ভারত ভেঙে খ্রিস্টান রাষ্ট্রঃ গুজব বনাম বাস্তবতা

 

মোহাম্মাদ আশিক উজ্জামান: অতি সম্প্রতি ভারতের ‘নর্থ-ইস্টার্ন’ বা ‘সেভেন সিস্টার্স’ আলোচনায় ঘুরে-ফিরে আসছে। কোনো কোনো রাজনৈতিক বিশ্লেষক দাবি করছেন, “সে দিন খুব বেশি দূরে নয়, যেদিন ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য গুলো আলাদা হয়ে একটি স্বাধীন-সার্বভৌম খ্রিস্টান রাষ্ট্রের জন্ম হবে।” আসলে এটি কতটুকু সত্য বা বাস্তব আর কতখানি মিথ্যার মোড়কে আচ্ছাদিত ‘ভারতীয় কৌশল’ তা বুঝতে হলে সময়কে আর একটু গুরুত্ব দিতে হবে। তবে ইতোমধ্যেই মণিপুর রাজ্য স্বাধীনতা ঘোষণা করায় ভারতীয় কর্তৃপক্ষ নড়ে-চড়ে বসেছে। যদিও মণিপুরে মাত্র ৩৫ লক্ষ জনসংখ্যার বিপরীতে মোদী সরকার ৬০ হাজার আর্মি নিয়োজিত করেছে।

১৯৭২ সালে ‘আসাম পুনর্গঠন আইন’ অনুযায়ী আসাম ভেঙে তৈরি হয় মিজোরাম, মেঘালয়, নাগাল্যান্ড, অরুণাচল, মণিপুর ইত্যাদি প্রদেশ। বর্তমানে এই অঞ্চলে আসাম দ্বিতীয় বৃহত্তম রাজ্য হলেও তার জনসংখ্যা ৩ কোটি ১১ লক্ষ। হিন্দুরা এ রাজ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠ। তবে মুসলিম জনসংখ্যা প্রায় ৪০ শতাংশ। কিন্তু আসামের এন.আর.সি (ন্যাশনাল রেজিস্টার অব সিটিজেন্স) ব্যবস্থা চালু হওয়ার পর লক্ষ লক্ষ বাংলাভাষী মুসলমান তাদের চৌদ্দ পুরুষের আবাসভূমি আসাম থেকে বিতাড়নের অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন। বলা হচ্ছে, বাংলা ভাষাভাষী মুসলিমরা বাংলাদেশের লোক। কিন্তু তারা শত শত বছর ধরে বংশ পরম্পরায় আসামে বসবাস করে আসছেন। আর তাছাড়া আসামের রাজ্য সরকারের কর্তাব্যক্তিরা ইচ্ছে করেই ভুলে গেছেন যে, আসাম তথা সমগ্র সেভেন সিস্টার্স ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট দেশভাগের আগ পর্যন্ত বাংলা বা পূর্ব বাংলার উজানের অংশ হিসেবে একটি মাত্র ভৌগোলিক এবং রাজনৈতিক সীমারেখায় ছিল। তাই মুসলিমরা আসামের ‘এলিয়েন’ বা ‘আজনবি’ নয়। ‘এন.আর.সি’র ফাঁদে ফেলে ক্ষমতাসীনরা সাম্প্রদায়িকতাকে উস্কে দিচ্ছেন বলেও রাষ্ট্রবিদগণ মত দিয়েছেন। অর্থাৎ বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণতান্ত্রিক দেশ ভারতে ‘ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা’ জাতিগত বিভেদে বিরাট অবদান রাখছে যা ২০২৪-এ এসেও হালে পানি পাচ্ছে।

চীন লাগোয়া অরুণাচল প্রদেশের আয়তন ৮০ হাজার ৭ শত ৪০ বর্গ কিলোমিটার, যার লোকসংখ্যা মাত্র ১৮ লক্ষ। এ রাজ্যের ৩০ ভাগই খ্রিস্টান এবং এরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ। এ ছাড়াও মণিপুরে ৪২ ভাগ খ্রিস্টান যারা সংখ্যাগরিষ্ঠ। মেঘালয়ের প্রায় ৩৮ লক্ষ লোকের মধ্যে ৭৫ শতাংশ, মিজোরামের প্রায় ২৫ লক্ষ লোকের মধ্যে ৯০ শতাংশ ও নাগাল্যান্ডে প্রায় ২৩ লক্ষ লোকের মধ্যে ৯০ শতাংশই খ্রীস্টান অধ্যুষিত। অন্যদিকে, ত্রিপুরায় ৪২ লক্ষ জনসংখ্যার মধ্যে ৮৪ শতাংশই হিন্দু অর্থাৎ সেভেন সিস্টার্স-এ শুধুমাত্র আসাম ও ত্রিপুরায় হিন্দুরা সংখ্যাগরিষ্ঠ। বাকি পাঁচটি রাজ্যে খ্রিস্টান জনগোষ্ঠী মেজরিটি। এছাড়াও মায়ানমারের ‘চিন এস্টেট’-এর ৯৬ শতাংশ মানুষই খ্রিস্টান। মায়ানমারের ‘আরাকান, চিন, সাগাইং ও কাচিন’ রাজ্যের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠীগুলো অনেক বছর ধরে স্বাধীনতার জন্য লড়াই করে আসছে। বর্তমানে আরাকান প্রায় স্বাধীন একটি রাষ্ট্র।

বাংলাদেশ সীমান্ত সংলগ্ন পূর্ব ভারতের পাঁচটি রাজ্য ও মিয়ানমারের চিন সহ অঞ্চলগুলো মিলে একটি স্বাধীন সার্বভৌম খৃষ্টান রাষ্ট্র তৈরি করার জন্য ব্যাপক নিরস্ত্র বা সশস্ত্র সংগ্রাম অব্যাহত রয়েছে। দুই দেশের বৃহত্তম এই অঞ্চলে খ্রিস্টানরা সংখ্যাগরিষ্ঠের দিক থেকে প্রায় ৯০ শতাংশ। সুতরাং এখানে ভারত বা মায়ানমারের কেন্দ্রীয় সরকারের ব্যাপক দমন-পীড়ন বা নির্যাতনের প্রেক্ষিতে জাতিসংঘের মাধ্যমে একটি ‘গণভোটের ম্যান্ডেট’ আসতে পারে, যা আমরা ইতোপূর্বে দেখেছি ‘পূর্ব তিমুর বা দক্ষিণ সুদান’-এর ক্ষেত্রে। কিন্তু এখানে কয়েকটি বিষয় ব্যাপক বিবেচনার দাবি রাখে।

প্রথমতঃ রাজ্যগুলো পাশ্চাত্যের খ্রিস্টান রাষ্ট্রগোষ্ঠীর সাহায্য-সহায়তা পেলেও রাষ্ট্রটি হবে ‘ল্যান্ড লকড’ যার কোনো সমুদ্র সীমা থাকবে না। বাংলাদেশের ‘বান্দরবন’ জেলার কোনও অংশ ভেঙে দিয়েও যদি বঙ্গোপসাগরে প্রবেশাধিকার পাওয়া যায় তবুও তা হবার নয়। কেননা বান্দরবনের মুসলিম জনসংখ্যা ৫৩ শতাংশের বিপরীতে খ্রিস্টান মাত্র ১০ শতাংশ। তাই ‘ধর্মভিত্তিক ডেমোগ্রাফি’ এ অঞ্চলে কার্যকর হবে না।

দ্বিতীয়তঃ বর্তমান বিশ্বের দ্বিতীয় শক্তিধর রাষ্ট্র চীন ও চতুর্থ শক্তিশালী ভারত কি চাইবে তাদের নাকের ডগায় একটি খৃষ্টান রাষ্ট্র হোক? চীন ও ভারত দুই দেশই ধর্মনিরপেক্ষতা দাবি করলেও ভারত চরমভাবে ‘হিন্দুত্ববাদ’কে ধারণ ও লালন করে। ভারতের কমপক্ষে নয়টি রাজ্যে ‘খ্রিস্টান বা মুসলিম ধর্মান্তরকরণ বিরোধী আইন’ বলবৎ আছে। তাই এ ক্ষেত্রে কর্তৃত্ববাদী মোদি সরকার যেকোনো মূল্যে খ্রিস্টান রাষ্ট্রের কবর রচনা করবেন।

তৃতীয়তঃ জাতিসংঘের খ্রিস্টান মেজরিটি চারটি স্থায়ী শক্তি- যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, ইংল্যান্ড ও ফ্রান্স ব্যাপক ‘সহিংসতা ও ম্যাসাকার’ এর প্রেক্ষিতে শান্তিবাদী সমগ্র বিশ্বের জনমতের বিরুদ্ধে গিয়ে নতুন একটি রাষ্ট্র চাইবে না। এতে দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-রাজনৈতিক মেরুকরণে বাংলাদেশ, ভারত, মায়ানমার ও চীন আঞ্চলিক যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে পারে।

চতুর্থতঃ স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর হাতে অত্যাধুনিক অস্ত্রের ব্যাপারে ভারত বা মায়ানমারের বক্তব্য হচ্ছে, তৃতীয় পক্ষ তাদেরকে অস্ত্র জোগান দিচ্ছে। কিন্তু এই তৃতীয় পক্ষ হয়ে কোনো দেশ তাদেরকে অস্ত্র দিচ্ছে তা আজও প্রমাণিত নয়। আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে জানা যায়, ২০২০ সাল থেকে পরবর্তী আড়াই বছরে ২০ বিলিয়ন রুপি সমমূল্যের মাদক (মূলতঃ পপি) আটক হয় মণিপুর রাজ্যে। তাই হাল আমলে মণিপুরের বিদ্রোহীদের হাতে ‘রকেট লঞ্চার’ বা ‘এটাক ড্রোন’ যে তাদের অবৈধ টাকার উৎস থেকে চোরাবাজার হতে ক্রয়কৃত তা কারোরই বুঝতে বাকি নেই। মণিপুরের ‘মেইতেই’ সম্প্রদায় হিন্দু ও ‘কুকি’রা খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী। এই দুই সম্প্রদায়ই অস্ত্রধারী। শত বছরের পুরোনো ইংরেজদের শেখানো সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্পে জ্বলছে মণিপুর৷ মেইতেই ও কুকিরা পরস্পরকে ঘৃণা করে। এছাড়াও নাগাল্যান্ডে (ভারত), ‘ন্যাশনালিস্ট সোশালিস্ট কাউন্সিল অব নাগাল্যান্ড’ (এন.এস.সি.এন), মায়ানমারের কাচিনে ‘কাচিন ইনডিপেনডেন্ট আর্মি’ (কে.আই.এ) ও আরাকানে, ‘আরাকান আর্মি’ খুবই শক্তিশালী সশস্ত্র স্বাধীনতাকামী সংগঠন- যাঁদের জনপ্রিয়তা, জনবল ও অস্ত্রশস্ত্র ব্যাপক। বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামেও রয়েছে ‘কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট’ (কে.এন.এফ) যা ‘বম পার্টি’ নামেও পরিচিত। এদের জনপ্রিয়তা না থাকলেও এরা বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আদিবাসী ও বাঙালিদের হত্যা, গুম, মুক্তিপণ ও চাঁদাবাজির সাথে জড়িত।

খুব জরুরিভাবে মনে রাখা দরকার যে, গত দেড় দশকে বাংলাদেশ ছিল ভারত সরকার এর জন্য আশীর্বাদ স্বরূপ। কেননা স্বৈরাচারী হাসিনার সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে বাংলাদেশের বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা ও সীমান্তরক্ষী বাহিনী বাংলাদেশ সংলগ্ন ভারতের সেভেন সিস্টার্সের স্বাধীনতাকামীদের ব্যাপকভাবে দমনের মাধ্যমে ভারত রাষ্ট্রের অখণ্ডতার নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছিল। এ প্রসঙ্গে এক রাষ্ট্রবিজ্ঞানী বলেছেন, “এক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিনা স্বার্থে শুধুমাত্র বন্ধু ভারতের জন্য যা করেছে তা ছিল নিজের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানোর মতো এক অবস্থা।” এ সময় বাংলাদেশ আসামের ‘আলফার স্বাধীনতাকামী’দের মোটামুটি নিশ্চিহ্ন করতে সক্ষম হয়েছিল। এই প্রেক্ষিতে তৎকালীন রাতের ভোটে নির্বাচিত বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, “ভারতকে আমি যা দিয়েছি তা তারা সারা জীবন মনে রাখবে।” বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী কোনও রকম বিনিময় ছাড়াই সেভেন সিস্টার্সের অখণ্ডতা, শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষা করার পাশাপাশি এ অঞ্চলের জন্য বাণিজ্য ও ট্রানজিট সুবিধা প্রদান করেছে এবং বাংলাদেশ সংলগ্ন রাজ্যগুলোর স্বাধীনতাকামীদের সরবরাহ লাইন বন্ধ করে দিয়েছে। কিন্তু ভারত বাংলাদেশকে তার সামান্য ভূখণ্ড ব্যবহার করে নেপাল ও ভুটানের সাথে সড়ক বা রেল যোগাযোগ করতে দেয়নি। উত্তরপূর্ব ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের মানুষ সুযোগ সুবিধা থেকে অনেক পিছিয়ে রয়েছে।

মূলধারার ভারতীয়দের তুলনায় মার্জিন লাইনে বসবাসকারী পার্বত্য অঞ্চলের খ্রিষ্টান জনগোষ্ঠীরা অফুরান সম্পদে সমৃদ্ধ রাজ্যে বসবাস করেও বঞ্চিত অনেক কিছু থেকে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, জাতিগত বৈচিত্র্য, ধর্মীয় বিশ্বাস, ‘এথনো পলিটিক্স’- সব ছাপিয়ে ভারত ও মায়ানমার ভেঙে বাংলাদেশের কোল ঘেঁষে যে খৃষ্টান রাষ্ট্র উঁকি দিচ্ছে তার আয়তন প্রায় ২ লক্ষ বর্গকিলোমিটার যা বাংলাদেশের চেয়েও বড়। কিন্তু জনসংখ্যা হবে দুই কোটিরও কম। সেভেন সিস্টার্স ঘিরে উত্তেজনার পারদ তুঙ্গে ওঠার আরেকটি কারণ হচ্ছে ‘শিলিগুড়ি করিডোর’ যা ‘চিকেন নেক’ নামে পরিচিত। হাসিনা সরকারের আমলে ভারত বাংলাদেশ থেকে বহুমাত্রিক ‘স্ট্র্যাটেজিক লিভারেজ’ বা ‘কৌশলগত সুবিধা’ আদায় করেছে। কিন্তু ৫ আগস্ট ‘বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতা’র বিশ্বকাঁপানো গণঅভ্যুত্থানে খুনি হাসিনার পতন হলে বাংলাদেশের সরকার পরিবর্তন হয়। মাত্র ২১ কিলোমিটার প্রস্থের শিলিগুড়ি করিডোর ব্যবহার করে বাংলাদেশ সড়ক পথে নেপালের সাথে ব্যবসা করতে চেয়েছিল। ভারত এ রাস্তাটুকু ব্যবহারের অনুমতি বাংলাদেশ ও নেপালকে দেয়নি। অথচ বাংলাদেশের উপর দিয়ে যাবার জন্য শত শত কিলোমিটার সড়ক, রেল, নৌ ও আকাশ পথের সুবিধা আদায় করে নিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বর্তমান বাংলাদেশের জনবান্ধব সরকার এ ধরনের অন্যায্য, একতরফা চুক্তির পক্ষে থাকবে না এটাই স্বাভাবিক।

অন্যদিকে, ‘লাদাখ সীমান্তে’ চীন ও ভারত প্রায় যুদ্ধরত অবস্থায় আছে। তাই ভারতের সাথে এ মুহূর্তে চীনের যদি যুদ্ধ বেঁধে যায় তবে চীন তার সর্বশক্তি প্রয়োগ করে বাংলাদেশ ও নেপাল সীমান্তের মাঝে বিদ্যমান চিকেন নেককে বিচ্ছিন্ন করে সেভেন সিস্টার্স-কে আলাদা করে দিতে পারে। ভারতের টোটাল খ্রিস্টান জনগোষ্ঠী ৩ শতাংশের বেশি হবে না। কিন্তু উত্তর-পূর্ব ভারতের পাঁচটি রাজ্যে খ্রিস্টানরা ব্যাপক ভিত্তিতে সংখ্যাগরিষ্ঠ এবং এ ‘খ্রিস্টান আদিবাসী’ সম্প্রদায় উক্ত জনপদের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ব্যবস্থার অনেকখানি নিয়ন্ত্রণ করে। অনেক ‘সিনোফোবিক ভারতীয় প্রেজেন্টার’ হয়ত অনিচ্ছাকৃত ভাবেই ভারতের অভ্যন্তরীণ গোলযোগে চীন বা অতিসম্প্রতি বাংলাদেশের দিকে ইঙ্গিত করছেন। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এই যুক্তির কোন অভিজ্ঞতামূলক প্রমাণ তারা দেখাতে পারেননি। সেই ঔপনিবেশিক আমল থেকেই সেভেন সিস্টার্স বা মায়ানমারের জাতিগত ভূগোল শুধু জটিলই নয় অসম্ভব স্পর্শকাতরও বটে।

কাজেই, ভারত সরকারের নীতি নির্ধারকদের উচিত হবে তৃতীয় কোনো পক্ষ বা দেশকে ঢালাওভাবে দোষারোপ না করে প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে আস্থার সংকট মিটিয়ে ফেলা এবং সেভেন সিস্টার্সে বসবাসরত খ্রিস্টান, বৌদ্ধ ও মুসলিম কমিউনিটির জান, মাল এবং ধর্মীয় উপাসনালয়গুলো রক্ষা করা। এবং সর্বোপরি ধর্মীয় ও সংস্কৃতিতে বহুধা বিভক্ত জাতি-গোষ্ঠীকে মূলধারায় ফিরিয়ে আনার জন্য ‘বিশ্বাস ও ভালোবাসার মানবিক বলয় তৈরি ও বাস্তবায়ন করা’। কিন্তু ‘আর.এস.এস’-‘বিজেপি’ পরিবারের ‘অহিন্দু মতাদর্শ’-এর বাইরে গিয়ে সেই কার্যক্রম কতোটা আলোর মুখ দেখবে তা সময়ই বলে দেবে। আর এর ব্যতিক্রম হলে হয়তো জাতিগত বা ধর্মীয় বিভেদে ভারত ভেঙে জন্ম নেবে এক বা একাধিক ‘নতুন রাষ্ট্র’।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *