728 x 90

অস্ট্রেলিয়ান এমপিদের চিঠিতে বাংলাদেশে মানবাধিকার লংঘনকারী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার আহবান

 ফারুক আমিন : ৪ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে অস্ট্রেলিয়ার পনেরো জন সুপরিচিত এমপি এবং সিনেটর সম্মিলিতভাবে দেশটির প্রধানমন্ত্রী এনথনি আলবানিজি বরাবরে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে একটি খোলা চিঠি পাঠিয়েছেন। স্বাক্ষরকারী সংসদ সদস্যদের কার্যালয় থেকে প্রকাশিত চিঠিটিতে বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা এবং সুষ্ঠ নির্বাচনের স্বার্থে প্রয়োজন হলে আমেরিকার মতো ভিসা স্যাংশন ও ম্যাগনিটস্কি এক্ট বাস্তবায়নের মতো কঠোর পদক্ষেপ

 

 ফারুক আমিন : ৪ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে অস্ট্রেলিয়ার পনেরো জন সুপরিচিত এমপি এবং সিনেটর সম্মিলিতভাবে দেশটির প্রধানমন্ত্রী এনথনি আলবানিজি বরাবরে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে একটি খোলা চিঠি পাঠিয়েছেন। স্বাক্ষরকারী সংসদ সদস্যদের কার্যালয় থেকে প্রকাশিত চিঠিটিতে বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা এবং সুষ্ঠ নির্বাচনের স্বার্থে প্রয়োজন হলে আমেরিকার মতো ভিসা স্যাংশন ও ম্যাগনিটস্কি এক্ট বাস্তবায়নের মতো কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। উল্লেখ্য যে, গ্লোবাল ম্যাগনিটস্কি এক্ট বাস্তবায়নের মাধ্যমে দুর্নীতির মাধ্যমে লব্ধ এবং ভিন্ন দেশে পাচার করা সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা হয়।

চিঠিতে তারা বলেন, বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক ও সুষ্ঠ নির্বাচনকে বাধাগ্রস্থ করা লোকজন যেন অস্ট্রেলিয়ায় প্রবেশ করতে না পারে তা আমাদেরকে নিশ্চিত করতে হবে।

দ্বি-কক্ষবিশিষ্ট অস্ট্রেলিয়ান ফেডারেল পার্লামেন্টের উভয় কক্ষ থেকেই এ চিঠিটিতে স্বাক্ষর করা এমপি এবং সিনেটররা লিখেছেন, বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম এবং নির্যাতনের মতো কাজকর্ম করার কারণে বাংলাদেশের র‍্যাপিড একশন ব্যাটালিয়ান (র‍্যাব) বাহিনী বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের “ডেথ স্কোয়াড” অর্থ্যাৎ “খুনী বাহিনী” হিসেবে কুখ্যাতি অর্জন করেছে।

বর্তমান ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের নামে মানবাধিকার লংঘনের যে অভিযোগ পাওয়া যায়, এসব ঘটনাকে ভয়াবহ হিসেবে উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর সম্মতিতে বিচারবহির্ভূত হত্যা ও গুমের মতো মারাত্মক ঘটনাগুলো ঘটে, এমনটাই বিভিন্ন মানুষের স্বাক্ষ্যে প্রমাণিত হয়েছে।

চিঠিটিতে বলা হয়, বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করার একমাত্র উপায় হলো জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক কার্যালয় থেকে প্রকাশিত নির্বাচনী নীতিমালা বাস্তবায়নের মাধ্যমে নির্বাচন করা। এই নীতিমালা অনুযায়ী বাংলাদেশে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নিশ্চিত করতে হবে যেন দেশটিতে ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের বিগত দুইটি সাজানো নির্বাচনের মতো ভোট ডাকাতি ও জালিয়াতির পুনরাবৃত্তি না ঘটে।

সংসদ সদস্যরা অস্ট্রেলিয়ান প্রধানমন্ত্রীকে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় কূটনীতির প্রয়োগ এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা প্রসঙ্গে তাঁর সরকারের দায়িত্ব স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, বাংলাদেশে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা ক্ষমতার অপপ্রয়োগ করে বিরোধী দলীয় নেতাকর্মী থেকে শুরু করে সমাজকর্মী, গণমাধ্যমকর্মী, শ্রমিক নেতৃবৃন্দ এমন কি সাধারণ মানুষদের উপর যেভাবে ভয়াবহ মানবাধিকার লংঘনমূলক কর্মকান্ড চালিয়ে আসছে তাতে তারা স্তম্ভিত। বাংলাদেশের এই ঘটনাগুলো আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা এবং আমেরিকার স্টেট ডিপার্টমেন্টের বিভিন্ন প্রতিবেদনে প্রমাণসহ প্রকাশিত হয়েছে।

অস্ট্রেলিয়ান প্রধানমন্ত্রীর কাছে এমপিরা সুনির্দিষ্ট তিনটি দাবী জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশ সরকারের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করে প্রকাশ্যভাবে সুষ্ঠ নির্বাচন নিয়ে অস্ট্রেলিয়ান সরকারের প্রত্যাশা ব্যক্ত করতে হবে, জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক মহলের সাথে যৌথভাবে সুষ্ঠ নির্বাচন বাস্তবায়ন, তত্ত্বাবধান ও পর্যবেক্ষণে সক্রিয় ভূমিকা রাখতে হবে এবং একটি গণতান্ত্রিক নির্বাচনে বাধা দানকারী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে টার্গেটেড ম্যাগনিটস্কি স্যাংশন দিতে হবে। এক্ষেত্রে তারা সম্প্রতি ঘোষিত আমেরিকান ভিসা স্যাংশন নীতির কথা উল্লেখ করে প্রয়োজন হলে একই ধরণের নীতিমালা প্রনয়ণের জন্য অস্ট্রেলিয়ান প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহবান জানান।

চিঠিতে স্বাক্ষর করা অস্ট্রেলিয়ান সংসদ সদস্যরা হলেন সিনেটর ডেভিড শুব্রিজ, সিনেটর জর্ডন স্টিল-জন, এডাম ব্যান্ড এমপি, সিনেটর লারিসা ওয়াটার্স, সিনেটর নিক ম্যাককিম, সিনেটর জেনেট রাইস, সিনেটর বারবারা পোকক, এলিজাবেথ ওয়াটসন-ব্রাউন এমপি, স্টিফেন ব্যাটস এমপি, সিনেটর মেহরিন ফারুকী, সিনেটর পিটার হুইশ-উইলসন, সিনেটর ডরিনডা কক্স, সিনেটর পেনি অলম্যান-প্যাইন, ম্যাক্স শ্যান্ডলার-ম্যাথার এমপি এবং সিনেটর সারা হ্যানসন-ইয়ং।

Read More

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked with *

সর্বশেষ পোস্ট

Advertising