগঞ্জ বন্দর ব্যবহারের সুযোগ নিতে পারবে ভারত (প্রথম আলো,  ১৪ অক্টোবর ২০২২; মৈত্রী সেতু’ বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে যোগাযোগ বাড়াতে সহায়ক হয়েছে: ভারতের রাষ্ট্রপতি)। যদিও বলা হয় যে, এই সেতু নির্মাণের ফলে দুই দেশেই অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক এবং টুরিজ্যুম সেক্টরে লাভবান হবে; আসাম, ত্রিপুরা বা মিজোরাম থেকেও বহু পর্যটক বাংলাদেশের কক্সবাজার কিংবা পার্বত্য চট্টগ্রামের মতো জায়গাগুলোয় বেড়াতে আসবে। কিন্তু, এইসবের পাশাপাশি, ভারত যে তাদের উত্তর-পুর্বাঞ্চলীয় রাজ্যে সামরিক সরঞ্জাম পরিবহন করবেনা তার নিশ্চয়তা কে দিবে! সেই সাথে পার্বত্য চট্টগ্রামকে বিভক্ত করে ভারতের পরিকল্পিত স্বাধীন জুমল্যান্ড প্রতিষ্ঠা (দৈনিক সংগ্রাম, ০৭ মার্চ ২০১০; পূর্ব তীমুরের সেই ষড়যন্ত্র পার্বত্য চট্টগ্রামে; বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম, ১ , ডিসেম্বর ১, ২০২২; পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির সাংঘর্ষিক-বৈষম্যমূলক ধারা সংশোধনের দাবি এবং  কালের কণ্ঠ, ২৯ এপ্রিল ২০১৯; জুমল্যান্ডের ষড়যন্ত্র!) করতে তাদের গোয়েন্দা তৎপরতা চালাবে কিনা সেই নিশ্চয়তা কে দিবে? উল্লেখ্যযে, পার্বত্য চট্টগ্রামকে একটি স্বাধীন জুমল্যান্ড হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য দীর্ঘদিন ধরেই তৎপরতা চলছে। সম্প্রতি রতন চাকমার স্বাক্ষরিত চিঠিতে জাতিসংঘ সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থায় চিঠি দিয়ে স্বাধীনতার স্বীকৃতি চাওয়া হচ্ছে। চিঠির স্বারক হচ্ছে Ref…UNJL/2021/11/03/L তারিখ ২২ নভেম্বর ২০২১ এবং এর হচ্ছে  লিঙ্ক https://www.academia.edu/62180371/UN_JUMLAND_Letter_to_UN_others_offices । 

ভারত এত সুবিধা পাওয়ার পরেও নেপাল ও ভুটানে পণ্য রফতানিতে বাংলাদেশকে ট্রানজিট দিচ্ছেনা। অথচ সড়কপথে বাংলাদেশ-নেপালের মাঝে দূরত্ব মাত্র ১৫-২০ কিলোমিটার, (যা ভারতের ‘চিকেন নেক’ নামে পরিচিত), কিন্তু সেই রাস্তাটুকুই দিচ্ছেনা ভারত! কারণ নেপাল ও ভুটান ভারতীয় উৎস থেকে  আমদানি করে মোট আমদানির প্রায় ৯০ শতাংশ এবং বাকি ১০ শতাংশ অন্য দেশ থেকে আমদানি হলেও ব্যবহার হয় কলকাতা বন্দর, যা ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধায় নেপাল ও ভুটানে পৌঁছে দেয় ভারতীয় যানবাহন (বিডি মর্নিং ১৪ আগস্ট ২০২২; ভারত রাস্তা নিল তবে বাংলাদেশকে যাওয়ার সুযোগ দিল না)। বাংলাদেশকে ট্রানজিট দিলে নেপাল ও ভুটান হয়তো বা বাংলাদেশ থেকে পণ্য আমদানি করবে সেই সাথে পণ্য পরিবহনের খরচ প্রায় ৩০ শতাংশ কমাতে কলকাতার পরিবর্তে মোংলা বন্দর ব্যবহার করবে। ভারত কখনই নিজেদের স্বার্থ সামান্যতম ছাড় দিতে ইচ্ছুক নয় বাংলাদেশকে।  এভাবে বিভিন্ন সময় ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বিভিন্ন চুক্তি স্বাক্ষরিত করে ভারত একের পর এক সুবিধা নিলেও বাংলাদেশকে তেমন কোন কিছুতেই ছাড় দেয়না ভারত (বিবিসি বাংলা, ২৯ এপ্রিল ২০২২; বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক: তিস্তা নদীর পানিবন্টনসহ বাংলাদেশের স্বার্থের ইস্যুগুলোকে কতটা গুরুত্ব দেয় ভারত)। সমগ্র বাংলাদেশকে ভারত তাদের ইচ্ছে মতো ব্যবহারের সুযোগ পেলেও বাংলাদেশকে এতটুকু ছাড় দেয়নি ভারত। ভারতকে ভালোবেসে ফতুর হয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ! 

এরকম অনেক উদাহরণ দেয়া যাবে। এই লেখায়  সবগুলো উপাত্ত দেয়া সভব হবেনা। তবে সম্প্রতি আলোচিত ভারতের আদানির কাছ থেকে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ কেনার  গোপন চুক্তির আলোচনা করতেই হয়। ২০১৭ সালে ভারতের আদানির সাথেই বিদ্যুৎ কেনার জন্য ২৫ বছর মেয়াদি ১৬৩ পৃষ্ঠার এক গোপন চুক্তি করেছে  বাংলাদেশ, যার মেয়াদ ২০৪৭ সাল পর্যন্ত। । প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহি  বলেছেন চুক্তির বিষয়টি প্রাইভেট, এ বিষয়টি প্রকাশ  করা যাবে না (মানবজমিন, ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ঃ আদানির সঙ্গে আলোচনা ‘প্রাইভেট’, প্রকাশ্যে আনা যাবে না)। কিন্তু ইতিমধ্যেই চুক্তির অনেক বিষয় প্রকাশ পেয়েছে। এই চুক্তির এমন কোন শর্ত নেই যেটাতে বাংলাদেশের লাভ হবে। সব শর্তেই ভারতকে বা আদানিকে সুবিধা দেয়া হয়েছে। যেমন একটি শর্ত মোতাবেক কয়লার মূল্যের কোন সিলিং বা সীমাবদ্ধতা নেই।  অর্থাৎ আদানি বিদ্যুৎ ইচ্ছেমত কয়লার দাম চাইতে পারে । তাই প্রচলিত মূল্যের চেয়ে কয়লার মূল্য ৬০% বেশী চায় আদানি বিদ্যুৎ  (প্রথম আলো, ৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৩ঃআদানি কয়লার দাম ৬০% বেশি চায়) । এছাড়া বাংলাদেশ যদি আদানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সক্ষমতার  কমপক্ষে ৩৪% বিদ্যুৎ না কেনে তবে ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে হবে (শেয়ারবিজ,২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ঃ আদানির বিদ্যুৎ কমপক্ষে ৩৪% না কিনলে গুনতে হবে জরিমানা)। আদানি গ্রুপ যদি চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করে তবু চুক্তি বাতিল করা যাবেনা। আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে মামলা বা অভিযোগ করা যাবেনা! এসব ভয়ংকর শর্ত থাকার কারণে অনেকই আদানির সাথে স্বাক্ষরিত এই চুক্তিকে বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। অনেকই মনে করেন ২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের পক্ষে ভারতকে কাজ করানোর ঘুষ বা উপহার হিসেবেই করা হয়েছিলো এই গোপন চুক্তি। তবে ঘটনা যাইহোক, ভারতকে খুশি রাখতেই বাংলাদেশ  এই প্রকল্পে চুক্তি করেছে সেটা সহজেই অনুমেয়। এভাবেই দীর্ঘদিন ধরেই ভারতকে শুধু ভালোবেসেই চলেছে বাংলাদেশ। এ যেন এক নিঃস্বার্থ ভালোবাসা! বিনিময়ে ভারত কি কিছু দিচ্ছে? হয়তবা ভারত সুবিধা দিচ্ছে কিছু বিশেষ দল বা শ্রেণির স্বার্থে কিন্তু বাংলাদেশের স্বার্থে নয়। তাই বাংলাদেশ শুধু ভালোবেসেই গেলো ভারতকে। অফুরন্ত এই ভালোবাসার বিনিময়ে এতোটুকু ভালোবাসা পেলোনা বাংলাদেশ। ভালোবেসে গেলাম শুধু ভালোবাসা পেলাম না। 

Read More

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked with *

সর্বশেষ পোস্ট

Advertising