বাংলাদেশী সিনিয়র সিটিজেন অব অস্ট্রেলিয়ার বার্ষিক ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত

 

সুপ্রভাত সিডনি রিপোর্ট : বাংলাদেশী সিনিয়র সিটিজেন অব অস্ট্রেলিয়ার বার্ষিক ইফতার মাহফিল ১৬ মার্চ ২০২৫ তারিখে সিডনির রকডেলের স্টার বিরিয়ানি ফাংশন হলে অত্যন্ত ভাবগম্ভীর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়। এ আয়োজনে কমিউনিটির বিভিন্ন দল ও পেশার নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রেরণাদায়ক বিশ্বনন্দিত আপেল মাহমুদ। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব নিউ সাউথ ওয়েলসের সফল সভাপতি মাহবুব চৌধুরী শরীফ, ক্যাম্পবেলটাউন সিটি কাউন্সিলের সাবেক ডেপুটি মেয়র ও বর্তমান কাউন্সিলর ইব্রাহিম খলিল মাসুদ, ড. শফিকুর রহমানসহ কমিউনিটির অন্যান্য গুণী ব্যক্তিবর্গ। সংগঠনের সদস্য ছাড়াও বিভিন্ন এলাকা ও সংগঠনের অতিথিরা এই মাহফিলে অংশ নেন।

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হোসেন আরজু ও সভাপতি মুফাজ্জল হেসেন ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই মাহফিলের সূচনা হয় পবিত্র কোরআন থেকে তিলাওয়াতের মাধ্যমে। ইসলামিক আলোচনা ও দোয়া পরিচালনা করেন রকডেল মসজিদের সম্মানিত ইমাম ডক্টর ফয়জুল্লাহ।

এই ইফতার মাহফিলে দারুসসালাম মুসলিম সেমেট্রি প্রজেক্টের কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন এবং কবরস্থানের আপডেট ও সহযোগিতা চেয়ে বক্তব্য রাখেন আব্দুর রহমান খান।

বাংলাদেশী সিনিয়র সিটিজেন অব অস্ট্রেলিয়া একটি অরাজনৈতিক সংগঠন যা বিগত ৭ বছর ধরে কমিউনিটির কল্যাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আসছে। সংগঠনের এই নিরব প্রচেষ্টার স্বীকৃতি হিসেবে কেন্টাবুরি ব্যাংকসটাউন সিটি কাউন্সিল থেকে কমিউনিটি অর্গানাইজেশন অব দ্য ইয়ার পদক লাভ করে। সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য মনজুরুল আলম বুলু সংগঠনের কার্যক্রম ও অর্জন সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন।

রকমারি সুস্বাদু ইফতারের পর সকলেই রকডেল মসজিদে মাগরিব নামাজ আদায় করেন। নামাজ শেষে উপস্থিত অতিথিরা নৈশভোজ গ্রহণ করে যার যার গন্তব্যে রওনা হন।

ইফতার মাহফিলটি সঞ্চালনায় ছিলেন সংগঠনের আরেকজন প্রতিষ্ঠাতা সদস্য আব্দুল্লাহ ইউসুফ শামীম। অনুষ্ঠানটি সাফল্যের সাথে সম্পন্ন হওয়ায় অংশগ্রহণকারীরা আয়োজকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

অস্ট্রেলিয়াতে বিভিন্ন সময়ে কমিউনিটির গর্বিত সংগঠকগণ ইন্তেকাল করেছেন, যাদের অবদান ভাষাতীত। তাদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও আত্মত্যাগ কমিউনিটির উন্নয়নে এক বিরাট ভূমিকা রেখেছে। বাংলাদেশী সিনিয়র সিটিজেন অব অস্ট্রেলিয়া এই মহান ব্যক্তিদের স্মরণে একটি বিশেষ তালিকা প্রস্তুত করে তাদের আত্মার মাগফিরাতের জন্য দোয়া করে। একইসঙ্গে, অন্যান্য সংগঠনগুলোকে অনুরোধ জানানো হয়, তারা যেন এই মহৎ উদ্যোগ অনুসরণ করে। কারণ, একসময় তারাও কমিউনিটির উন্নয়নে অসামান্য অবদান রেখেছিলেন। আজ আমরা যদি তাদের জন্য দোয়া করি, তাহলে একদিন ভবিষ্যৎ প্রজন্মও আমাদের জন্য একইভাবে দোয়া করবে।

সিডনি তথা অস্ট্রেলিয়ায় বিগত দুই দশকে যেসব বিশিষ্ট ব্যক্তি বর্গ ইন্তেকাল করেছেন, তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য: গাজী রুহুল হক উজ্জ্বল, হুমায়ুন কবির, ডক্টর রহমান, শামসুজ্জামান, শামসুজ্জামান বিজু, ডক্টর আব্দুর রাজ্জাক, নজরুল ইসলাম, গাজী শাখাওয়াত আরিফ, নাসিম হোসেন,  হারুন উর রশিদ, তাজুল ইসলাম, মোহাম্মদ আলী।

আল্লাহ পাক তাদের সবাইকে ক্ষমা করে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করুন, আমীন।

এখানে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য যে, ইসলামী বিধান অনুসারে, মুসলমানদের জন্য দোয়া করা একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। তবে ইসলামের নির্দেশনা অনুযায়ী, কেউ যদি অজ্ঞতা বা অজান্তে কোনো বিধর্মীর জন্য দোয়া করে, তবে তা গুনাহর কাজ হিসেবে গণ্য হবে। ইসলামী বিধান কোনো ব্যক্তিগত মতের ওপর নির্ভর করে না, বরং আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সা.)-এর নির্দেশনা অনুযায়ী চলতে হবে। জীবিত অবস্থায় মুসলমান ছাড়া অন্য কোনো ব্যক্তির জন্য শুধুমাত্র হেদায়াতের দোয়া করা ইসলামসম্মত।

বাংলাদেশী সিনিয়র সিটিজেন অব অস্ট্রেলিয়া এই মহৎ প্রচেষ্টার মাধ্যমে কমিউনিটির মধ্যে সংহতি ও কৃতজ্ঞতার অনুভূতি ছড়িয়ে দিতে চায়। ভবিষ্যতে এ ধরনের দোয়া মাহফিল নিয়মিত আয়োজনের পরিকল্পনাও গ্রহণ করা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *