সুপ্রভাত সিডনি রিপোর্ট : বাংলাদেশ পুলিশ বিভাগের দুর্নাম কামিয়ে যারা পুলিশের কলঙ্ক হিসেবে আখ্যায়িত তাদের ভিতর ওসি হারুন/এসপি হারুন বা এডিসি হারুন অন্যতম। আওয়ামী স্বৈরাচারী শাসনামলে একের পর এক পুলিশ প্রধান মাফিয়া প্রধানের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে।
এমনকি অষ্টম শ্রেণী পাশ থানার একজন হাবিলদার পর্যন্ত হাসিনা সরকারের মদদে বিপুল সম্পদের পাহাড় বানিয়েছে, নির্বিচারে মানুষ হত্যা করেছে, মানুষকে ভুয়া মামলা দিয়ে অর্থ আদায় করেছে। চট্রগ্রামের সন্ত্রাসী ওসি ভারতীয় নাগরিক এবং মাফিয়া সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়নে বিশেষ ভূমিকা রাখে। টোকাই প্রদীপ সেনাবাহিনীর একজন অফিসারকে হত্যা করে আবারো প্রমান করলো- আওয়ামী সরকারের আমলে সেনাবাহিনী নিগৃহীত। সেনাবাহিনীর উপর শেখ হাসিনার রাগের বহিঃপ্রকাশ বিভিন্ন ভাবে ফুটে উঠেছে। ভারতীয় সেবা দাসী হাসিনার পরোক্ষ উস্কানিতে এ ধরনের ঘটনার জন্ম দিয়েছে , এতে কোনো সন্দেহ নেই।
যাই হোক,দেশের রাজনৈতিক অবস্থা ঘোলাটে দেখে অসাধু আমলা, মন্ত্রী, উপমন্ত্রী, পুলিশ ও র্যাবের কিছু উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা গোপনে দেশ ছেড়েছেন এবং অনেকে দেশ ছাড়ার চেষ্টায় আছে। এর মধ্যে এডিসি হারুন সিঙ্গাপুর যাবেন বলে ছুটি নিলেও তিনি কৌশলে চলে গেছেন আমেরিকায়। প্রত্যেকটি আমলা ও অসৎ সরকারি অফিসার এবং মন্ত্রীরা জুলুম, চাঁদা -বাজি ও বিভিন্ন অসৎ উপায়ে সম্পদের পাহাড় পাচার করেছে। অনেকের মতো এডিসি হারুনেরও আমেরিকায় গ্রীন কার্ড আছে। তবে আমেরিকা থেকে যেকোন সময়ে বিতাড়িত হতে পারে তিনি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৮ সালে ছাত্রলীগের বাহাদুর-অজয় কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য হারুন ওরফে এডিসি হারুন ভূয়া মুক্তিযোদ্ধার সনদে ২০তম বিসিএস ক্যাডারে চাকরি নেয়ার পর থেকেই ঘুষ বাণিজ্যে জড়িয়ে পড়েন। শৃংখলা ভঙ্গের অভিযোগে একসময় চাকরি থেকে বহিষ্কৃত হলেও অদৃশ্য কারণে তিনি চাকরি ফিরে পেয়েছিলেন।
কিশোরগঞ্জের মিঠামইনে বাড়ি হওয়ার সুবাদে জাতীয় সংসদের স্পিকারের নাম ভাঙিয়ে তিনি নানা অপকর্ম করেও পার পেয়ে যাচ্ছেন। নিজেকে তিনি স্পিকারের ভাতিজা বলেও পরিচয় দেন। আর স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রীর নাম ভাঙিয়ে তিনি ব্যবসায়ীদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে মোটা অংকের চাঁদাবাজি ও মোহাম্মদপুর এলাকায় দখলবাজির রাজত্ব কায়েম করেছেন বলেও অভিযোগ আছে।
গুলশানে এডিসি থাকাকালে একটি নামকরা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে মোটা টাকা ঘুষ নিয়ে আরেকটি প্রতিষ্ঠানের আমদানিকৃত বিপুল পরিমাণ গুঁড়াদুধ ভেজাল বলে আটক করেন। ওই ঘটনায় তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়। ছাত্রলীগের সাবেক নেতা হওয়ার দাপটে তিনি সব সময়ই পুলিশের চেইন অব কমান্ড ভেঙে নিজের কর্তৃত্ব জাহির করতে চান। একই সঙ্গে তিনি বিভিন্ন মন্ত্রী-এমপির নাম ভাঙিয়ে নানা অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন বলেও অভিযোগ আছে।
২০১০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে রাজধানীর কোতয়ালি থানার এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে তিনি ১০ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করেছিলেন। মুক্তিযোদ্ধা ওই ব্যবসায়ীকে আটক করে ক্রসফায়ারেরও হুমকি দেন এডিসি হারুন। এ অভিযোগ পাওয়ার পর ওই বিভাগের তত্কালীন ডিসি ঘটনার তদন্তে সত্যতা পেয়ে শাস্তি হিসেবে তাকে এপিবিএনে বদলি করা হয়। সেখানে যোগদান না করে তদবিরের মাধ্যমে তিনি ওই আদেশ বাতিল করে তেজগাঁও জোনে পোস্টিং নেন।
১৯৯৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সূর্যসেন হলে তার বিরুদ্ধে শিশু অপহরণ করে হলে আটকে রেখে মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগ ছিল। ওই সময় ঘটনাটি পত্রিকায় ছাপা হয়। হারুনের স্ত্রী আমেরিকা প্রবাসী হওয়ার কারণে তিনি অনেক সময় ধরাকে সরা জ্ঞান করেন। স্ত্রী আমেরিকার নাগরিক হওয়ার সুবাদে হারুনেরও রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব। মাঝে মাঝেই তিনি আমেরিকায় যান।
এদিকে শেখ হাসিনার একমাত্র পুত্র জয় পালিয়ে বেড়াচ্ছে বলে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে চাউর হয়েছে। আবুধাবি হয়ে পার্শবর্তী আরেকটি দেশে জয় মায়ের পরামর্শের অপেক্ষায় আছে বলে জানা গেছে। বাংলাদেশের ব্যাঙ্কসহ বিভিন্ন সেক্টরকে পুরো খালি করে ১০ বিলিয়ন ডলার নিয়ে জয় মদ-নারী নিয়ে সাথে ফূর্তি করছে।
দেশ থেকে রাষ্ট্রীয় সম্পদ চুরি করে ইউরোপ, আমেরিকা কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ায় পালিয়ে যাওয়ার হিড়িক পড়েছে। প্রবাসে সকল সচেতন নাগরিক চোখ কান খোলা রাখলেই এদেরকে দেখতে পাবেন। প্রবাসে এদের বিরুদ্ধে শক্ত ভূমিকা না রাখলে এরা প্রবাসের শান্তি পূর্ণ সমাজকেও কলুষিত করবে।